রাজশাহীতে আছে ‘মসজিদপট্টি’, খাবারও দিয়েছে বিদ্যানন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৫ মে ২০২৩, ১৯: ৩৫
Thumbnail image

রাজশাহী মহানগরীর ভেতরে ‘মসজিদপট্টি’ নামের কোনো স্থান আছে কি নেই, তা নিয়ে আলোচনা চলছে ফেসবুকে। রাজশাহীর বাসিন্দাদের কেউ কেউ ফেসবুকে লিখছেন, জেলার অলিগলি তাঁদের অনেকের চেনা। এই শহরে আছে বেতপট্টি, মুড়িপট্টি, স্বর্ণপট্টিসহ বিভিন্ন পট্টি। কিন্তু মসজিদপট্টি আছে কি না তা জানা নেই বলে দাবি করেছেন অনেকে। 

মূলত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের দেওয়া একটি পোস্ট নিয়েই এই আলোচনা চলছে। রাজশাহীতে ‘মসজিদপট্টি’ নামের কোনো জায়গা না থাকলেও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এই স্থানটির নাম ব্যবহার করে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে খোঁজ নিয়ে রাজশাহী মহানগরীতেই মসজিদপট্টি নামের একটি স্থান খুঁজে পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সেখানে এক টাকার বিনিময়ে খাবার দিয়েছে বলে জানা গেছে। 

 ‘এক টাকায় আহার’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল কয়েকটি ছবি পোস্ট করা হয়। খাবার বিতরণের স্থানটির ঠিকানা জানাতে লেখা হয়, ‘৪ মে ২০২৩, মসজিদপট্টি, চন্দ্রিমা থানা, রাজশাহী।’ আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এই পোস্টে ১৫ হাজারের বেশি রিঅ্যাক্ট পড়ে। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার জনই হাসির ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন। এই পোস্টে অসংখ্য মানুষ মন্তব্য করেন। এর মধ্যে রাজশাহীতে মসজিদপট্টি নেই বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। শুধু এই পোস্টেই নয়, অনেকে নিজ নিজ ফেসবুক আইডিতেও পোস্ট দেন বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে। 

তৌহিদ ফেরদৌস তন্ময় নামের এক ব্যক্তি রাজশাহীর আলোচিত বিষয়গুলো নিজের ফেসবুক আইডিতে তুলে ধরেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জানা মতে, রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানা এলাকায় “মসজিদপট্টি” নামের কোনো জায়গা নাই। ইনফ্যাক্ট পুরো রাজশাহী শহরে এই জাতীয় কোনো এলাকার নাম আছে বলে আমি শুনি নাই। রেশমপট্টি, বেতপট্টি, তুলাপট্টি আছে, এমনকি মেথরপট্টিও আছে। কিন্তু মসজিদপট্টি নাম আমি জীবনেও শুনি নাই।’ 

তৌহিদ লেখেন, ‘বাবা বিদ্যামন্দ ভালোই খেল দেখাইতেছো। রাজশাহীর মানুষ এই নাম না শুনলেও, রাজশাহীর বাইরের লোকেরা মনে করবে, তোমরা সত্যি সত্যি রাজশাহীতে খাবার খাওয়ায় দিছ। আসলেই জিনিয়াস তোমরা। জয় বাবা বিদ্যামন্দের জয়।’ এ রকম আরও অনেক পোস্ট ফেসবুকে চোখে পড়ে। এ নিয়ে খোঁজ নিয়ে চন্দ্রিমা থানা এলাকায় মসজিদপট্টি পাওয়া গেছে। 

নগরীর চন্দ্রিমা থানার ছোটবনগ্রাম মোড় থেকে পূর্ব দিকে এগিয়ে গেলেই ছোটবনগ্রাম পূর্বপাড়া। এই মোড় থেকে কিছুটা পূর্বে এগিয়ে গেলেই রয়েছে একটি বস্তি। এই স্থানটির নামই মসজিদপট্টি। এটি সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড। এলাকাটিকে কেউ চৌধুরীপাড়া মসজিদপট্টি আবার কেউ ছোটবনগ্রাম পূর্বপাড়া মসজিদপট্টি হিসেবে চেনেন। মসজিদপট্টির ছোট্ট মোড়ে রয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী হামিম হোসেন সেতুর দোকান।

আজ সকালে সরেজমিন গেলে প্রতিবন্ধী হামিম জানান, গতকাল এখানে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এক টাকার বিনিময়ে চারটি করে রান্না করা ডিম দেওয়া হয়েছে। এই বস্তির সব বাড়ির লোকেরাই ডিম নিয়েছেন। বস্তির বাসিন্দা মো. সুজনও জানালেন এক টাকার বিনিময়ে তারা চারটি করে ডিম পেয়েছেন। সুজন বলেন, ‘সবাই ডিম পেয়েছে। ঘটনা সত্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত