Ajker Patrika

ভুটানের পাথরে স্লট চার্জ সংকটে বাংলাবান্ধা

ফাহিম হাসান, পঞ্চগড়
বাংলাবান্ধায় আগে দিনে ৩০০-৩৫০টি পাথরবাহী ট্রাক এলেও এখন ৭০-৮০টিতে নেমে এসেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাবান্ধায় আগে দিনে ৩০০-৩৫০টি পাথরবাহী ট্রাক এলেও এখন ৭০-৮০টিতে নেমে এসেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, যা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান—চারটি দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একমাত্র স্থলবন্দর; বর্তমানে সংকটে রয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৯১ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও এখন আমদানি অর্ধেক কমে গেছে, যার কারণ ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ হওয়া।

এ সমস্যা শুরু হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের নতুন নিয়মের কারণে, যেখানে ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাকের জন্য বাধ্যতামূলক স্লট বুকিং চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাবান্ধা বন্দরে কার্যত স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ ছাড়া রাজস্ব কমেছে এবং শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছেন।

একসময় বাংলাবান্ধা বন্দর বহুজাতিক পণ্য আমদানি-রপ্তানির কেন্দ্র ছিল, তবে বর্তমানে এটি মূলত পাথর আমদানিনির্ভর বন্দর হয়ে উঠেছে। বিশেষত ভুটানের পাথর ভালো গুণমানের হওয়ায় এবং রাষ্ট্রীয় শুল্ক সুবিধা থাকায় ব্যবসায়ীরা মূলত ভুটানের পাথর আমদানিতে আগ্রহী। ভারতের তুলনায় কম খরচে পাথর পাওয়া যায়, যা দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও ভুটানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের কারণ হয়েছে।

২০২৩ সালে ভারতের ফুলবাড়ী বন্দরের ট্রাকচালক ও ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের পর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার প্রথমে ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাকের জন্য ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা স্লট বুকিং চার্জ আরোপের চেষ্টা করেছিল, যা তখন কার্যকর হয়নি। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একই দাবি পুনরায় উঠলে রাজ্য সরকার নতুন করে স্লট বুকিং চার্জ আরোপ করে, ফলে ৪ জানুয়ারি থেকে ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

ভারত ১২ জানুয়ারি থেকে পাথর রপ্তানি শুরু করলেও প্রতি টনে ৩-৪ ডলার বেশি দাম নিচ্ছে। কিছু ব্যবসায়ী বাধ্য হয়ে ভারতীয় পাথর আমদানি করলেও বেশির ভাগ তা বন্ধ রেখেছেন। বাংলাবান্ধায় আগে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০টি পাথরবাহী ট্রাক এলেও এখন তা কমে ৭০-৮০টিতে নেমে এসেছে। ফলে বন্দর কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

বাংলাবান্ধা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আকতারুল ইসলাম বলেন, ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় পাঁচ শর বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। পাথরভাঙার শ্রমিকেরাও কাজ হারিয়েছেন। বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের ব্যবসায়ীদের আলোচনায় বসে এর দ্রুত সমাধান করা দরকার।

বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জানান, ভুটান ও ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে ভুটান থেকে পাথর আসছে না। এতে বন্দরে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত