রাজশাহীতে কলেরা স্যালাইনের সংকট, মিলছে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে

রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ৪১

রাজশাহীতে প্রায় সব ধরনের স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কলেরার স্যালাইনের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ওষুধের দোকানগুলোয় এই স্যালাইন মিলছে না। তবে ভিন্ন উপায়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকার বিনিময়ে স্যালাইন সংগ্রহ করা যাচ্ছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সংলগ্ন নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অসংখ্য ওষুধের ফার্মেসি রয়েছে। ফার্মেসিগুলোয় ১০০ বা ৫০০ মিলিলিটারের কোনো স্যালাইনই পাওয়া যাচ্ছে না। একটি দোকানেও নেই কলেরার স্যালাইন। বেশকিছু দিন ধরে এমন অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন ফার্মেসি মালিকেরা। তাদের দাবি, ওষুধ কোম্পানি স্যালাইনের সরবরাহ ৫০ শতাংশে নামিয়ে দিয়েছে। ফলে এখন স্যালাইন দোকানে মজুত থাকছে না।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রাজশাহীতেই স্যালাইনের সরবরাহ কমানো হয়েছে। ফলে কেউ কেউ চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে স্যালাইন এনে রাজশাহীতে বিক্রি করছেন বাড়তি দামে। লক্ষ্মীপুর এলাকার দাদু ফার্মেসি, ওল্ড রাজশাহী ফার্মেসি, শাহিন মেডিকেল হোমসহ আরও কয়েকটি ফার্মেসির মালিকেরা জানিয়েছেন, তারা চাইলেও কোম্পানি স্যালাইন সরবরাহ করছে না। ফলে রোগীদের চাহিদা মতো স্যালাইন দেওয়া যাচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি সংকট হচ্ছে কলেরার স্যালাইনের। রোগীদের এই স্যালাইন দেওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ বেশি দামে কোনো কোনো স্থান থেকে স্যালাইন সংগ্রহ করছেন। সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

গোলাম রাব্বানী নামে এক ব্যক্তি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুরো লক্ষ্মীপুর এলাকা ঘুরেও তিনি তার রোগীর জন্য কলেরার স্যালাইন পাননি। পরে একটি ক্লিনিকের এক কর্মচারীর মাধ্যমে ৩০০ টাকা দিয়ে একটি স্যালাইন কেনেন। ৯০ টাকার স্যালাইন তাঁকে কিনতে হয়েছে ৩০০ টাকায়।’

অভিযোগ রয়েছে, স্যালাইনের সংকটের কারণে ফার্মেসি মালিকেরা বেশি টাকা ছাড়া বিক্রিই করছেন না। এমন অভিযোগে গত ৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী লক্ষ্মীপুর এলাকার ফার্মেসির দোকানগুলোয় অভিযান চালান। এ সময় ৯০ টাকার স্যালাইন ২০০ টাকায় বিক্রি করার অপরাধে আলিফ লাম মিম ও আরোগ্য নিকেতন নামে দুটি ফার্মেসিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর এলাকার ওল্ড রাজশাহী ফার্মেসির মালিক মো. ডন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্যালাইনের সংকট আছে। তবে আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করছি না। অন্যরা কেউ করলে করতে পারে। আমাদের দোকানে বাড়তি দামে স্যালাইন বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। অল্প কিছু স্যালাইন পেলে নির্ধারিত দামেই দিচ্ছি।’

ফার্মেসিতে স্যালাইন সংকট ও বেশি দামে বিক্রির বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্যালাইনের সংকট এবং বেশি দামে বিক্রির বিষয়টি নজরদারির জন্য অধিদপ্তর থেকেই বলা হয়েছে। আমরা মনিটরিং করছি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা কিংবা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ফার্মেসিতে স্যালাইনের সংকট থাকলেও রামেক হাসপাতালে কোনো সংকট হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ। তিনি বলেন, ‘আমি সব ওয়ার্ডেই কথা বলেছি। কেউ বলেনি যে স্যালাইনের সংকট হয়েছে। আমাদের সব ধরনের স্যালাইন আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী রোগীদের সব স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত