রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত, এক দিনে তাপমাত্রা কমল ৪ ডিগ্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১১: ৫৬
Thumbnail image

রাজশাহীতে ডিসেম্বরের শেষ সময়ে এসে জেঁকে বসেছে শীত। দিনভর সূর্যের দেখা না মেলায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। রাজশাহীতে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ বুধবার ভোর ৬টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন গতকাল মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে রাজশাহীর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। 

এদিকে শীতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে দরিদ্র মানুষ। বিশেষ করে ভোরে কাজের সন্ধানে যাঁদের বের হতে হচ্ছে, তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। শীতে ঠান্ডাজনিত নানা অসুখ-বিসুখ দেখা দিচ্ছে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে। চাপ বাড়ছে হাসপাতালে। 

আবহাওয়া অফিস বলছে, কয়েক দিনের মধ্যে পদ্মাপারের এই শহরের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। 

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রাম থেকে রোজ কাজের সন্ধানে শহরে আসেন শ্রমিক আবদুল মালেক। আজ বুধবার সকাল ৭টায় জবুথবু হয়ে বসেছিলেন নগরীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর এলাকায়। মালেক বলেন, ‘জবর শীত পড়ছে। ৫টার কালে বারাইছি। বিড়ালদহ থিকি রাজশাহী আসতি বিশাল শীত। এত শীত পড়ছে! দুই দিন ধইরি জবর শীত পড়ছে।’ 

ওজিফা বিবি শহরের একটি খাবারের হোটেলে কাজ করেন। বাড়ি চারঘাটে, থাকেন শহরের টিকাপাড়ায়। বুধবার ভোরে ওজিফা গায়ে একটা পাতলা চাদর জড়িয়ে কাজে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, ‘শীত ভালোই পড়ছে বাবা রো। কাপুড়-চুপুড় নাই, গরিব মানুষ। একটা হাজার টাকায় ঘরভাড়া দিয়ে থাকি। স্বামী মরে গেছে, হোটেলে কাজ করে খাই। কেউ সহযোগিতা করে না। হাতে খাটি, প্যাটে খাই। গরম কাপুড় কিনার পয়সা নাই।’ 

ভোরের ঘন কুয়াশায় যান চলাচল বিঘ্নিত। ছবি: মিলন শেখ রোজ সূর্য ওঠার আগেই পাঠকের দুয়ারে দুয়ারে খবরের কাগজ পৌঁছে দেন পত্রিকা বিক্রেতা মশিউর রহমান কচু। ভোরে সাইকেলে পত্রিকা সাজাতে সাজাতে বললেন, ‘শীত ভালোই পড়ছে। হাত শিটা শিটা লেগে যাচ্ছে। ভোরবেলা বের হতে সমস্যা। পেপার ধরতে গেলে মনে করেন হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে।’ 

নলকোলা আশরাফের মোড়ের রিকশাচালক আবদুল হাকিম বলেন, ‘কষ্ট করে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। না চালালে চলব কী করে? গরিব মানুষ, পেট তো চালাতে হবে।’ 

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, ডিসেম্বরের শুরুতে দুই দিনের জন্য রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছিল। তারপর শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলেও শীত কমেনি। মঙ্গলবার ভোররাতে সামান্য বৃষ্টি হয়। এরপর ভোরে একটু তাপমাত্রা বেশি থাকলেও রাত থেকে কমে যায়। কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা আছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত