নতুন করে আরও একটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে সরকার। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বালিয়ারপুর হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। 

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান। আজ বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাজেট উত্থাপন শুরু করেন। দুপুরে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

রাজধানী ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আংশিক চালু হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ের তেজগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশ গত বছর ২ সেপ্টেম্বর চালু হয়। এ বছরে মধ্যে বাকি অংশ চালুর কথা। এবারের বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী আরও ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ের তৈরির পরিকল্পনার কথা বলেন। 

বাজেট বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ব্যবস্থার আওতায় ঢাকা-জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর প্রবেশ-নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বালিয়ারপুর হতে নিমতলী-কেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ 

রেল যোগাযোগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশে ৯৪৭ দশমিক ৯৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৩৪০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ৩৯১ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন বা পুনর্নির্মাণ, ১৪৮টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ২৩৮টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন বা পুনর্নির্মাণ, ১ হাজার ৬২টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন বা পুনর্নির্মাণ, ১৩৭টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং চিলাহাটি এক্সপ্রেসসহ নতুন ১৪৪টি ট্রেন চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ রেলওয়ের মাস্টারপ্ল্যান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক ও দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪ অনুযায়ী বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’ 

মন্ত্রী আরও জানান, খুলনা হতে মোংলা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলওয়ে লাইন নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে বিদ্যমান বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় পদ্মা সেতুর রেল সংযোগের সঙ্গে মোংলা সমুদ্রবন্দরের সংযোগ স্থাপন হবে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও মোংলা সমুদ্রবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। 

• আরও ১২ এক্সপ্রেসওয়ে ও ১০টি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা 

তিনি জানান, এ ছাড়া, আখাউড়া হতে লাকসাম সেকশনে ৭২ কিলোমিটার দ্বৈত লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যে, ঢাকা হতে কক্সবাজার নতুন রেল যোগাযোগ চালু হওয়ায় ওই সেকশনটি ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ে এবং উপ-আঞ্চলিক করিডরের একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। 

উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরে নতুন ২০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রো লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ যুক্ত হবে এবং পুনর্বাসনকৃত ১০০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ রেল পরিবহনে সংযোজন করা হবে। আশা করা হচ্ছে এর ফলে যাত্রীসেবার মান, মালামাল পরিবহন সক্ষমতা, রেলওয়ের পরিচালন দক্ষতা এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।