সাহাদত জামান, বগুড়ার গাবতলী থেকে ফিরে
বগুড়ার গাবতলীতে ইউপি নির্বাচনে গুলিতে চারজন নিহতের তিনজনই সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা এমনটিই বলছেন। এ ঘটনায় দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কী কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেটিই এখন জনগণের মূল প্রশ্ন।
চারজনের মৃত্যুতে গাবতলীজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘরছাড়া বিক্ষুব্ধ লোকজন বৃহস্পতিবার ঘরে ফিরেছে। দিনভর সেখানে চলেছে দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল। বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে বিকেল পর্যন্ত কোনো পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
গতকাল বুধবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন- বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কালাইহাটা ইউনিয়নের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা খোকন মন্ডলের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৪০)। নিহম কুলসুম ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ছোবেদার নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। মধ্যপাড়ার মৃত মবদুলের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫), পশ্চিমপাড়ার মৃত ইফাতুল্লা প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল রশীদ (৪৮) ও উত্তরপাড়ার মৃত ছহির উদ্দিন আকন্দর ছেলে খোরশেদ আকন্দ (৬৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা
গত ইউপি নির্বাচনে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট এই কেন্দ্রের ভোট উপজেলা সদর গাবতলীতে নিয়ে গিয়ে গণনা করা হয়েছিল। ফলে তাদের প্রার্থী মাত্র ৮২ ভোটে পরাজিত হয়। এবার বালিয়াদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট তিনজন প্রার্থী হন। তাঁরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত ইউনুস আলী ফকির (নৌকা), বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান (ঘোড়া) ও বিএনপি নেতা সাকিউল ইসলাম তিতু (চশমা)। চশমা মার্কার প্রার্থী তিতু ইউএনও আসিফ আহম্মেদের ভায়রার ছেলে বলে দাবি করেছেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। আত্মীয়কে জয়ী করতে গত নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনেও ব্যালট বাক্স গাড়িতে তুলে গাবতলীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ইউএনও। স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় প্রশাসনের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয় কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে পড়েন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভোট কেন্দ্রে আটকা পড়েন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানালা দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলিতে একজন নারী এজেন্ট ও তিনজন নিরীহ পথচারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কালাইহাটা গ্রামের রানা মন্ডলসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
নিহতদের পরিবারের বক্তব্য
নিহত রিকশা চালক আলমগীরের স্ত্রী হোসনে আরা বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে আদুরীকে নিয়ে আমরা বগুড়া জেলা সদরের কৈপাড়াতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। আমার স্বামী শহরে রিকশা চালায়। ভোট দিতে আমার স্বামীসহ আমরা গ্রামের বাড়ি কালাইহাটাতে এসেছিলাম। আমার স্বামী ভোটের ফলাফল জানতে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিল। গুলির শব্দ শোনার পর পরই আমরা আমার স্বামীর খবর নিতে গিয়ে পথিমধ্যে তাঁর মাথায় গুলি লাগার খবর পাই।’
নিহত আলমগীরের বড়ভাই মো. বাবলু মিয়া (৫৮) বলেন, ‘আমার ভাই মারা গেছে এখন আমার ভাবি আর ভাতিজির কি হবে। আমরা হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।’
নিহত আব্দুর রশিদ প্রামাণিকের স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৫০) জানান, তাঁর স্বামী একজন বর্গাচাষি। নিজের ভিটেমাটি ছাড়া কোনো জায়গাজমি নেই। তাঁর দুই ছেলে এক মেয়ে। ছোট ছেলে কালাইহাটা দাখিল মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলে বাবুল মিয়া দশম শ্রেণিতে পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বাবুলকে পুলিশ লাঠি দিয়ে মেরে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। সে এখন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) ভর্তি আছে। আমার স্বামী বাজার করতে গিয়েছিল। ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।’
নিহত খোরশেদ আকন্দের ছেলে এরশাদ আকন্দ (৩০) বলেন, ‘আমার বাবা শাক বিক্রি করার জন্য বাজারে যায়। শাক বিক্রি করে বাড়িতে ফেরার সময় বাবা গুলিবিদ্ধ হয়। এখন পর্যন্ত বাবার লাশ আমরা পাইনি। আমার বাবার হত্যাকারীর আমরা ফাঁসি চাই।’
নিহত কুলসুম বেগমের স্বামী খোকন মন্ডল বলেন, ‘আমার স্ত্রী কালাইহাটা স্কুল কেন্দ্রের এজেন্ট ছিল। কেন্দ্রের ভেতরেই সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশ জানালা দিয়ে অতর্কিতভাবে গুলি করেছে।’
আহত শিক্ষার্থীর বক্তব্য
আহত কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান জানায়, ভোটের খবর দেখতে গিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় সে পড়ে যায়। তার শরীরে গুলি লাগে। পরে সে জানতে পারে এগুলো রাবার বুলেট।
মেহেদী হাসানের মা শিপন মন্ডলের স্ত্রী সমাপ্তি আকতার বলেন, ‘আমার ছেলে আহত হয়ে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।’
সর্বশেষ পরিস্থিতি
এলাকায় বিক্ষুব্ধ পরিবেশ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী থেমে থেমে দিনভর বিক্ষোভ মিছিল করে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানায়।
অভিযোগের তীর ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে
চারজন নিহতের ঘটনায় এলাকাবাসী দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর উপজেলার ইউএনও আসিফ আহম্মেদকে দায়ী করছেন। দফায় দফায় মিছিল করে তাঁর শাস্তিও দাবি করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা নীরব
এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা কেন জনগণকে দমাতে পারেনি। পুলিশ সদস্যরা সেখানে নীরব ছিল কেন। ভোট কেন্দ্রে একটি মোবাইল টিম ছিল। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১৭ জন আনসার সদস্য ছাড়াও ৫ থেকে ৬ জন পুলিশ সদস্য ছিল। এরপরও এই হতাহতের ঘটনা কেন ঘটল? বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে পুলিশ সদস্যরা রাবার বুলেট ছুড়েছে। এই বুলেটে কারও প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
ঘটনার বর্ণনায় গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওনক জাহান বলেন, ‘কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হলেও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা গণনায় বাঁধা দেন। অন্য কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে তাঁরা ভোটের ফলাফল ঘোষণা করতে বলেন। এতে আপত্তি জানালে নৌকা মার্কার প্রার্থী ইউনুছ আলী ফকিরের সমর্থকেরা ভোট কেন্দ্রে হামলা চালান। এ সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নৌকা মার্কার কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। নৌকা মার্কার কর্মীরা ইউএনওর গাড়ি ছাড়াও পুলিশ, বিজিবির মোট চারটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে থাকা শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আহমেদ ছাড়াও বিজিবি-পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়।’
চশমা প্রতীকের প্রার্থীর সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কের অভিযোগের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আহম্মেদ বলেন, ‘চশমা মার্কার প্রার্থী সাকিউল ইসলাম টিটু আমার কোন আত্মীয় না। এলাকাবাসী আমাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। তারা ইট পাটকেল মেরে আমার পা ভেঙে দিয়েছে। আমি দাঁড়াতে পারছি না। পরিস্থিতি সামাল দিতে সামরিক বাহিনী গুলি চালিয়েছে।’
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদিপ কুমার চক্রবর্তী জানান, এ বিষয়ে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার গাবতলী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
বগুড়ার গাবতলীতে ইউপি নির্বাচনে গুলিতে চারজন নিহতের তিনজনই সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা এমনটিই বলছেন। এ ঘটনায় দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কী কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেটিই এখন জনগণের মূল প্রশ্ন।
চারজনের মৃত্যুতে গাবতলীজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘরছাড়া বিক্ষুব্ধ লোকজন বৃহস্পতিবার ঘরে ফিরেছে। দিনভর সেখানে চলেছে দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল। বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে বিকেল পর্যন্ত কোনো পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
গতকাল বুধবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন- বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কালাইহাটা ইউনিয়নের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা খোকন মন্ডলের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৪০)। নিহম কুলসুম ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ছোবেদার নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। মধ্যপাড়ার মৃত মবদুলের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫), পশ্চিমপাড়ার মৃত ইফাতুল্লা প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল রশীদ (৪৮) ও উত্তরপাড়ার মৃত ছহির উদ্দিন আকন্দর ছেলে খোরশেদ আকন্দ (৬৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা
গত ইউপি নির্বাচনে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট এই কেন্দ্রের ভোট উপজেলা সদর গাবতলীতে নিয়ে গিয়ে গণনা করা হয়েছিল। ফলে তাদের প্রার্থী মাত্র ৮২ ভোটে পরাজিত হয়। এবার বালিয়াদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট তিনজন প্রার্থী হন। তাঁরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত ইউনুস আলী ফকির (নৌকা), বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান (ঘোড়া) ও বিএনপি নেতা সাকিউল ইসলাম তিতু (চশমা)। চশমা মার্কার প্রার্থী তিতু ইউএনও আসিফ আহম্মেদের ভায়রার ছেলে বলে দাবি করেছেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। আত্মীয়কে জয়ী করতে গত নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনেও ব্যালট বাক্স গাড়িতে তুলে গাবতলীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ইউএনও। স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় প্রশাসনের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয় কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে পড়েন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভোট কেন্দ্রে আটকা পড়েন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানালা দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলিতে একজন নারী এজেন্ট ও তিনজন নিরীহ পথচারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কালাইহাটা গ্রামের রানা মন্ডলসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
নিহতদের পরিবারের বক্তব্য
নিহত রিকশা চালক আলমগীরের স্ত্রী হোসনে আরা বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে আদুরীকে নিয়ে আমরা বগুড়া জেলা সদরের কৈপাড়াতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। আমার স্বামী শহরে রিকশা চালায়। ভোট দিতে আমার স্বামীসহ আমরা গ্রামের বাড়ি কালাইহাটাতে এসেছিলাম। আমার স্বামী ভোটের ফলাফল জানতে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিল। গুলির শব্দ শোনার পর পরই আমরা আমার স্বামীর খবর নিতে গিয়ে পথিমধ্যে তাঁর মাথায় গুলি লাগার খবর পাই।’
নিহত আলমগীরের বড়ভাই মো. বাবলু মিয়া (৫৮) বলেন, ‘আমার ভাই মারা গেছে এখন আমার ভাবি আর ভাতিজির কি হবে। আমরা হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।’
নিহত আব্দুর রশিদ প্রামাণিকের স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৫০) জানান, তাঁর স্বামী একজন বর্গাচাষি। নিজের ভিটেমাটি ছাড়া কোনো জায়গাজমি নেই। তাঁর দুই ছেলে এক মেয়ে। ছোট ছেলে কালাইহাটা দাখিল মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলে বাবুল মিয়া দশম শ্রেণিতে পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বাবুলকে পুলিশ লাঠি দিয়ে মেরে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। সে এখন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) ভর্তি আছে। আমার স্বামী বাজার করতে গিয়েছিল। ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।’
নিহত খোরশেদ আকন্দের ছেলে এরশাদ আকন্দ (৩০) বলেন, ‘আমার বাবা শাক বিক্রি করার জন্য বাজারে যায়। শাক বিক্রি করে বাড়িতে ফেরার সময় বাবা গুলিবিদ্ধ হয়। এখন পর্যন্ত বাবার লাশ আমরা পাইনি। আমার বাবার হত্যাকারীর আমরা ফাঁসি চাই।’
নিহত কুলসুম বেগমের স্বামী খোকন মন্ডল বলেন, ‘আমার স্ত্রী কালাইহাটা স্কুল কেন্দ্রের এজেন্ট ছিল। কেন্দ্রের ভেতরেই সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশ জানালা দিয়ে অতর্কিতভাবে গুলি করেছে।’
আহত শিক্ষার্থীর বক্তব্য
আহত কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান জানায়, ভোটের খবর দেখতে গিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় সে পড়ে যায়। তার শরীরে গুলি লাগে। পরে সে জানতে পারে এগুলো রাবার বুলেট।
মেহেদী হাসানের মা শিপন মন্ডলের স্ত্রী সমাপ্তি আকতার বলেন, ‘আমার ছেলে আহত হয়ে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।’
সর্বশেষ পরিস্থিতি
এলাকায় বিক্ষুব্ধ পরিবেশ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী থেমে থেমে দিনভর বিক্ষোভ মিছিল করে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানায়।
অভিযোগের তীর ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে
চারজন নিহতের ঘটনায় এলাকাবাসী দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর উপজেলার ইউএনও আসিফ আহম্মেদকে দায়ী করছেন। দফায় দফায় মিছিল করে তাঁর শাস্তিও দাবি করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা নীরব
এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা কেন জনগণকে দমাতে পারেনি। পুলিশ সদস্যরা সেখানে নীরব ছিল কেন। ভোট কেন্দ্রে একটি মোবাইল টিম ছিল। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১৭ জন আনসার সদস্য ছাড়াও ৫ থেকে ৬ জন পুলিশ সদস্য ছিল। এরপরও এই হতাহতের ঘটনা কেন ঘটল? বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে পুলিশ সদস্যরা রাবার বুলেট ছুড়েছে। এই বুলেটে কারও প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
ঘটনার বর্ণনায় গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওনক জাহান বলেন, ‘কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হলেও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা গণনায় বাঁধা দেন। অন্য কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে তাঁরা ভোটের ফলাফল ঘোষণা করতে বলেন। এতে আপত্তি জানালে নৌকা মার্কার প্রার্থী ইউনুছ আলী ফকিরের সমর্থকেরা ভোট কেন্দ্রে হামলা চালান। এ সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নৌকা মার্কার কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। নৌকা মার্কার কর্মীরা ইউএনওর গাড়ি ছাড়াও পুলিশ, বিজিবির মোট চারটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে থাকা শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আহমেদ ছাড়াও বিজিবি-পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়।’
চশমা প্রতীকের প্রার্থীর সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কের অভিযোগের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আহম্মেদ বলেন, ‘চশমা মার্কার প্রার্থী সাকিউল ইসলাম টিটু আমার কোন আত্মীয় না। এলাকাবাসী আমাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। তারা ইট পাটকেল মেরে আমার পা ভেঙে দিয়েছে। আমি দাঁড়াতে পারছি না। পরিস্থিতি সামাল দিতে সামরিক বাহিনী গুলি চালিয়েছে।’
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদিপ কুমার চক্রবর্তী জানান, এ বিষয়ে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার গাবতলী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ভিসার ব্যাপারে কিছুটা কড়াকড়ি করেছে। তারা আমাদের ভিসা দেবে কি না, এটা তাদের বিষয়।’
৮ ঘণ্টা আগেনাটোরের বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের এক সমর্থককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আহত ওই যুবককেই আটক করে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান
৮ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আপনারা ভালো কাজ করলে আমাদের সমর্থন পাবেন। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে এক সেকেন্ডও সময় নেব না আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। দায়সারা কথা বলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে প্রহসন করবেন না।
৯ ঘণ্টা আগেলক্ষ্মীপুরে একটি তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও ইসলামি সংগীত সন্ধ্যা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে এই আয়োজন করা হয়েছিল। মাহফিলে জামায়াত নেতাকে প্রধান অতিথি করায় বিএনপি সেটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১০ ঘণ্টা আগে