উপবৃত্তির এসএমএস দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ

সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী) 
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ৫২

রাজশাহীর চারঘাটে করোনাকালীন সময়ে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে এমন তথ্য জানিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইল নম্বরে ভুয়া মেসেজ (এসএমএস) পাঠানো হচ্ছে। এসএমএস গুলো পাঠানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি গ্রহণের অ্যাকাউন্ট খোলা আছে এমন মোবাইল নম্বরে। তবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতারণার উদ্দেশ্যেই এমন মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। 

জানা যায়, গতকাল রোববার উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ফাতেমা ফারজানা নামের এক শিক্ষার্থীর মোবাইলে এমন একটি মেসেজ এসেছে। তাতে লেখা রয়েছে ‘প্রিয় স্টুডেন্ট, করোনা ভাইরাসের কারণে তোমাদের উপবৃত্তির ৪২০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। টাকা গ্রহণের জন্য নিম্নোক্ত শিক্ষা বোর্ডের নম্বরে যোগাযোগ করুন। ০১৮৩৭৯৭৩৬৩৪, শিক্ষামন্ত্রী।’ ওই মেসেজটি পাঠানো হয় ০১৮১৩৯৫৭৫০০ নম্বর থেকে। 

ফাতেমা ফারজানা উপজেলার মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ফাতেমা ছাড়াও উপজেলার আরও অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের নম্বরে এমন এসএমএস পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

পরে গতকাল সোমবার সকালে যোগাযোগ করতে বলা ০১৮৩৭৯৭৩৬৩৪ এই নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তা বন্ধ এবং ব্যস্ত পাওয়া যায়। তবে যে নম্বর থেকে মেসেজ এসেছে (০১৮১৩৯৫৭৫০০) ওই নম্বরে কল করলে একজন পুরুষ ফোন রিসিভ করে পরিবারের শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানতে চান। কিন্তু তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে গালিগালাজ করে তাৎক্ষণিক ফোন কেটে বন্ধ করে দেন। 

উপজেলা শিক্ষা অফিস জানায়, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা যাদের ব্যাংক হিসাবে দেওয়া আছে তাদের উপবৃত্তি টাকা সরাসরি ব্যাংকে জমা হয়। আর যাদের ব্যাংক হিসাব নেই তাদের টাকা বিভিন্ন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা (বিকাশ, নগদ, রকেট) ইত্যাদি ব্যবহার করে পাঠানো হয়। সরাসরি মোবাইল নম্বর থেকে এভাবে কল বা এসএমএস পাঠিয়ে টাকা দেওয়া হয় না। আপাতত কোনো শ্রেণির উপবৃত্তির টাকা পাঠানো হচ্ছে না। 

এদিকে পৌর এলাকার আফরোজা বেগম জানান, তাঁর দুই মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। কদিন আগে এমন মেসেজ তাঁর মোবাইলেও এসেছে। পরে সেই নম্বরে ফোন দিয়ে কথাবার্তা শুনে সন্দেহজনক মনে হলে তিনি আর যোগাযোগ করেননি। 

উপজেলা সদরের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা এসব এসএমএস পেয়ে টাকা ওঠানোর জন্য আমাদের কাছে আসছেন। তবে তাঁদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট গুলোতে টাকা মিলছে না।’ 

চারঘাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিমা সুলতানা বলেন, ‘এমন মেসেজের কথা অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানাচ্ছেন। তবে আমাদের মনে হয় প্রতারণার উদ্দেশ্যেই এমন এসএমএস পাঠানো হচ্ছে।’ 

জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এগুলো ভুয়া এসএমএস। যাদের টাকা আসবে অ্যাকাউন্টে এমনিতেই চলে আসবে। কোনো ধরনের মেসেজ পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হবে না। এসএমএসের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত না হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত