সবজির কমলেও বেড়েছে সয়াবিন ও পেঁয়াজের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২১, ২২: ১৩

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে রাাজধানীর বাজারগুলোতে বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। বেড়েছে পাম সুপার তেলের দামও। পাশাপাশি আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। আর বাজারে চাল, আটা ও সবজির দাম আগের মতোই রয়েছে। তবে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বেড়েছে পাঁচ টাকা। আর খোলা সয়াবিন ও পাম সুপারের দাম কেজিতে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে এক লিটারের যে বোতল পাওয়া যাচ্ছে এর গায়ে ১৩৯ টাকা লেখা রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ী এই সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন ১৪৫ টাকায়।

মিরপুর এক নম্বর বাজারের ব্যবসায়ী আজমল মিয়া বলেন, সয়াবিন তেলের বাজার বাড়তি। বোতলের গায়ে লেখা যাই থাকুক এক লিটার ১৪৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

কল্যাণপুর নতুন বাজারের বিক্রেতা দিদার হোসেন বলেন, সয়াবিন তেলের দাম নতুন করে বেড়েছে তবে এখনও এক লিটার বোতল ১৪০ টাকা বিক্রি করছি। খোলা সয়াবিন তেলের দামও কেজিতে চার টাকা বেড়েছে বলে জানান তিনি।

খোলা সয়াবিনের দাম বাড়ার তথ্য মিলেছে অন্য বাজারগুলোতেও। দু'দিন আগে ১৩০-১৩২ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া খোলা সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৩৬ টাকায়। এর সঙ্গে বেড়েছে পাম সুপারের দাম। ১২০-১২২ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পাম সুপারের দাম বেড়ে ১২৫-১২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ৩০ টাকায় নেমেছিল। পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বাড়ছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশের বেশি। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে সাত শতাংশের বেশি। তবে মোটা চালের দাম না কমলেও চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম অতি সামান্য পরিমাণ কমেছে। গত সপ্তাহের ৫৮ টাকা কেজি চাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা। আদা ও চাল ছাড়াও দাম কমার তালিকায় রয়েছে ছোলা, আলু ও ময়দা। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকা।

তবে এই সপ্তাহে কমেছে আদার দাম। আমদানি ও দেশী দুই ধরনের আদার দামই কমেছে।

টিসিবির হিসাব বলছে, গত এক সপ্তাহে আদার দাম কমেছে সাড়ে ১২ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি প্রতি কেজি আদার দাম কমেছে ১০-২০ টাকার মতো। অর্থাৎ ১০০-১৪০ টাকা কেজি আদা এখন ৯০-১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আর ৮০ টাকা কেজি আমদানি আদা পাওয়া যাচ্ছে ৭০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কমেছে। সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে নতুন আসা ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। রোজার শুরুতে ১০০ টাকায় উঠে যাওয়া বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। তবে রোজার শুরুতে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়া শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা এবং রোজার শুরুতে ছিল ৮০ টাকা। পটলের কেজি ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। গত শুক্রবার ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। ৬০-৮০ টাকা বিক্রি হওয়া ঝিঙের দাম কমে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর লাউয়ের পিস আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নতুন আসা কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। কাঁকরোলের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি। প্রতিকেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগি আগের মতো ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৭০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা। এসব বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংস, মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা,গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়। এসব বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩০০ টাকায়, মাগুর মাছ ৬০০ টাকা, প্রতি এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, মৃগেল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা, পাবদা মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, সিলভার কাপ ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, কাঁচকি ও মলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, আইড় মাছ ৫০০, রূপচাঁদা মাছ কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত