ক্রিকেটার এবাদতের গ্রামের বাড়িতে বইছে আনন্দের ঢল

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯: ০১
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯: ৫২

জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন ছিল অজপাড়াগাঁয়ের ছেলে এবাদত হোসেন চৌধুরীর। এবাদতের সেই স্বপ্ন সত্যি হলো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। টেস্ট জয়ের মূল নায়ক এবাদত হোসেন চৌধুরী এখন সবার প্রশংসায় ভাসছেন। নেটিজেনদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর উচ্ছ্বাসে তাঁর গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির কাঁঠালতলী গ্রামে বইছে আনন্দের ঢল। 

আজ বুধবার বিকেলে এবাদত হোসেনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবাদত যে ইতিহাস রচনা করেছেন, তাতে পরিবারের সবাই মহাখুশি। এলাকার অনেকেও আসছেন তাঁর বাড়িতে। 

জয়ের পরে বল হাতে এবাদতআলাপে এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও মা সামিয়া বেগম চৌধুরী বলেন, ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। সারা দিন ক্রিকেট খেলত। তার স্বপ্ন ছিল কোনো একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। আজ ছেলের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিতিয়ে সে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমাদের ছেলের এমন পারফরম্যান্সে আমরাও খুশি; এলাকার মানুষও খুশি। আমরা তার সব খেলা দেখেছি। নামাজ পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য দোয়া করেছি। সকালে এবাদতের সঙ্গে ফোনে আমাদের কথা হয়েছে। সে খুব খুশি।’ 

এবাদতের চাচাতো ভাই দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী ইমন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে সারা দেশের মতো আমরাও গর্বিত, আনন্দিত। আমার ছোট ভাই এবাদত হোসেন চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগী। আমাদের বিশ্বাস ছিল, সে একদিন দেশের মুখ আলোকিত করবে। আজ তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’ 

এবাদতের সহপাঠী আমজাদ হোসেন পাপলু ও এমদাদুর রাজ্জাক রাব্বি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সে যে চমক দেখিয়েছে, তাতে আমরা খুশি। এলাকার মানুষ ভীষণ খুশি। তার জন্য আজ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। এলাকার সবাই তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।’ 

বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দলপরিবারসূত্রে জানা যায়, এবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বর্ডার গার্ডে (বিজিবি) চাকরি করতেন, আর মা সামিয়া বেগম চৌধুরী পেশায় গৃহিণী। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে এবাদত হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি তাঁর আলাদা টান ছিল। স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিকেট ক্লাবে খেলেছেন এবাদত। ভালো বোলিং করতেন বলে এলাকার বাইরেও তাঁর নামডাক ছিল। 

এসএসসি পাস করে ২০০৮ সালে সৈনিক পদে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। সেখানেই চাকরির পাশাপাশি বিমানবাহিনীতে নিয়মিত ভলিবল খেলতে শুরু করেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তাঁর টান মোটেও কমেনি। ২০১৬ সালে রবি পেসার হান্টের শেষ রাউন্ডে ১৩৯.০৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে সবাইকে চমকে দেন এবাদত। নজরে আসেন সবার। এরপর থেকে এবাদতকে আর পেছনে থাকতে হয়নি। ২০১৯ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এবাদতের অভিষেক হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই তাঁর টেস্টে অভিষেক হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত