পাবনার সাঁথিয়ায় ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে স্বামীর ওপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন এক সন্তানের জননী ইতি খাতুন (২৯)। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হাসানপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও নিহত ইতির পরিবার জানিয়েছে, প্রায় ৮ বছর আগে উপজেলার হাসানপুর গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে ইতি খাতুনের বিয়ে হয় একই গ্রামের কাঠমিস্ত্রি আজিজুল হকের সঙ্গে। বিয়ের দুই বছরের মাথায় তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। করোনাকালে কাজকর্ম কমে যাওয়ায় সংসার অভাব-অনটনের মধ্যে চলতে থাকে। একপর্যায়ে ইতি খাতুন ব্যুরো বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর বনগ্রাম শাখা থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ তুলে দেন স্বামীকে। ঋণের কয়েক কিস্তি পরিশোধ করে ভালোভাবেই। কিছুদিন ধরে স্বামী আজিজুল হক কাজ করে যে টাকা পান তাতে আর ঋণের টাকা জোগাড় হচ্ছিল না। এদিকে, ঋণের কিস্তির টাকা যতক্ষণ পরিশোধ না হয় ততক্ষণ এনজিওর লোকজন বাড়িতে বসে থাকে। পরে বাধ্য হয়ে ইতি খাতুন বাপ-ভাইয়ের কাছ থেকে ওই কিস্তির বাকি টাকা নিয়ে পরিশোধ করে। 

এর পর, ঘটনার দিন মঙ্গলবার দুপুরে ঋণের টাকা আদায় করতে ব্যুরো বাংলাদেশ এনজিওর বনগ্রাম শাখার লোকজন আবারও আসে। এ সময় ইতি খাতুন স্বামী আজিজুল হককে কিস্তির টাকা নিয়ে কথা বলায় উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে ইতি খাতুন ঋণের কিস্তির টাকার জন্য আশপাশের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে বাপের বাড়িতেও যান। বাপ ভাইয়ের কাছে টাকা চাইতে সাহস না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ওই দিন, একপর্যায়ে নিজের ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ব্যাপারে ইতির ভাই হাবিল বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন। 

ইতির ভাই হাবিল বলেন, ‘আমার বোন আমার কাছে টাকা চাইলেই তো পারত। এর আগেও যখন যে টাকা চেয়েছে, দিয়েছি। কিন্তু আমার বোন বাড়িতে এসে কেন টাকা না চেয়ে চলে গেল।’ এই বলে হাবিল কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার আত্মহত্যার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। বুধবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য পাবনা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।’