Ajker Patrika

চুক্তি না করা, চাল না দেওয়ায় রাজশাহীর ৯১৩ চালকলের শাস্তির সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সুপারিশ খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চালকলগুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর জানিয়েছে, সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের চুক্তি না করা এবং চুক্তি করেও চাল না দেওয়ার কারণে এসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, ৭৫১টি মিল চুক্তিযোগ্য হলেও তারা চাল সরবরাহের জন্য সরকারের সঙ্গে কোনো চুক্তি করেনি। এ ৭৫১টি মিলের মধ্যে ৪৫টি অটো রাইস মিল, বাকিগুলো হাসকিং মিল। এ ছাড়া ১৬২টি মিল সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও পর্যাপ্ত চাল সরবরাহ করেনি। এর মধ্যে ৩০টি মিল লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে, ৭১টি মিল ৫০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে।

খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, বিভাগের আট জেলায় শুধু কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৬ হাজার ৩৫৯ টন, কিন্তু সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭ শতাংশ। কৃষকেরা প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৩২০ টাকা দরে সরকারি গুদামে বিক্রি না করে খোলাবাজারে ১ হাজার ৪৫০ টাকা কিংবা তার কিছু কম-বেশি দরে বাজারে বিক্রি করেছেন।

এদিকে মিলারদের কাছ থেকে সেদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন, তবে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ টন। আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ টন, যেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ টন। চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানো হলেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ সম্ভব হয়নি।

খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকারি গুদামে চালের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় মিলাররা পুরোনো চাল সরবরাহ করেছেন। আবার বাজারে দাম বেশি হওয়ায় অনেকে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেননি। এ জন্য শাস্তি এড়াতে কিছু মিল মালিক ভারত থেকে আমদানি করা পুরোনো চাল সরবরাহ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারী উপপরিচালক ওমর ফারুক বলেন, ‘যেসব মিল চুক্তি করেনি বা চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেনি, তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমরা ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। এখন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

ওমর ফারুক জানান, যেসব মিল ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে, তাদের জামানত থেকে টাকা কেটে জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। আর যারা কোনো চাল সরবরাহ করেনি, তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত