দুই যুগেও এমপিওভুক্ত হয়নি বিদ্যালয়, হতাশায় শিক্ষক-কর্মচারীরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩, ১৪: ১৮
Thumbnail image

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় ৯৫ ভাগ পরীক্ষার্থী সাফল্য পেয়েছে। এমপিওভুক্তির নীতির সব ধরনের শর্তও পূরণ করা হয়েছে। তবু দুই যুগ ধরে এমপিওভুক্ত হয়নি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় সালেহাখাতুন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। 

এমপিওভুক্ত না হওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটছে প্রতিষ্ঠানটির ১৩ শিক্ষক ও চার কর্মচারীর। এসব শিক্ষকের অনেকের অবসরের সময়ও ফুরিয়ে আসছে। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন কাজ। 

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, নারী শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে সদর উপজেলার ঘণি মহিষপুর গ্রামে ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয় সালেহা খাতুন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। ২০০৩ সালে বিদ্যালয়টি পাঠদানের অনুমতি পায়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী ২৫০ জন। 

প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই বিদ্যালয়ে অফিসকক্ষসহ টিনশেড আটটি কক্ষ রয়েছে। আছে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর পরও বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়নি। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহানারা বেগম শেলী বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষার গুণগত মান বজায় রেখেছে। প্রতি বছরই জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলেও ২৪ বছরের পুরোনো এই প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি। 

শাহানারা বেগম আরও বলেন, অর্থাভাবে কর্মরত শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকের চাকরির বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে। 

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারাজ উদ্দিন বলেন, ‘চাকরি বয়স আছে সাত বছর। এমপিওভুক্তির আশায় বছরের পর বছর পার করেছি। এখন শুধুই হতাশা। কৃষিকাজ করে কোনো রকম সংসার চালাচ্ছি।’ 

ফজলে এলাহী নামে আরেক শিক্ষক জানান, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বিনা বেতনে চাকরি করে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। পরিবারের চাহিদা মেটাতে না পারায় নানান কথাও শুনতে হয় তাঁকে। 

ইংরেজি শিক্ষিকা মেহেরুন্নেসা বলেন, এখন অন্য কোথাও চাকরি নেওয়ার সুযোগ নেই। সেই বয়সও শেষ হয়ে গেছে। আর্থিক অনটনের মাঝে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা এখন দায় হয়ে পড়েছে। 

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোশারুল হক বলেন, বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হলে কেবল এর শিক্ষক-কর্মচারীই নন, এলাকার শিক্ষার্থীরাও উপকর পাবে। এমপিওভুক্ত না হলে বিদ্যালয়ে দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে অনেক শিক্ষক হয়তো শূন্য হাতে অবসরে যাবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য সরকারের একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই শেষে এমপিওভুক্ত করা হয়। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছুই করণীয় নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত