ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর লাগোয়া গ্রাম নৈখাই। গতকাল বুধবার দুপুরে বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে নোট নেওয়ার জন্য খাতা-কলম বের করতেই এগিয়ে আসেন বানেছা বেগম (৪০), জুলেখা বেগম (৩৫), শিল্পী আক্তার (২৮), রহিম উদ্দিন (৪৫), নুরুজ আলীসহ (৫৫) বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ। সমস্বরে সবার একটাই দাবি, ‘ও বা, আমার নামডা লেখো রেবা। আমরা কোন্তা (কিছুই) পাইছি না। কুব (খুব) বিফদের (বিপদের) মাঝে আছিরে বাবা।’
জুলেখা বেগম-নুরুজ আলীরা ধারণা করেছিলেন, ত্রাণের জন্য তালিকা করা হচ্ছে। পরে সংবাদকর্মী শুনে অনেকটাই হতাশ তাঁরা। অনেকেই ফিরে যান। কয়েকজন দাঁড়িয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। তাঁদের মধ্যে বানেছা বেগম জানান, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পাশে একটি কলোনিতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে আছেন চার দিন ধরে। বাসার আসবাব যা ছিল, সবই শেষ। স্বামী নাই। ছেলেমেয়েরা ছোট ছোট। এখনো কোনো সরকারি সহায়তা পাননি।
এতক্ষণ বানেছার পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন জুলেখা বেগম। এবার তিনি কথা বলতে শুরু করেন, ‘চাইর দিন কলোনিত তাখলেও আইজ আর তাখা যাইত না। ইকানো পানি উঠি গেছে। তার বাফ গেছইন (ছেলের বাবা মানে উনার স্বামী) আছরয় খুজাত (আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজে)। আমরারেও খেউ কোন্তা দিছে না। যে খষ্টের মাঝে আছি, আল্লা ছাড়া খেউ জানে না।’
কুশিয়ারাতীরে অবনতি
সিলেটে কুশিয়ারা তীরবর্তী ছয় উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। দুটিতে রয়েছে অপরিবর্তিত। আর সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, লোভা ও সারি নদী তীরবর্তী পাঁচ উপজেলায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সিলেটের যেসব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার। আগের দিন থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের সব কটি উপজেলায়। আর পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, মেঘালয়ের ঢলে সুরমা, ধলাই ও পিয়াইন নদীর পানি বাড়ে। আসাম থেকে ঢল নামলে কুশিয়ারার পানি বাড়ে। এখন ঢল নামছে আসাম থেকে। তাই কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে এবং ওই নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে অসংখ্য মানুষ এখনো পানিবন্দী। সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবির উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এখনো দুই জেলার দুর্গম অনেক এলাকায় ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে। যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গম এলাকার দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বৃদ্ধা বেগম আক্তারের সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বানের জল। গতকাল দুপুরে তিনি বলেন, ‘কালকে দুপুরে সামান্য চিড়া-মুড়ি খেয়েছি, এখনো কিছু পাইনি।’ পেট দেখিয়ে বলেন, ‘ক্ষুধার জ্বালায় আর বাঁচি না। কিচ্ছু নাই, কোথায় থেকে খাব। গলাসমান পানি ছিল বাসায়। নাতিকে কাঁধে নিয়ে বের হয়েছিলাম। আজ ঘরে ফিরলাম। এখনো বারান্দার নিচে পানি।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার অষ্টগ্রাম রাসগোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন উলুতুলু গ্রামের নজির উদ্দিন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উগারে (গোলা) ২০০ মণ ধান ছিল। সব নষ্ট হয়ে গেছে। পানি কমায় আজ দেখতে গিয়েছিলাম। দুর্গন্ধের জন্য টিকতে পারিনি। চলে আসছি। এখন একেবারে অসহায় হয়ে গেলাম।’
আজ থেকে চলবে ফ্লাইট
সিলেট নগরীর উঁচু এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে নেমেছে পানি। রানওয়ে থেকে পানি নেমে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে।
বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. হাফিজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রানওয়ের পানি আগেই নেমে গেছে। অ্যাপ্রোচ লাইট পানিতে তলিয়ে থাকায় ফ্লাইট চলাচল শুরু করা যায়নি। এখন পানি নেই। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় পরীক্ষামূলকভাবে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। কোনো সমস্যা না হলে এরপর থেকে ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলবে।’
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর লাগোয়া গ্রাম নৈখাই। গতকাল বুধবার দুপুরে বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে নোট নেওয়ার জন্য খাতা-কলম বের করতেই এগিয়ে আসেন বানেছা বেগম (৪০), জুলেখা বেগম (৩৫), শিল্পী আক্তার (২৮), রহিম উদ্দিন (৪৫), নুরুজ আলীসহ (৫৫) বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ। সমস্বরে সবার একটাই দাবি, ‘ও বা, আমার নামডা লেখো রেবা। আমরা কোন্তা (কিছুই) পাইছি না। কুব (খুব) বিফদের (বিপদের) মাঝে আছিরে বাবা।’
জুলেখা বেগম-নুরুজ আলীরা ধারণা করেছিলেন, ত্রাণের জন্য তালিকা করা হচ্ছে। পরে সংবাদকর্মী শুনে অনেকটাই হতাশ তাঁরা। অনেকেই ফিরে যান। কয়েকজন দাঁড়িয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। তাঁদের মধ্যে বানেছা বেগম জানান, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পাশে একটি কলোনিতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে আছেন চার দিন ধরে। বাসার আসবাব যা ছিল, সবই শেষ। স্বামী নাই। ছেলেমেয়েরা ছোট ছোট। এখনো কোনো সরকারি সহায়তা পাননি।
এতক্ষণ বানেছার পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন জুলেখা বেগম। এবার তিনি কথা বলতে শুরু করেন, ‘চাইর দিন কলোনিত তাখলেও আইজ আর তাখা যাইত না। ইকানো পানি উঠি গেছে। তার বাফ গেছইন (ছেলের বাবা মানে উনার স্বামী) আছরয় খুজাত (আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজে)। আমরারেও খেউ কোন্তা দিছে না। যে খষ্টের মাঝে আছি, আল্লা ছাড়া খেউ জানে না।’
কুশিয়ারাতীরে অবনতি
সিলেটে কুশিয়ারা তীরবর্তী ছয় উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। দুটিতে রয়েছে অপরিবর্তিত। আর সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, লোভা ও সারি নদী তীরবর্তী পাঁচ উপজেলায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সিলেটের যেসব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার। আগের দিন থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের সব কটি উপজেলায়। আর পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, মেঘালয়ের ঢলে সুরমা, ধলাই ও পিয়াইন নদীর পানি বাড়ে। আসাম থেকে ঢল নামলে কুশিয়ারার পানি বাড়ে। এখন ঢল নামছে আসাম থেকে। তাই কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে এবং ওই নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে অসংখ্য মানুষ এখনো পানিবন্দী। সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবির উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এখনো দুই জেলার দুর্গম অনেক এলাকায় ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে। যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গম এলাকার দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বৃদ্ধা বেগম আক্তারের সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বানের জল। গতকাল দুপুরে তিনি বলেন, ‘কালকে দুপুরে সামান্য চিড়া-মুড়ি খেয়েছি, এখনো কিছু পাইনি।’ পেট দেখিয়ে বলেন, ‘ক্ষুধার জ্বালায় আর বাঁচি না। কিচ্ছু নাই, কোথায় থেকে খাব। গলাসমান পানি ছিল বাসায়। নাতিকে কাঁধে নিয়ে বের হয়েছিলাম। আজ ঘরে ফিরলাম। এখনো বারান্দার নিচে পানি।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার অষ্টগ্রাম রাসগোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন উলুতুলু গ্রামের নজির উদ্দিন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উগারে (গোলা) ২০০ মণ ধান ছিল। সব নষ্ট হয়ে গেছে। পানি কমায় আজ দেখতে গিয়েছিলাম। দুর্গন্ধের জন্য টিকতে পারিনি। চলে আসছি। এখন একেবারে অসহায় হয়ে গেলাম।’
আজ থেকে চলবে ফ্লাইট
সিলেট নগরীর উঁচু এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে নেমেছে পানি। রানওয়ে থেকে পানি নেমে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে।
বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. হাফিজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রানওয়ের পানি আগেই নেমে গেছে। অ্যাপ্রোচ লাইট পানিতে তলিয়ে থাকায় ফ্লাইট চলাচল শুরু করা যায়নি। এখন পানি নেই। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় পরীক্ষামূলকভাবে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। কোনো সমস্যা না হলে এরপর থেকে ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ভিসার ব্যাপারে কিছুটা কড়াকড়ি করেছে। তারা আমাদের ভিসা দেবে কি না, এটা তাদের বিষয়।’
৬ ঘণ্টা আগেনাটোরের বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের এক সমর্থককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আহত ওই যুবককেই আটক করে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান
৬ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আপনারা ভালো কাজ করলে আমাদের সমর্থন পাবেন। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে এক সেকেন্ডও সময় নেব না আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। দায়সারা কথা বলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে প্রহসন করবেন না।
৭ ঘণ্টা আগেলক্ষ্মীপুরে একটি তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও ইসলামি সংগীত সন্ধ্যা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে এই আয়োজন করা হয়েছিল। মাহফিলে জামায়াত নেতাকে প্রধান অতিথি করায় বিএনপি সেটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
৮ ঘণ্টা আগে