মেধাবী ছাত্র আলিমের স্বপ্ন পূরণে বাধা দারিদ্র্য 

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
Thumbnail image

অভাব অনটনের সংসারে দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় আব্দুল আলিম। ছোটবেলায় মাকে হারিয়ে বাবার দিন মজুরির টাকায় চলে সংসার। এর মধ্যেই কোনোভাবে পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন। এইচএসসিতে ভালো ফলের পর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বপ্ন দেখছিলেন পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার। কিন্তু অর্থ সংকটে এখন পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। 

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের নন্দিগ্রামের দরিদ্র কৃষক শরিফুল ইসলামের ছেলে আব্দুল আলিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হন ২০২২-২৩ সেশনে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই গর্বিত হয়েছিলেন বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু চরম অর্থ সংকটে পড়ালেখাই অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়েছে আব্দুল আলিমের। আলিমের বড় ভাই কোরআনে হাফেজ। তিনি টেকনিক্যাল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন এবার। দুজনের খরচ যোগানো কঠিন হয়ে পড়েছে শরিফুল ইসলামের পক্ষে।

আব্দুল আলিম বলেন, ‘ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছি। ৫ম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ ও ট্যালেন্টপুল গ্রেডে বৃত্তি,৮ম শ্রেণিতে গোল্ডেন এ প্লাস ও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার এ ফলাফলের পেছনে সকল বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। বাবার উপার্জনের সামান্য অর্থ আমার পড়াশোনার জন্য কখনোই যথেষ্ট ছিল না। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি আমাকেও বিভিন্ন সময় কাজ করতে হয়েছে। এতে পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটলেও নিরুপায় ছিলাম। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় ইচ্ছা আমাকে কখনোই আমার স্বপ্ন থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। অবশেষে আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার স্বপ্ন লেখা পড়া শেষে বিসিএস ক্যাডারে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া। এখন অর্থের অভাব স্বপ্ন পূরণে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

আব্দুল আলিম এইচএসসি পাশ করেন নিয়ামতপুর সরকারি কলেজ থেকে। কলেজটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মমতাজ হোসেন মণ্ডল বলেন, আব্দুল আলিম একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। আর্থিক সংকটের মধ্যেই ২০২২-২৩ সেশনে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। 

আব্দুল আলিমের বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সংসারে অভাব-অনটন থাকলেও কখনো ছেলেদের পড়াশোনা করার জন্য না করিনি। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পরেও ছেলের লেখাপড়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। তাই দেশের বিত্তবান মানুষের কাছে আমার ছেলের পড়ালেখার জন্য সাহায্য চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত