‘স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার হচ্ছি’, বিয়ের ৩০ বছর পর পঙ্গু স্বামীর সংবাদ সম্মেলন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মে ২০২৪, ১৭: ৩২
Thumbnail image

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিয়ের ৩০ বছর পর স্ত্রীর বিরুদ্ধে জাল কাবিননামা তৈরি করার অভিযোগ তুলেছেন এক ব্যক্তি। তাঁর কাছ থেকে জোর করে টিপসই নিয়ে কাবিননামায় মোহরানা হিসেবে ১৫ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি উল্লাপাড়া আমলি আদালতে স্ত্রীসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলাও করেছেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী।

আজ সোমবার সকালে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে এসব দাবি করেছেন শরিফুল ইসলাম বকুল (৫০) নামের ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘স্বামীর দ্বারা স্ত্রী নির্যাতনের শিকার হন। কিন্তু আমি স্ত্রী দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, জোরপূর্বক কাবিননামায় স্বাক্ষর নেয়। ঘরের তালা ভেঙে আসবাবপত্র যা কিছু ছিল, সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। আমি চরমভাবে স্ত্রীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। জমিজমা যা কিছু ছিল, সবকিছু স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছি। এখন আমার নামে ৬ শতক বাড়ি আছে, সেটুকুও স্ত্রীর নামে লিখে দিতে বলে। বাড়ি লিখে না দেওয়ার কারণে আমাকে নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে।’

শরিফুল ইসলাম বকুল ও সালমা খাতুন দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তাদের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলামের দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ায় ক্রাচ কিংবা লাঠি ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর স্ত্রী সালমা খাতুন (৪৫)। তিনি বলেন, ‘তিনি (স্বামী) যে অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন, তা সত্য নয়। ১৯৯৪ সালে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। তখন কাবিননামা করা হয়নি। তাই ২০২১ সালে কাবিননামা করেছি। মামলায় আমার পক্ষে রায় আসবে।’

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উল্লাপাড়া উপজেলার সাতবিলা গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বকুলের সঙ্গে ১৯৯৪ সালে বিয়ে হয় একই উপজেলার ভাটবেড়া গ্রামের সালমা খাতুনের। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় শরিফুল ইসলামের পা ভেঙে যায় এবং তিনি পঙ্গু হয়ে যান। এ কারণে শরিফুল ইসলাম কখনো সক্ষম হবেন না ভেবে পুত্র-কন্যা নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান স্ত্রী সালমা খাতুন। এরপর সালমা খাতুন তাঁর স্বামী শরিফুলের বিরুদ্ধে যৌতুক ও মারপিটের অভিযোগ এনে ২০২০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

ওই বছর (২০২০ সাল) ১২ এপ্রিল উল্লাপাড়া উপজেলার দুর্গা নগর ইউনিয়ন পরিষদে শরিফুল ইসলামকে আটক করে অস্ত্রের ভয়ে জোর করে কাবিননামায় স্বাক্ষর নেন স্ত্রী সালমা খাতুন ও তাঁর আত্মীয়রা। শরিফুল ইসলাম স্ত্রীর কাছে কাবিননামা ফেরত চাইলেও তা আর দেননি। পরে কাবিননামায় মোহরানা হিসেবে ১৫ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করা হয়।

পরে কাবিননামা উদ্ধারের জন্য ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা করেন শরিফুল ইসলাম। কাবিননামা জাল করে শরিফুল ইসলামের ২০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত