Ajker Patrika

শেখ হাসিনার বিচার এক-দেড় মাসের মধ্যেই শুরু হবে: চিফ প্রসিকিউটর

নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট 
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেখ হাসিনাসহ প্রধান প্রধান কয়েকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন মার্চের মধ্যে পাওয়ার আশার কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন হাতে পেলে এক-দেড় মাসের মাথায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু যাবে।’

আজ শনিবার দুপুরে সিলেট প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক কর্মশালায় অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। বিচারকাজে কোনো তাড়াহুড়ো নয়; কিন্তু অহেতুক বিলম্ব করে যাতে জনগণের আকাঙ্ক্ষা নষ্ট না হয়, সেদিকে নজর থাকবে।’

মানবতাবিরোধী অপরাধ আর সাধারণ অপরাধ সমান নয় উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, বাংলাদেশের আইনে মার্ডার, মাদক পরিবহন, ধর্ষণ ও অস্ত্র রাখার জন্য মৃত্যুদণ্ড আছে। সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ; যাকে বলা হয় ‘অপরাধের অপরাধ’ সেই জায়গায় মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়া বা না রাখা এটা বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বাস্তবসম্মত নয়। বাকিটা আদালতে ওপর নির্ভর করবে। কাকে কতটুকু সাজা দেওয়া হবে, কি হবে না, সেটা আদালতের ওপর নির্ভর করবে। এ পর্যায়ে বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড উঠিয়ে দেওয়ার মতো কোনো পরিবেশ আছে বলে মনে হচ্ছে না।

শেখ হাসিনা পলাতক থাকায় বিচার কীভাবে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য যে আইনগত পদক্ষেপগুলো আছে, তার একটি হচ্ছে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে রেড নোটিশ জারি করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা। সেটা সরকারের পক্ষ থেকে অব্যাহত আছে। আমরা যখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ট্রাইব্যুনাল থেকে পেয়েছি—সেটার আলোকে ইন্টারপোলের কাছে আমরা পাঠিয়েছি তাকে যাতে গ্রেপ্তার করা হয়। দ্বিতীয় চেষ্টা হচ্ছে, তিনি যেহেতু ভারতে অবস্থান করছেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তি আছে, অপরাধী ‘বহিঃসমর্পণ চুক্তি’, সেটা ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছিল। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া কোনো আসামি ভারতে যদি থাকে, তাকে প্রত্যপর্ণের ব্যাপারে আমরা অনুরোধ করতে পারি। চুক্তি অনুযায়ী তারা সেটা করতে বাধ্য। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এক্সট্র্যাডিশন রিকুয়েস্ট ভারতের কাছে করা হয়েছে। ভারত সেটা পেয়েছে; কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি। আমরা চাইব ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাঁরা একজন অপরাধীর পক্ষে অবস্থান নেবেন, না কী গণহত্যাকারীদের বিচারের প্রশ্নে, ন্যায়বিচারের প্রশ্নের একটা আইনের শাসনের প্রতি তাঁদের অবস্থান গ্রহণ করবেন।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ হবে—এই ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার জন্য পরাজিত দোসরা নানাভাবে চেষ্টা করবে, নানা প্রশ্ন তুলবে। সেগুলো কাউন্টার করা। সর্বোপরি আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, একটা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা। এ দুটো জিনিসের মাঝখানে ভারসাম্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত দিনব্যাপী এ কর্মশালায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামানসহ বিচার বিভাগ, সিলেট বিভাগের পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত