মৌলভীবাজারে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি, দুর্ভোগে ৩ লাখ মানুষ

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ২৯
Thumbnail image

মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে ধীর গতিতে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। তবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো পানিবন্দী আছে প্রায় তিন লাখ মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ৭ হাজার ১৪৫ জন মানুষ। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় মনু নদের পানি রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর চাঁদনীঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদের পানি রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

জেলার কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলায় গিয়ে জানা গেছে, টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা উজানের পানির ঢলে জেলার সত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। অনেক মানুষ পানিবন্দী আছেন। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। বন্যার পানিতে জেলা শহরের সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক তলিয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। হঠাৎ বন্যায় সবকিছু হারিয়ে অনেকে অসহায় হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আশ্রয় নিচ্ছে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। তবে নদীর পানি কমায় প্লাবিত অনেক এলাকা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ৪৭ আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজার ১৪৫ জন মানুষ উঠেছে। বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ ও চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। জেলায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী আছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সরকারিভাবে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ ও নগদ অর্থ আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা সড়ক। বৃহস্পতিবার কুলাউড়ার কটারকুনা-কুলাউড়া সড়কে। ছবি: আজকের পত্রিকা বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রশাসনের পাশাপাশি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘটন এবং স্বেচ্ছাসেবকেরা। বন্যাদুর্গত এলাকায় চিড়া, পানি, স্যালাইন ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও অনেক এলাকার বাসিন্দারা জানায়, তাদের কাছে কেউ এখনো সহায়তা নিয়ে আসেনি। 

কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন বাসিন্দা অজয় দেব ও শামসুল মিয়া বলেন, ‘গত বুধবার রাতে মনু নদের পানি আমাদের বাড়িঘর ঢুকে যায়। পরিবারে নারী ও শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। আমরা পুরুষেরা বাড়িতে রয়েছি। আমাদের গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে আছি। তবে শুক্রবার সকাল থেকে পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে।’ 

জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করেছে। মনু ও ধলাই নদে রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধীর গতিতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। যত সময় যাবে বন্যা পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে। 

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মী বিনতে সালাম বলেন, বন্যার্তদের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংঘটন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। জেলার নদীগুলোর পানি কমায় ধীর গতিতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত