Ajker Patrika

৩ বছরেও মেরামত হয়নি দেবে যাওয়া কালভার্ট, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন, ডোমার (নীলফামারী) 
৩ বছরেও মেরামত হয়নি দেবে যাওয়া কালভার্ট, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার শাহ কলন্দর নদীর কালভার্টটি তিন বছর আগে নদীতে দেবে গেছে। প্রায় সাত হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়েই বাঁশেরপুল নামের এই কালভার্ট দিয়ে চলাচল করছেন। এ অবস্থায় যখন-তখন যানবাহন কাত হয়ে পড়ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

এলাকাবাসীর দাবি, কালভার্টটি কবে মেরামত বা নতুন করে নির্মাণ করা হবে—এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একাধিকবার জিজ্ঞাসা করা হলেও সঠিক উত্তর জানা নেই কারও। 

নদী খননের কারণে প্রায় তিন বছর আগে কালভার্টের নিচে মাটি সরে গিয়ে দেবে যায়। এই কালভার্ট দিয়ে সোনারায় ইউনিয়নের বড়গছা, ডুগডুগি, হরিচড়া ইউনিয়নের হরিহরা, ধরনীগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছেন। 

কালভার্টের ওপর দিয়ে চলাচল করা বড়গছা এলাকার মশিউর রহমান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে, সাইকেল ও ভ্যানে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে চলাচল করা সম্ভব হয় না। বর্ষায় কালভার্টের ওপর দিয়ে পানির স্রোত যায়। তখন কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের বন্ধ হয়ে যায়। 

হংশরাজ এলাকার গোলাম মোস্তফা নামের এক মুদি দোকানি বলেন, ‘এবার বর্ষা মৌসুমে কালভার্টের ওপর থেকে একটি অটোরিকশা পড়ে যায়। আমরা এলাকাবাসী অটোরিকশার আটজন যাত্রীকে উদ্ধার করি।’ 

ভ্যানচালক শৈত্যেন রায় বলেন, ‘এ কালভার্টের ওপর দিয়ে ভ্যান চালিয়ে পার হওয়া যায় না। ভ্যান থেকে নেমে ঠেলা দিয়ে যেতে হয়। তাও ভয়ে থাকি কখন নদীতে পড়ে যাব।’ 

বাঁশেরপুল কালভার্টে ভ্যানচালক নেমে পার হচ্ছেনবড়গছা এলাকার কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ধান, পাট বিক্রি করতে সমস্যা হয়। পাইকাররা বাড়িতে আসে না। তাই বাধ্য হয়ে বসুনিয়া হাট হয়ে ৪ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে ডোমারে গিয়ে পণ্য বিক্রি করি।’ 

হরিহরা এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি, এলজিইডি অফিসের লোক, সাংবাদিক সবাই আসে আর যায়। লিখে নেয়, ছবি তুলে। তাদের কাছে যতবারেই জানতে চাই কবে কালভার্টটি ভালো হবে। সবাই দ্রুত হবে বলে আমাদের সান্ত্বনা দেয়। তবে কবে হবে জানতে চাইলে কেউ উত্তর দেয় না।’ 

হরিণচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল রানা বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কালভার্টটি মেরামতে বারবার যোগাযোগ করছি। হয়তো দ্রুত বরাদ্দ হয়ে যাবে।’ 

ডোমার উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তাক আহমেদ বলেন, কালভার্টটির সয়েল টেস্টসহ বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল আলম বিপিএএ বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে এ উপজেলা যোগদান করেছি। তাই বিষয়টি সম্পর্কে জানি না। আমি খোঁজ নিচ্ছি কেন এত দিনে কালভার্টটি মেরামত হয় নাই। আর দ্রুত মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত