ভূরুঙ্গামারীতে সংস্কারের অজুহাতে সড়কের কার্পেটিং তুলে নেওয়া হলো অন্যত্র

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১৩: ৩৩
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ০৩

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সংস্কারকাজের অজুহাতে সড়কের কার্পেটিং (বিটুমিন মেশানো পাথর) তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এতে দেড় মাস ধরে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা যানবাহন ও পথচারীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

সাধারণত সংস্কারকাজের সময় কার্পেটিং তুলে সড়কের পাশেই রাখা হয়। পরে তা ভেঙে সেই সড়কে ব্যবহার করা হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। 

কার্পেটিং অন্যত্র নেওয়ার বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বক্তব্য, তাদের অনুপস্থিতিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কার্পেটিং তুলে অন্যত্র রেখেছে। এ ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, এলজিইডি অফিসের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে ভোগান্তির শিকার পথচারীরা বলছেন, এলজিইডির বক্তব্য হাস্যকর ও অযৌক্তিক। এলজিইডি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশেই সড়কের কার্পেটিং তুলে নেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি লোক দেখানো। 

ভূরুঙ্গামারী এলজিইডি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ২২৮ টাকা ব্যয়ে ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে শিলগুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। সুমন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক সংস্কারের কাজ বাস্তবায়ন করছে। 

কয়েকজন পথচারী ও অটোরিকশাচালক বলেন, মাস দেড়েক আগে সড়ক সংস্কারের অজুহাতে উপজেলার হাসপাতাল মোড় থেকে দফাদার মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সকাভেটর দিয়ে তুলে ট্রাক্টরে করে নিয়ে যায়। এতে সড়ক এবড়োখেবড়ো হয়ে গেছে। সড়ক দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। 

পথচারী ও অটোরিকশাচালকেরা আরও বলেন, দেড় মাস অতিবাহিত হলেও কার্পেটিং তুলে নেওয়া সড়কে সংস্কারকাজের কোনো খবর নেই। সড়কের কার্পেটিং তুলে নেওয়ার বিষয়টি এলজিইডি জানে না—এটা হাস্যকর ও অযৌক্তিক। এলজিইডি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশেই সড়কের কার্পেটিং তুলে নেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি লোক দেখানো। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুমন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী বেলাল হোসেন বলেন, ‘হাসপাতাল মোড় থেকে দফাদার মোড় পর্যন্ত সড়কের কার্পেটিং তুলে নিয়ে চলাচলের অনুপযোগী অন্য একটি সড়কে দেওয়া হয়েছে।’ 

এক সড়কের কার্পেটিং তুলে অন্য সড়কে দেওয়ার বিধান আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে বেলাল হোসেন বলেন, ‘অফিসের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করা হয়েছে।’ এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে আরও জানতে চাওয়া হলে এত কথা বলা যাবে না বলে জানান তিনি। 

এলজিইডির ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমাদের অনুপস্থিতিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কার্পেটিং তুলে অন্যত্র রেখেছে।’ কার্পেটিং অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার নিয়ম আছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কার্পেটিং তুলে ভেঙে সড়কেই দেওয়ার নিয়ম।’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।’ এ বিষয়ে আরও জানতে চাওয়া হলে তিনি মোবাইল ফোনে উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত