রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২০
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ২০

পাঁচ বছর ধরে দুই সদস্যের কমিটি দিয়েই চলছিল রাজশাহী মহানগর বিএনপি। এতে সভাপতি ছিলেন মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিকুল হক মিলন। তাঁরা গত পাঁচ বছরেও ওয়ার্ড কিংবা থানা কমিটি পুনর্গঠনে ব্যর্থ হয়েছেন। এ অবস্থায় তাঁদের বাদ দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটির ৯ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটি নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই খুশি হলেও কেউ কেউ বলছেন, এই কমিটিতে আরও ‘দুর্বল’ হলো রাজশাহী মহানগর বিএনপি।

নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে আইনজীবী এরশাদ আলী ঈসাকে। আর সদস্যসচিব করা হয়েছে মামুনুর রশীদকে। সাত যুগ্ম-আহ্বায়ক হলেন নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, আসলাম সরকার, শাফিকুল ইসলাম শাফিক, বজলুর রহমান মন্টু এবং জয়নাল আবেদিন শিবলী। এই কমিটিতে নগর বিএনপির ‘প্রথম সারির’ নেতারা বাদ পড়েছেন।

রাজশাহী বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মিজানুর রহমান মিনুকে বাদ দিয়ে ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সভাপতি করা হয়। ১২ সদস্যের ওই কমিটি ঘোষণার পর একাংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা গঠন করেন ‘বিএনপি রক্ষা কমিটি’। চলে লাগাতার কর্মসূচি। এ অবস্থায় শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রেখে অন্য ১০ জনের পদ স্থগিত করা হয়। এরপর পাঁচ বছর এই সভাপতি-সম্পাদকই নগর বিএনপি চালিয়েছেন।

দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে বুলবুল ও মিলন মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি তো দূরের কথা, ৩৫টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও ৮টি থানার কমিটিও পুনর্গঠন করতে পারেননি। নগরীর মালোপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা করা কর্মসূচি পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। তৃণমূলের কর্মীদেরও ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা।

এ অবস্থায় হুট করেই বুলবুল-মিলনকে সরিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এতে আস্থা রাখা হয়েছে নগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এরশাদ আলী ঈসার ওপর। নতুন যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা সদ্য বিলুপ্ত বুলবুল-মিলনের কমিটি প্রতিহত করতে গঠন করা ‘বিএনপি রক্ষা কমিটির’ আহ্বায়ক ছিলেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে দিয়ে আন্দোলন হবে না। এ কমিটিকে তাঁরা ‘আন্দোলনের কমিটি’ হিসেবে দেখছেনও না।  নতুন আহ্বায়ক কমিটি দীর্ঘদিন পড়ে থাকা সব সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলো পুনর্গঠন এবং নগর কমিটির সম্মেলনের ব্যবস্থা করার জন্য গঠন করা হয়েছে বলেই তাঁরা মনে করছেন। তবে এ ্মিইটি নিয়েই নেতাকর্মীদের অনেকের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

নতুন আহ্বায়ক কমিটি কেমন হলো জানতে চাইলে নগর বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকেরা শুধু আমাকে নেগেটিভ প্রশ্ন করেন। ভালো কোনো বিষয় জিজ্ঞেস করেন না।’ মিলন বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি কী করবে সেটা আমি স্পষ্ট না। হয়তো সম্মেলনের ব্যবস্থা করবে। এখন আমাদের চিন্তা ম্যাডামের চিকিৎসা নিয়ে। সবাই মিলেই কাজ করব।’

নতুন আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘আমাকে আহ্বায়ক করবে, এ বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। প্রেস রিলিজে শুধু নাম দেখলাম। এখন কী করব, সে বিষয়ে হয়তো পরে ডিরেকশন দেবে।’ কমিটি কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র দিয়েছে, এখন ভালোই বলতে হবে। সব দলেই তো এখন কমিটি কেন্দ্র দিচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত