রাশেদা কে চৌধূরী
ছোটবেলার ঈদের দিনগুলো মধুরতম ছিল। আমি একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছি। বাবা ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক, আর মা ডাক্তার। তাঁদের দুজনকেই দেখেছি, সবার সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে। আমাদের সময় ঈদে পোশাক-আশাক কেনাকাটার বাড়াবাড়ি ছিল না। একটা জামা পেলেই খুশির সীমা থাকত না আমাদের। সঙ্গে এক জোড়া জুতা পেলে তো কথাই নেই। আর আজকাল দেখি শহর, গ্রাম ও মফস্বল—সব জায়গাতেই ছেলেমেয়েরা কয়েক সেট জামা কাপড়েও সন্তুষ্ট থাকে না।
আমার শৈশব কেটেছে সিলেট আর রাজশাহীতে। দুই জায়গাতেই ঈদে ও চৈত্র-সংক্রান্তিতে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে আনন্দ করতে দেখেছি। আমরা চৈত্রসংক্রান্তিতে ও পয়লা বৈশাখে বন্ধুদের বাড়ি যেতাম, রথযাত্রায় যেতাম। আজকাল বাবা-মায়েরা মেয়েদের একা বাসার বাইরে ছাড়তে ভয় পান। আমাদের সময় এমন ছিল না। আমরা পাড়াময় ঘুরে বেড়াতাম। আমার বোন একবার রথযাত্রায় গিয়ে মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ভিড় কমলে তাঁকে খুঁজে পেয়েছিলাম। আর এখন মেয়েদের সঙ্গে কত ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন এসব ছিল না।
আমাদের ছোটবেলার ঈদে পোশাক-আশাক কেনাকাটার বাড়াবাড়ি না থাকলেও খাবার-দাবারের জম্পেশ আয়োজন হতো। এখনো মনে পড়ে সবাইকে খাইয়ে সবশেষে মা ও ফুফুরা খেতেন। তাঁদের জন্য কী আছে, তাঁরা কী খাবেন, কখনো খেয়াল করিনি।
হই-হুল্লোড় করে ঈদ উদ্যাপন এখন আর হয় না। অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর মধ্যেই এখন ঈদের আনন্দ খুঁজে পাই। আমার ছেলেমেয়েরা দেশের বাইরে থাকে। বাসায় আমি, আমার স্বামী আর দুজন সাহায্যকারী থাকি।নিজেদের জন্য ঈদের কেনাকাটা, রান্নাবান্না তেমন একটা হয় না। কিন্তু আমার সঙ্গে দুজন সাহায্যকারী থাকেন এবং আমাদের আবাসনে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আরও আটজন মানুষ রয়েছেন—তাঁদের কথা ভেবেই ঈদের দিনে রান্না করি। তাঁদের সবার খাওয়ার ব্যবস্থা করি। আমাদের এলাকার একটি এতিমখানায় ১২২ জন শিশুর জন্য ঈদের কেনাকাটা করি। চেষ্টা করি ওদের সঙ্গে ঈদের আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেওয়ার।
আমি মনে করি, সবার মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়াই হলো ঈদ উদ্যাপনের সার্থকতা। আমাদের প্রত্যেকের উচিত সাধ্যমতো মানুষের জন্য কিছু করা। আমাদের আশপাশের সবার বাড়িতে ঈদের আনন্দ পৌঁছাল কি না, সেটা দেখা এবং সবার সঙ্গে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি বজায় রাখা প্রয়োজন।
রাশেদা কে চৌধূরী, নির্বাহী পরিচালক, গণসাক্ষরতা অভিযান
অনুলিখন: অর্চি হক
ছোটবেলার ঈদের দিনগুলো মধুরতম ছিল। আমি একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছি। বাবা ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক, আর মা ডাক্তার। তাঁদের দুজনকেই দেখেছি, সবার সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে। আমাদের সময় ঈদে পোশাক-আশাক কেনাকাটার বাড়াবাড়ি ছিল না। একটা জামা পেলেই খুশির সীমা থাকত না আমাদের। সঙ্গে এক জোড়া জুতা পেলে তো কথাই নেই। আর আজকাল দেখি শহর, গ্রাম ও মফস্বল—সব জায়গাতেই ছেলেমেয়েরা কয়েক সেট জামা কাপড়েও সন্তুষ্ট থাকে না।
আমার শৈশব কেটেছে সিলেট আর রাজশাহীতে। দুই জায়গাতেই ঈদে ও চৈত্র-সংক্রান্তিতে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে আনন্দ করতে দেখেছি। আমরা চৈত্রসংক্রান্তিতে ও পয়লা বৈশাখে বন্ধুদের বাড়ি যেতাম, রথযাত্রায় যেতাম। আজকাল বাবা-মায়েরা মেয়েদের একা বাসার বাইরে ছাড়তে ভয় পান। আমাদের সময় এমন ছিল না। আমরা পাড়াময় ঘুরে বেড়াতাম। আমার বোন একবার রথযাত্রায় গিয়ে মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ভিড় কমলে তাঁকে খুঁজে পেয়েছিলাম। আর এখন মেয়েদের সঙ্গে কত ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন এসব ছিল না।
আমাদের ছোটবেলার ঈদে পোশাক-আশাক কেনাকাটার বাড়াবাড়ি না থাকলেও খাবার-দাবারের জম্পেশ আয়োজন হতো। এখনো মনে পড়ে সবাইকে খাইয়ে সবশেষে মা ও ফুফুরা খেতেন। তাঁদের জন্য কী আছে, তাঁরা কী খাবেন, কখনো খেয়াল করিনি।
হই-হুল্লোড় করে ঈদ উদ্যাপন এখন আর হয় না। অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর মধ্যেই এখন ঈদের আনন্দ খুঁজে পাই। আমার ছেলেমেয়েরা দেশের বাইরে থাকে। বাসায় আমি, আমার স্বামী আর দুজন সাহায্যকারী থাকি।নিজেদের জন্য ঈদের কেনাকাটা, রান্নাবান্না তেমন একটা হয় না। কিন্তু আমার সঙ্গে দুজন সাহায্যকারী থাকেন এবং আমাদের আবাসনে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আরও আটজন মানুষ রয়েছেন—তাঁদের কথা ভেবেই ঈদের দিনে রান্না করি। তাঁদের সবার খাওয়ার ব্যবস্থা করি। আমাদের এলাকার একটি এতিমখানায় ১২২ জন শিশুর জন্য ঈদের কেনাকাটা করি। চেষ্টা করি ওদের সঙ্গে ঈদের আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেওয়ার।
আমি মনে করি, সবার মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়াই হলো ঈদ উদ্যাপনের সার্থকতা। আমাদের প্রত্যেকের উচিত সাধ্যমতো মানুষের জন্য কিছু করা। আমাদের আশপাশের সবার বাড়িতে ঈদের আনন্দ পৌঁছাল কি না, সেটা দেখা এবং সবার সঙ্গে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি বজায় রাখা প্রয়োজন।
রাশেদা কে চৌধূরী, নির্বাহী পরিচালক, গণসাক্ষরতা অভিযান
অনুলিখন: অর্চি হক
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪