আশ্রয়ণ প্রকল্পের ইট, সিমেন্ট ও মোটর চুরি, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি

ছনি চৌধুরী, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) 
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২১, ১৯: ৩১

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইট, সিমেন্ট ও পানির মোটর চুরির অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়। এ ঘরে ২টি কক্ষ,১টি বারান্দা ও ১টি স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট রাখা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নবীগঞ্জ উপজেলায় ১ম ধাপের ১১০টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২য় ধাপের ৬০টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের বৈঠাখাল গ্রামের খাস জমির ওপর ৫৬টি ঘর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

বেঠাখাল গ্রামের ভূমিহীনদের অভিযোগ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলাকালে রাজমিস্ত্রি মুজিবুর রহমান, বৈঠাখাল গ্রামের সিএনজি চালক মোজাহিদসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় ২-৩ দিন আগে প্রায় ৫০ বস্তা সিমেন্ট, ৫ হাজার ইট ও একটি পানির মোটর রাতের আঁধারে বিক্রি করে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিনসহ একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চুরির সত্যতা পেয়েছেন। এ ঘটনার পর রাজমিস্ত্রি মুজিবুর রহমান পলাতক আছেন।

বৈঠাখাল গ্রামের আফিজ উদ্দিন বলেন, সিএনজি চালক মোজাহিদ ও রাজমিস্ত্রি মুজিবুর আমার কাছে ৩৫০ টাকা দরে ২০ বস্তা সিমেন্ট ও কিছু ইট বিক্রি করেছে। এই সিমেন্ট ও ইট সরকারি কি না আমার জানা নেই।

তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিএনজি চালক মোজাহিদ মিয়া বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। অভিযুক্ত রাজমিস্ত্রি মুজিবুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকায় ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

এ প্রসঙ্গে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সাব-ঠিকাদার হুমায়ুন আহমেদ বলেন, বৈঠাখাল আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজের ইট, সিমেন্ট ও পানি উত্তোলনের মোটর চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে আমি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করব।

মালামাল সরবরাহকারী আব্দুল আলীম জানান, কিছু সিমেন্ট ও ইট চুরি হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ছাদু মিয়া বলেন—ইট, সিমেন্ট চুরির বিষয়টি আমাকে রাজমিস্ত্রি হুমায়ুন জানিয়েছে। তবে কত বস্তা সিমেন্ট ও কত হাজার ইট চুরি হয়েছে তার সঠিক পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন চুরির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চোরচক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে আরও ৩টি আশ্রয়ণ প্রকল্পে চুরি ঘটনা ঘটেছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত