রাজশাহীর খেজুর গুড়
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ভোরের আলো ফোটার আগেই কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতিতে জহুরুল ইসলাম বেরিয়ে পড়েন গাছ থেকে খেজুরের রস নামাতে। একে একে ৩২টি গাছ থেকে রস নামিয়ে আনেন। তারপর তাওয়ায় রস জ্বাল দিতে থাকেন স্ত্রী তহুরা খাতুন। রস একসময় খয়েরি বর্ণের লালি গুড়ে রূপ নেয়। এরপর বিশেষ পাত্রে ঢেলে দিলে শুকানোর পর হয়ে যায় সুস্বাদু খেজুর গুড়।
শীত নামার সঙ্গে সঙ্গেই রাজশাহীর বাঘা, পুঠিয়া, চারঘাট ও দুর্গাপুর উপজেলার বাড়িতে বাড়িতে এই গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এই গুড় হাটে নিয়ে বেচেন গাছিরা। হাতে নগদ টাকা আসে। কয়েক বছর ধরে গুড়ের এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরাও। গাছির বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সেই গুড় বিক্রি করছেন তাঁরা।
কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন দেশের নানা প্রান্তে। গুড়ের টাকা চলে আসছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। কৃষি বিভাগ আশা করছে, চলতি বছর জেলায় খেজুর গুড় থেকেই ১৫০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। এই হিসাব শুধু গাছি পর্যায়ের। রাজশাহীর খেজুর গুড় সুস্বাদু বলে গেল কয়েক বছরে অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে। সেই গুড়ের দামও কিছুটা বেশি। তবে অনলাইন বিক্রেতারা কত টাকার গুড় বিক্রি করেন, তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না।
কৃষি বিভাগের হিসাবে, জেলায় প্রায় ১১ লাখ ৮ হাজার ১৮টি খেজুরগাছ রয়েছে। একটি গাছে বছরে ২০ কেজি খেজুরের রস হয়। তা থেকে ৮ কেজি গুড় হয়। সে হিসাবে মোট গুড়ের উৎপাদন হতে পারে ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৬ কেজি বা ৮ হাজার ৮৬৪ টন। আর বিক্রি হবে ১৪১ কোটি ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। অনলাইনের বাজার ধরলে মোট গুড় বিক্রি হবে ১৫০ কোটি টাকার বেশি।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের গাছি এনামুল হক জানান, তাঁর নিজের গাছ আছে ৯টি। আরও ৫৩টি গাছ তিনি ভাড়া নিয়েছেন মালিকের কাছ থেকে। এক মৌসুমের জন্য প্রতিটি গাছের ভাড়া ১০০ টাকা। এসব গাছ থেকে প্রতিদিন ভোরে তিনি রস নামান। সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। সপ্তাহে দুদিন ২২-২৩ কেজি গুড় বাঘা সদরের হাটে নিয়ে বিক্রি করেন। কেজিপ্রতি তিনি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা পান। শীতকালে তিনি এভাবেই সংসার চালান।
পুঠিয়ার ঝলমলিয়া গ্রামের গাছি সমশেদ আলী জানান, অনেকে খেজুরের রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে দেন। এই গুড়ের দাম কম। এগুলো স্থানীয় হাটে পাইকারেরা কিনে নেয়। সেগুলো দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়। কিন্তু ইদানীং অনলাইনের উদ্যোক্তারা আগেই জানিয়ে দেন, টাকা বেশি লাগলেও তাঁরা দেবেন, কিন্তু গুড় হতে হবে খাঁটি। এই গুড়ে চিনি মেশানো হয় না। এগুলোর দাম বেশি। গাছিই প্রতি কেজি গুড়ের জন্য ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা নেন।
শিবপুর গ্রামের গাছি আনোয়ার হোসেন বলেন, তাঁরাও খাঁটি গুড় তৈরি করতে চান। কিন্তু বাজারে দাম পান না বলে পোষায় না। ইদানীং রস জ্বাল দেওয়ার জন্য খড়িও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তাই বাধ্য হয়ে রসে চিনি মিশিয়ে গুড় করতে হয়। তবে যাঁরা আগাম জানিয়ে দেন, দাম বেশি হলেও খাঁটি গুড় নেবেন, তাঁদের জন্য শুধু রস দিয়েই গুড় তৈরি করেন।
রাজশাহী নগরের তেরখাদিয়ার কলেজছাত্র মারুফ হোসেন অনলাইনে রাজশাহীর আম, খেজুর গুড়সহ নানা কিছুর অর্ডার নেন। তারপর কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেন ক্রেতাদের কাছে। তিনি বলেন, রাজশাহীর গুড় সুস্বাদু। কিন্তু খরচ ওঠে না বলে বেশির ভাগ গাছিই চিনি মিশিয়ে দেন। এতে স্বাদ কমে যায়। এ জন্য অনলাইনের উদ্যোক্তারা অন্তত গাছিদের বেশি দাম দিয়ে খাঁটি গুড় নেন। এর ফলে বাজারের চেয়ে অনলাইনে গুড়ের দাম কিছুটা বেশি হয়। তাঁরা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে প্রতিকেজি খেজুর গুড় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, টাকা বেশি হলেও তাঁরা খাঁটি গুড় বিক্রি করতে চান। ক্রেতারাও খাঁটি গুড় চান।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, গুড় তৈরির ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদেরও অবদান কম নয়। মূলত গাছিরা রস নামিয়ে আনার পর নারীরাই এই রস ছাঁকেন। এরপর গুড় না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দেন। গাছিরা আবার পরে সেই গুড় নিয়ে হাটে বিক্রি করেন। পুরো শীত মৌসুমেই এভাবে গুড় উৎপাদন করা হয়। এতে গ্রামের অর্থনীতি চাঙা হয়।
ভোরের আলো ফোটার আগেই কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতিতে জহুরুল ইসলাম বেরিয়ে পড়েন গাছ থেকে খেজুরের রস নামাতে। একে একে ৩২টি গাছ থেকে রস নামিয়ে আনেন। তারপর তাওয়ায় রস জ্বাল দিতে থাকেন স্ত্রী তহুরা খাতুন। রস একসময় খয়েরি বর্ণের লালি গুড়ে রূপ নেয়। এরপর বিশেষ পাত্রে ঢেলে দিলে শুকানোর পর হয়ে যায় সুস্বাদু খেজুর গুড়।
শীত নামার সঙ্গে সঙ্গেই রাজশাহীর বাঘা, পুঠিয়া, চারঘাট ও দুর্গাপুর উপজেলার বাড়িতে বাড়িতে এই গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এই গুড় হাটে নিয়ে বেচেন গাছিরা। হাতে নগদ টাকা আসে। কয়েক বছর ধরে গুড়ের এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরাও। গাছির বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সেই গুড় বিক্রি করছেন তাঁরা।
কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন দেশের নানা প্রান্তে। গুড়ের টাকা চলে আসছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। কৃষি বিভাগ আশা করছে, চলতি বছর জেলায় খেজুর গুড় থেকেই ১৫০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। এই হিসাব শুধু গাছি পর্যায়ের। রাজশাহীর খেজুর গুড় সুস্বাদু বলে গেল কয়েক বছরে অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে। সেই গুড়ের দামও কিছুটা বেশি। তবে অনলাইন বিক্রেতারা কত টাকার গুড় বিক্রি করেন, তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না।
কৃষি বিভাগের হিসাবে, জেলায় প্রায় ১১ লাখ ৮ হাজার ১৮টি খেজুরগাছ রয়েছে। একটি গাছে বছরে ২০ কেজি খেজুরের রস হয়। তা থেকে ৮ কেজি গুড় হয়। সে হিসাবে মোট গুড়ের উৎপাদন হতে পারে ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৬ কেজি বা ৮ হাজার ৮৬৪ টন। আর বিক্রি হবে ১৪১ কোটি ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। অনলাইনের বাজার ধরলে মোট গুড় বিক্রি হবে ১৫০ কোটি টাকার বেশি।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের গাছি এনামুল হক জানান, তাঁর নিজের গাছ আছে ৯টি। আরও ৫৩টি গাছ তিনি ভাড়া নিয়েছেন মালিকের কাছ থেকে। এক মৌসুমের জন্য প্রতিটি গাছের ভাড়া ১০০ টাকা। এসব গাছ থেকে প্রতিদিন ভোরে তিনি রস নামান। সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। সপ্তাহে দুদিন ২২-২৩ কেজি গুড় বাঘা সদরের হাটে নিয়ে বিক্রি করেন। কেজিপ্রতি তিনি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা পান। শীতকালে তিনি এভাবেই সংসার চালান।
পুঠিয়ার ঝলমলিয়া গ্রামের গাছি সমশেদ আলী জানান, অনেকে খেজুরের রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে দেন। এই গুড়ের দাম কম। এগুলো স্থানীয় হাটে পাইকারেরা কিনে নেয়। সেগুলো দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়। কিন্তু ইদানীং অনলাইনের উদ্যোক্তারা আগেই জানিয়ে দেন, টাকা বেশি লাগলেও তাঁরা দেবেন, কিন্তু গুড় হতে হবে খাঁটি। এই গুড়ে চিনি মেশানো হয় না। এগুলোর দাম বেশি। গাছিই প্রতি কেজি গুড়ের জন্য ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা নেন।
শিবপুর গ্রামের গাছি আনোয়ার হোসেন বলেন, তাঁরাও খাঁটি গুড় তৈরি করতে চান। কিন্তু বাজারে দাম পান না বলে পোষায় না। ইদানীং রস জ্বাল দেওয়ার জন্য খড়িও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তাই বাধ্য হয়ে রসে চিনি মিশিয়ে গুড় করতে হয়। তবে যাঁরা আগাম জানিয়ে দেন, দাম বেশি হলেও খাঁটি গুড় নেবেন, তাঁদের জন্য শুধু রস দিয়েই গুড় তৈরি করেন।
রাজশাহী নগরের তেরখাদিয়ার কলেজছাত্র মারুফ হোসেন অনলাইনে রাজশাহীর আম, খেজুর গুড়সহ নানা কিছুর অর্ডার নেন। তারপর কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেন ক্রেতাদের কাছে। তিনি বলেন, রাজশাহীর গুড় সুস্বাদু। কিন্তু খরচ ওঠে না বলে বেশির ভাগ গাছিই চিনি মিশিয়ে দেন। এতে স্বাদ কমে যায়। এ জন্য অনলাইনের উদ্যোক্তারা অন্তত গাছিদের বেশি দাম দিয়ে খাঁটি গুড় নেন। এর ফলে বাজারের চেয়ে অনলাইনে গুড়ের দাম কিছুটা বেশি হয়। তাঁরা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে প্রতিকেজি খেজুর গুড় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, টাকা বেশি হলেও তাঁরা খাঁটি গুড় বিক্রি করতে চান। ক্রেতারাও খাঁটি গুড় চান।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, গুড় তৈরির ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদেরও অবদান কম নয়। মূলত গাছিরা রস নামিয়ে আনার পর নারীরাই এই রস ছাঁকেন। এরপর গুড় না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দেন। গাছিরা আবার পরে সেই গুড় নিয়ে হাটে বিক্রি করেন। পুরো শীত মৌসুমেই এভাবে গুড় উৎপাদন করা হয়। এতে গ্রামের অর্থনীতি চাঙা হয়।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মালিকানায় থাকা এক প্লটের ২৮ একর জমি মিলেমিশে দখলে রেখেছে ৩৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এদিকে বিমানবন্দরের মালিকানাধীন তিনটি ক্যানটিনের ভাড়া পরিশোধ না করে ১৭-১৮ বছর দখলে রেখেছে একটি মহল। তা ছাড়া বিজয়নগর আবাসিক এলাকায় বিমানবন্দরেরই সরকারি জায়গা দখল
৪ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহ নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন খালের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার। বর্ষা মৌসুমে এসব খাল হয়েই নগরীর পানিনিষ্কাশন হয় পাশের নদীতে। খালগুলো খননে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ও হয় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের। কিন্তু এ খননেও কাজ হচ্ছে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরীর অধিকাংশ এলাকায় হাঁটুপানি জমে
৫ ঘণ্টা আগেহবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছেই। ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে প্রকাশ্যে তোলা হচ্ছে বালু। এতে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চা-বাগান, পাহাড়ি ছড়া, সংরক্ষিত বন ও ফসলি জমি, তেমনি ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাটেরও। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে বালু উত্তোলন বন্ধে
৫ ঘণ্টা আগেমাদারীপুরের কালকিনির ভাটবালী আব্দুর রহমান মোল্লা বিদ্যাপীঠ নামের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শতাধিক কলাগাছ রোপণের অভিযোগ উঠেছে। ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্যে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে এই গাছগুলো লাগানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কালকিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগে