ঋণ শোধের চাপ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০৮: ১৫

ডলারের মজুত কমছে, আবার সরকারের বৈদেশিক ঋণ শোধের চাপ বাড়ছে। এ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো সরকারকে আসল বাবদ ২ বিলিয়ন ডলার শোধ করতে হবে। আগামী বছর থেকে এ চাপ আরও বাড়বে। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প, টানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বড় বড় প্রায় সব মেগা প্রকল্প উদ্বোধন হয়েছে। অনেক প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে। কোনোটির শেষ হবে। গ্রেস পিরিয়ড শেষ হলেই আসল শোধ করার চাপ আসবে। অন্য সব খাতে ডলারের চাহিদার সঙ্গে বৈদেশিক ঋণ শোধের চাপের কারণে আগামী দিনে ডলার-সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র থেকে জানা যায়, চীনের সঙ্গে ২০১৮ সালে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি হয়। রেল সংযোগ প্রকল্প সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে। আর প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডও গত এপ্রিলে শেষ হয়েছে। এ প্রকল্প ঋণের আসল এ অর্থবছরেই শোধ শুরু করতে হবে। পরবর্তী ১৫ বছরে এই ঋণ শোধ দেওয়ার কথা।

সরকারের আরেক মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণকি বিদ্যুৎ প্রকল্পটির ঋণ শোধও ২০২৭ সাল থেকে শুরু হবে। এ প্রকল্পের জন্য ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়েছে সরকার। ২০ বছর মেয়াদের এ ঋণের জন্য প্রতিবছর ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি আসল পরিশোধ করতে হবে। প্রায় একই সময় থেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে। তখন বার্ষিক আসল পরিশোধ ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে আসল পরিশোধ অনেক বেড়ে যাবে।

শুধু প্রকল্প ঋণ নয়; করোনা-পরবর্তী সময়ে সরকার তহবিল সংকটের কারণে এবং কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আয় না হওয়ায় বাজেট সহায়তা হিসেবে বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা নিয়েছে। এর মধ্যে কিছু বাজেট সহায়তা ঋণের গ্রেস পিরিয়ড তিন বছর; ঋণ পরিশোধের সময় ১২ বছর।

তিমধ্যে এ রকম কিছু বাজেট সহায়তা ঋণের গ্রেস পিরিয়ডও শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) ২৫০ মিলিয়ন ডলার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা। এ দুটি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে গত মে মাসে। আর আগামী জুনে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের আরও একটি বাজেট সহায়তার গ্রেস পিরিয়ড শেষ হচ্ছে।

সব মিলিয়ে দিন যতই যাচ্ছে, ডলারে বৈদেশিক ঋণ শোধের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ আর রপ্তানি না বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ানো কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এরই মধ্যে রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের ঘরে চলে এসেছে। রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বাড়ানোর ফলে গত মাস থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে।

তবে রপ্তানি খাতে এখন অস্থিরতা চলছে। এ অস্থিরতা কখন শেষ হবে, তা বলা মুশকিল। কারণ, ঘোষিত বেতনকাঠামো প্রত্যাখ্যান করেছেন শ্রমিকেরা। এখন নিরাপত্তার কারণে উদ্যোক্তা পোশাক কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এভাবে বন্ধ থাকলে আর উৎপাদন ব্যাহত হলে তা রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা রপ্তানি আয়ের ওপরও প্রভাব ফেলবে বলে অর্থনীতিবিদ-বিশ্লেষকদের ধারণা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের ভিন্ন বক্তব্যের পরও সালমা হত্যায় নিজ ভাষ্য়ে অনড় র‍্যাব

ফারুকীরা কীভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসে: সারজিস আলম

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য ডাক্তারের তদবিরের ঘোষণা

এই সরকারের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ কি আছে, অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশ্ন

বাংলাদেশ সিরিজের আগে ধাক্কা খেয়েই চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত