নাটোরে ইজতেমা আয়োজন নিয়ে তাবলিগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫ 

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ১৩

নাটোরে ইজতেমার আয়োজন ও জেলা মারকাজ মসজিদ দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ ও জুবায়ের গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের তেবাড়িয়া মারকাজ মসজিদে এই ঘটনা ঘটে। 

নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলি বলেন, দুই পক্ষকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। 

সরেজমিনে জানা গেছে, সংঘর্ষের সময় নাটোর-রাজশাহী মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে উভয় পক্ষ। এ সময় মসজিদ চত্বরে একটি মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালানো হয়। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণ নিলে মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বাকিদের নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে তেবাড়িয়া এলাকায় জমি কিনে মাওলানা সাদপন্থীর অনুসারী তাবলিগ জামাতের কর্মীরা একটি মারকাজ মসজিদ নির্মাণ করে তাবলিগের প্রচারণা শুরু করেন। অপরদিকে মাওলানা জুবায়েরপন্থীর অনুসারী তাবলিগ জামাতের কর্মীরা শহরের আলাইপুর মারকাজ মসজিদে তাবলিগের কাজ পরিচালনা করেন। এরপর থেকে সাদপন্থীরা ওই মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় তাবলিগ জামায়াতের ইজতেমা আয়োজন করে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেন। জুবায়েরপন্থীরা শুরু থেকেই সাদপন্থীদের আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ হিসেবে দাবি করে আসতেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট সাদপন্থীদের তেবারিয়া মারকাজ দখল করেন জুবায়েরপন্থীরা। এ সময় তারা সেখানে একটি কওমি মাদ্রাসা নির্মাণ করেন। তবে আগামী ডিসেম্বরে মারকাজ সংলগ্ন চত্বরে ইজতেমার ডাক দেন সাদপন্থীরা। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বৃহস্পতিবার ইজতেমার স্থানে কাজ শুরু করতে নাটোরের ৭ উপজেলা থেকে সাথিদের ডাক দেন সাদপন্থীরা। তাঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কর্মীরা তেবাড়িয়া মারকাজ চত্বরে জড়ো হলে দখলে থাকা জুবায়েরপন্থীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় তাদের। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

সাদপন্থী আবুল কালাম আজাদ ও রুহুল আমিন বলেন, তাঁরা সাথিদের নিয়ে গুরুদাসপুর থেকে এসেছিলেন ইজতেমার জন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজ করতে। কিন্তু তাঁরা সেখানে পৌঁছানোর পর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুল ব্যাপারীর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত জুবায়েরপন্থীদের সঙ্গে নিয়ে হামলা করেন। 

এ ঘটনায় জুবায়েরপন্থীরা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে এই মারকাজে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের উৎখাতে সাদপন্থীরা সারা জেলা থেকে কর্মী এনে হামলা করেছেন। সাদরা বিচ্ছিন্ন। তাঁদের কোনো অধিকার নেই থাকার। 

এ বিষয়ে জানতে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি কর্মী দাবি করেন, তাঁদের এলাকায় মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। 

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ হোসেন বলেন, আগামী রোববার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দুপক্ষের সঙ্গে বসা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। প্রয়োজন হলে ১৪০ ধারা জারি করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত