কালো টাকা সাদা করার বিকল্প খুঁজতে হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২: ৫৭
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০: ১৫

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, ‘শেয়ার মার্কেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে সরকার ইতিপূর্বে বিতর্কের স্বীকার হয়েছে। তাই ট্যাক্স ছাড় বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেই যে ক্যাপিটাল মার্কেট চাঙা হয়ে যাবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ জন্য অন্য কোনো উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

আজ বুধবার দুপুরে নগরের অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে সামনে রেখে এই প্রাক-বাজেট আলোচনা সভার আয়োজন করে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।

দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থে কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে নিশ্চিত হতে হবে যে দেশীয় শিল্পগুলো স্থানীয় চাহিদা পূরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ কি না এবং তা সহজলভ্য কি না। দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই করদাতাদের ভয়ভীতি দূর করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছি।’

ব্যবসায়ীদের স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলো নিরসনের লক্ষ্যে কাস্টমস কমিশনার ও কর কমিশনারের কার্যালয়ে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অডিটের জন্য আমরা ‘সেকেন্ডারি ডেটাবেইস অডিট সিস্টেম’ চালু করতে যাচ্ছি। এটি চালু হলে অডিট প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সহজতর হবে। এ বছর আমরা বাজেট তৈরির জন্য লম্বা সময় নিয়ে কাজ করছি, তাই কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি পর্যায়ে সম্পূরক প্রস্তাবনা থেকে থাকলেও পরবর্তীতে তাও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠাতে পারবেন।’

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি) মাসুদ সাদিক, সদস্য (আয়কর নীতি) সামস্ উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য (মূসক নীতি) জাকিয়া সুলতানা।

সিলেটে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক তাহমিন আহমদ বলেন, ‘করোনা মহামারি, প্রলয়ংকরী বন্যা ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সিলেটের ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে রয়েছেন। এমতাবস্থায়ও ভ্যাট বিভাগের পক্ষ থেকে সিলেটের ব্যবসায়ীদের বর্ধিত হারে ভ্যাট প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। চলতি বছরের ভয়াবহ বন্যা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম মন্দার কারণে সিলেটের ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাই সিলেটের ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের সহমর্মিতামূলক মনোভাব রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

এ লক্ষ্যে তিনি আগামী বাজেটে কোনোরকম ভ্যাট, ট্যাক্স বৃদ্ধি না করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি অনুরোধ জানান। এ ছাড়া তিনি সিলেট থেকে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে বিমানযোগে সরাসরি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে সিলেটে প্যাকিং হাউস নির্মাণ, সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাগেজ সিস্টেম পুনরায় চালু, ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ থেকে ৫ লাখ টাকায় বর্ধিতকরণ, সুনামগঞ্জের জাদুকাটা নদীপথ দিয়ে আমদানি-রপ্তানি চালু, উপজেলা পর্যায়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে রাজস্ব কর্মকর্তার সংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের করপোরেট ট্যাক্স হ্রাস করাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

সহকারী কর কমিশনার অর্পা বণিক ও সিলেট চেম্বারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মিনতি দেবীর সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সহ সভাপতি মো. আতিক হোসেন, কাস্টম্স এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের সিলেটের কমিশনার মো. আকবর হোসেন, কর অঞ্চল-সিলেটের কর কমিশনার সৈয়দ জাকির হোসেন, সিলেট চেম্বারের পরিচালক ও ভ্যাট, বাজেট, শুল্ক, কর ও ট্যারিফ সাব কমিটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ আবু তাহের মো. শোয়েব, চেয়ারম্যান ও পরিচালক মো. হিজকিল গুলজার, অতিরিক্ত কর কমিশনার হেমল দেওয়ান, অতিরিক্ত কাস্টমস কমিশনার মুহাম্মদ রাশেদুল আলম, সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, সিলেট চেম্বারের পরিচালক জিয়াউল হক, মুজিবুর রহমান মিন্টু, আলীমুল এহছান চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি শাহ আলম, সাবেক সহ সভাপতি হাজী মো. দিলওয়ার হোসেন, মো. এমদাদ হোসেন, সাবেক পরিচালক পিন্টু চক্রবর্তী, এহতেশামুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট গ্রুপের সভাপতি মো. বশিরুল হক, ভ্যাট, বাজেট সাব কমিটির কো-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাজাহারুল হক, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেট জেলা কর আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আঙুল আলীম পাঠান, মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক নাঈম সরফরাজ ও প্রতিনিধিবৃন্দ, সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক নুরুল ইসলাম ও প্রতিনিধিবৃন্দ, সিলেট চেম্বারের সচিব মো. গোলাম আক্তার ফারুক ও কর্মকর্তাবৃন্দ, সিলেটের বিভিন্ন মার্কেট ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা এবং সিলেটের গণ্যমান্য ব্যবসায়ীরা।

সভায় বক্তারা ভোগ্যপণ্য পরিবেশকদের নিকট থেকে ভ্যাট আদায় না করা, বিসিক শিল্প মালিকদের ভ্যাট হ্রাস করা, স্থলবন্দর ও এলসি স্টেশন সমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সমস্যা দূর করা, ইটভাটা মালিকদের ভ্যাটের কিস্তি পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করা, কোর্ট ফি ডকুমেন্টের অপ্রতুলতার জন্য অনলাইনে কোর্ট ফি আদায়, ভ্যাটের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত