রোকন উদ্দীন, ঢাকা

শীতের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলেই মনের কোণে উষ্ণতার খোঁজ শুরু হয়। এ সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নানা অনুষ্ঠানের সাজে। ক্লাবের জমায়েত, সামাজিক মেলবন্ধন বা পারিবারিক আয়োজন—সবই যেন শীতের নিজস্ব রং। তার মাঝে অফিসের দৈনন্দিনতা তো রয়েছেই। ফ্যাশনসচেতন ব্যক্তিরা এ সময় বেছে নেন এমন পোশাক, যা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারে। অফিসের গাম্ভীর্য ধরে রাখে, আবার অনুষ্ঠানের উচ্ছ্বাসেও মানায়। ঠিক তেমনই একটি সমাধান হলো হাল আমলের স্যুট-ব্লেজার। উষ্ণতা, ফ্যাশন আর রুচিশীলতা—সব একসঙ্গে বুনে রাখা এই পোশাক শীতের আদর্শ সঙ্গী।
একসময় স্যুট মানেই ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। সেই স্যুট আজ বদলে নিয়েছে নিজের রূপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি এখন সর্বজনীন। শহরের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে গ্রামেও। বদলেছে এর ব্যবহার। আজকাল কেউ লুঙ্গির সঙ্গে ব্লেজার জড়িয়ে বাজারে যান, কেউবা পাড়ার আড্ডায়। আর এই পোশাক শুধু কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গের জন্য নয়। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান স্বচ্ছন্দে পরছেন স্যুট-ব্লেজার। ঘরের ভেতর থেকে রাস্তাঘাট—সবখানেই এখন এর উপস্থিতি। স্যুট শুধু আভিজাত্যের নয়, এটি হয়ে উঠেছে সবার।
ছোট থেকে বড়—সবাই এখন কোট-ব্লেজারের প্রতি আকৃষ্ট। শিশু, তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ কিংবা বৃদ্ধ—সব বয়সেই এই পোশাকের জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে সরকারি অফিস বা করপোরেট দুনিয়ায় এটি যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীতকাল তো বটেই, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে গরমের দিনেও অনেকে এই পোশাক পরেন। এভাবেই কোট-ব্লেজারের বাজার ছোট গণ্ডি পেরিয়ে বিশাল পরিসরে পৌঁছে গেছে। বিন্দু থেকে সিন্ধুতে রূপ নিয়েছে এর গ্রহণযোগ্যতা।
কোট-ব্লেজারের জগতে দেশে তৈরি হয়েছে এক বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে এ খাতে গড়ে উঠেছে ২ হাজার প্রতিষ্ঠান। কর্মসংস্থান পেয়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষ। বেড়েছে দক্ষ কারিগরের সংখ্যা। তাঁদের নিপুণ হাতে এসেছে হালফ্যাশনের নতুন নতুন ডিজাইন। উৎপাদন বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ বাজারের আয় এখন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। কোট-ব্লেজার যেন কেবল পোশাক নয়, এক সফল গল্পের নাম।
যেভাবে সর্বজনীন হলো ব্লেজার
একসময় ব্লেজার ছিল দরজির হাতে তৈরি আভিজাত্যের পোশাক। পছন্দমতো কাপড় আর শরীরের মাপ দিয়ে বানানো হতো কমপ্লিট স্যুট। অফিস পার্টি বা সামাজিক অনুষ্ঠানে এটি ছিল সম্মান আর রুচির প্রতীক। তখন এটি ছিল শুধু উচ্চবিত্তের নাগালে।
কিন্তু সময় বদলেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, রুচিরও পরিবর্তন ঘটেছে। তা ছাড়া এর রেডিমেড মার্কেট গড়ে ওঠায় এবং তা সহজলভ্য হয়ে ওঠার কারণে এখন ব্লেজার হয়ে উঠেছে সবার পোশাক। শীত বা গ্রীষ্ম—সব ঋতুতেই এটি মানায়। বিয়েতে শেরওয়ানির জায়গায় স্যুটের ব্যবহার বাড়ছে। এখন শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বাড়ছে এর চাহিদা। উদ্যোক্তারা শুরু করেছেন রপ্তানি। এভাবেই ব্লেজার সীমানা পেরিয়ে হয়ে উঠেছে সর্বজনীন।

আদি কারিগরেরা অস্তিত্বের সংকটে
রেডিমেড পোশাকের সহজলভ্যতা আর বৈচিত্র্য দরজি সম্প্রদায়কে আজ সংকটে ফেলেছে। একসময় পছন্দের কাপড়, নিখুঁত মাপ আর ব্যক্তিগত চাহিদার জন্য দরজিদের দ্বারস্থ হতেন ক্রেতারা। এখন সময়স্বল্পতা আর রেডিমেডের আকর্ষণীয় ডিজাইন তাঁদের সেই অভ্যাস বদলে দিয়েছে। শপিং মল, ব্র্যান্ড স্টোর আর অনলাইনে বিভিন্ন মান ও দামের স্যুট-ব্লেজার সহজে পাওয়া যায়। মাপ দেওয়ার ঝামেলা বা অপেক্ষার ধৈর্য এখন আর অনেকের নেই। ক্রেতারা দামের দিকে বেশি ঝুঁকছেন, মানের সঙ্গে আপস করতে রাজি। ফলে টেইলার্স ও ফ্যাব্রিকসের দোকানগুলো টিকে থাকার লড়াই করছে। অথচ দরজিদের তৈরি পোশাক এখনো মানসম্মত। কিন্তু সময় আর খরচের কারণে তাঁদের আয় কমে যাচ্ছে। রেডিমেডের দাপটে দেশের আদি কারিগরেরা যেন হারিয়ে যেতে বসেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বি এম হারুন অর রশিদ বলেন, শৌখিন ও রুচিশীল কিছু মানুষ এখনো আছেন, যাঁরা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী কোট-ব্লেজার পরতে চান। তাঁদের জন্যই মূলত আমাদের ব্যবসা টিকে আছে, অন্যথায় ব্লেজার তৈরির ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যেত। তবে করোনার পর থেকে আমাদের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে, অনেকের ব্যবসা ৫০-৭০ শতাংশ কমে গেছে। একসময় শীত এলে ডিসেম্বরে কারিগরেরা বিশ্রামের সময় পেতেন না, কিন্তু এখন অনেক সময় কারিগরদের বসে থাকতে হয়; কারণ, কাজের পরিমাণ অনেক কমে গেছে।
অর্থ ও সময় সাশ্রয় রেডিমেডেই
দরজির বাজারে মন্দা থাকলেও রেডিমেড ব্লেজারের বাজার এখন বেশ জমজমাট। আগে মধ্যবয়সীদের মধ্যে ব্লেজারের চাহিদা বেশি ছিল। এখন তরুণেরাও এতে আকৃষ্ট হচ্ছে। রেডিমেড বাজার এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রেখেছে। ব্র্যান্ডের পাশাপাশি স্থানীয় কারখানাগুলোও ব্লেজার তৈরি করছে। কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব কারখানা। এই ব্লেজারের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাব্রিকসের বাজার গড়ে উঠেছে রাজধানীর ইসলামপুরে। বিদেশি ফ্যাব্রিকসের মানে না পৌঁছালেও দেশের চাহিদা অনেকটাই মেটাচ্ছে। দাম ও আকর্ষণীয় ডিজাইন রেডিমেড ব্লেজারের চাহিদা বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন বিক্রেতারা।
ক্যাটস আইয়ের এলিফ্যান্ট রোড শাখার ব্যবস্থাপক সম্রাট জানিয়েছেন, রুচির পরিবর্তনের পাশাপাশি মানুষ এখন অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। এ জন্য দরজির দোকানে অর্ডার দেওয়ার চেয়ে রেডিমেড ব্লেজার কেনাই বেশি সুবিধাজনক মনে করেন ক্রেতারা। তিনি আরও জানান, দরজির দোকানে ব্লেজার বানাতে যেখানে ৭-১০ হাজার টাকা লাগে, সেখানে একই টাকায় ব্র্যান্ড দোকান থেকে আকর্ষণীয় ডিজাইনের কমপ্লিট স্যুট বা ব্লেজার কিনতে পারছেন তাঁরা। এতে শুধু অর্থ নয়, সময়ও সাশ্রয় হচ্ছে। এসব কারণে ক্রেতারা রেডিমেড ব্লেজারের প্রতি ঝুঁকছেন।
কোথায় কেমন মজুরি
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও টেইলার্সের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্লেজারের দাম মূলত ফ্যাব্রিকসের মান ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে। এ ছাড়া আইডিয়াল, টপ টেন, রেমন্ড, ব্যালমন্ড, সানমুন, ফিট এলিগেন্সসহ প্রথম সারির প্রায় সব টেইলার্সের মজুরি প্রায় সমান ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে।
মোস্তফা টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মোস্তফিজার রহমান জানান, ভালো ফ্যাব্রিকস দিয়ে প্যান্ট ও ব্লেজারের কমপ্লিট সেট তৈরিতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাগে, তবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে এই ধরনের কাস্টমার কম। বেশির ভাগ ক্রেতার বাজেট ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, এর মধ্যে ভালো মানের ব্লেজার তৈরি করা সম্ভব।
ফ্যাব্রিকসের দাম যেমন
দরজির দোকানের কর্মকর্তারা জানান, কমপ্লিট ব্লেজার সেট তৈরিতে সোয়া চার গজ থেকে সাড়ে চার গজ কাপড় লাগে, যার মধ্যে তিন গজ ব্লেজারেই ব্যবহৃত হয়। বাজারে দেশীয় ও বিদেশি ফ্যাব্রিকস; যেমন থাই, ইতালি, চায়না ও ভারতীয় ফ্যাব্রিকস পাওয়া যায়, যার দাম ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা গজ। এভাবে ব্লেজার তৈরিতে খরচ ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।
রেডিমেডে খরচ আরও কম
রেডিমেড ব্লেজার কম খরচে পাওয়া যায়। ক্যাটস আইয়ের মতো ব্র্যান্ড দোকান থেকে ব্লেজার ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় পাওয়া যায়, এবং কমপ্লিট স্যুট ৯ থেকে ১২ হাজার টাকায়। সুপারমার্কেট বা বিপণিবিতানে এসব ব্লেজার ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতারা ক্রেতাদের জন্য ব্লেজারের হাতা বা লম্বা ছোট করে দেন এবং ব্র্যান্ড দোকানগুলো আজীবন রিপেয়ার সুবিধা দেয়।
আছে কম দামের ব্লেজারও
নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যও ব্লেজার রয়েছে বাজারে। এর দাম আরও কম, যা পাওয়া যাচ্ছে ফুটপাতেও। গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টের পাশে ফুটপাতে, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, ফার্মগেটের পাশ ঘেঁষে ফুটপাতসহ বিভিন্ন এলাকার মার্কেটগুলোতে বসেছে অস্থায়ী কোট-ব্লেজারের দোকান। সকাল থেকে শুরু হয় হাঁকডাক। বেলা গড়ানোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বেচাকেনা। সন্ধ্যায় ভিড় জমে বেশি। নিম্ন আয়ের থেকে মধ্যবিত্তরাও ভিড় জমায় এখানে।
মানভেদে এসব ব্লেজার সর্বনিম্ন ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, যা কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার বড় কারখানাগুলোতে তৈরি হয়।
নভেম্বরে অর্ডার, ডিসেম্বরে ডেলিভারি
বাংলাদেশ ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ২ হাজারের বেশি টেইলার্স ব্লেজার তৈরি করেন, যার সিংহভাগই রাজধানীতে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে অর্ডার বেশি আসে এবং জানুয়ারিতে শেষ সময়ের বিক্রি হয়। এই সময় ব্লেজারের দাম ২০-৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টে পাওয়া যায়, বিশেষ করে সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয় স্টকের অবশিষ্ট ব্লেজার। বিক্রেতারা জানান, মূল্যস্ফীতির কারণে বিক্রি কম হবে বলে ধারণা ছিল, তবে আশা অনুযায়ী বিক্রি খারাপ হয়নি এবং জানুয়ারির শুরুতে অনেকের স্টক শেষ হয়ে গেছে।
বাড়ছে রপ্তানির বাজার
দেশের কোট-ব্লেজারের চাহিদা এখন রপ্তানির বাজারেও বাড়ছে। পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা মনে করছেন, এটি পণ্যের বহুমুখীকরণের বড় হাতিয়ার হতে পারে। গত পাঁচ থেকে সাত বছরে কোট-ব্লেজার তৈরির জন্য আলাদা কারখানা গড়ে উঠেছে এবং এখন পাঁচ থেকে সাতটি প্রতিষ্ঠান শুধু ব্লেজার তৈরি ও রপ্তানি করছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিগ বস। এ ছাড়া এফসিআই ও সায়হামের মতো কোম্পানিগুলোর রপ্তানির পুরোটাই ব্লেজার। এনার্জি প্যাক, অনন্তসহ আরও কিছু কারখানাও অন্য পণ্যের পাশাপাশি ব্লেজার রপ্তানি করছে। রপ্তানিকারকদের হিসাবে এখন কমবেশি ১০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণে ব্লেজার রপ্তানি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিগবস করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ রেজা উল হোসেন কাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোট-ব্লেজারের বাজার সিজনাল ও স্পর্শকাতর হওয়ায় অনেকে অন্য পণ্যের সঙ্গে ব্লেজার তৈরি করে রপ্তানি করেন। সাত বছর আগে এই বাজার তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম ও বিনিয়োগ করতে হয়েছে; কারণ, ব্লেজার তৈরি করা সহজ নয় এবং বিশ্বস্ত বেয়ারাও পাওয়া যায় না। এ জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে উৎপাদন শুরু করতে হয়েছে এবং এখনো টপ ম্যানেজমেন্টে বিদেশি কর্মকর্তারা রয়েছেন। এসব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হচ্ছে।

শীতের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলেই মনের কোণে উষ্ণতার খোঁজ শুরু হয়। এ সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নানা অনুষ্ঠানের সাজে। ক্লাবের জমায়েত, সামাজিক মেলবন্ধন বা পারিবারিক আয়োজন—সবই যেন শীতের নিজস্ব রং। তার মাঝে অফিসের দৈনন্দিনতা তো রয়েছেই। ফ্যাশনসচেতন ব্যক্তিরা এ সময় বেছে নেন এমন পোশাক, যা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারে। অফিসের গাম্ভীর্য ধরে রাখে, আবার অনুষ্ঠানের উচ্ছ্বাসেও মানায়। ঠিক তেমনই একটি সমাধান হলো হাল আমলের স্যুট-ব্লেজার। উষ্ণতা, ফ্যাশন আর রুচিশীলতা—সব একসঙ্গে বুনে রাখা এই পোশাক শীতের আদর্শ সঙ্গী।
একসময় স্যুট মানেই ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। সেই স্যুট আজ বদলে নিয়েছে নিজের রূপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি এখন সর্বজনীন। শহরের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে গ্রামেও। বদলেছে এর ব্যবহার। আজকাল কেউ লুঙ্গির সঙ্গে ব্লেজার জড়িয়ে বাজারে যান, কেউবা পাড়ার আড্ডায়। আর এই পোশাক শুধু কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গের জন্য নয়। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান স্বচ্ছন্দে পরছেন স্যুট-ব্লেজার। ঘরের ভেতর থেকে রাস্তাঘাট—সবখানেই এখন এর উপস্থিতি। স্যুট শুধু আভিজাত্যের নয়, এটি হয়ে উঠেছে সবার।
ছোট থেকে বড়—সবাই এখন কোট-ব্লেজারের প্রতি আকৃষ্ট। শিশু, তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ কিংবা বৃদ্ধ—সব বয়সেই এই পোশাকের জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে সরকারি অফিস বা করপোরেট দুনিয়ায় এটি যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীতকাল তো বটেই, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে গরমের দিনেও অনেকে এই পোশাক পরেন। এভাবেই কোট-ব্লেজারের বাজার ছোট গণ্ডি পেরিয়ে বিশাল পরিসরে পৌঁছে গেছে। বিন্দু থেকে সিন্ধুতে রূপ নিয়েছে এর গ্রহণযোগ্যতা।
কোট-ব্লেজারের জগতে দেশে তৈরি হয়েছে এক বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে এ খাতে গড়ে উঠেছে ২ হাজার প্রতিষ্ঠান। কর্মসংস্থান পেয়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষ। বেড়েছে দক্ষ কারিগরের সংখ্যা। তাঁদের নিপুণ হাতে এসেছে হালফ্যাশনের নতুন নতুন ডিজাইন। উৎপাদন বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ বাজারের আয় এখন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। কোট-ব্লেজার যেন কেবল পোশাক নয়, এক সফল গল্পের নাম।
যেভাবে সর্বজনীন হলো ব্লেজার
একসময় ব্লেজার ছিল দরজির হাতে তৈরি আভিজাত্যের পোশাক। পছন্দমতো কাপড় আর শরীরের মাপ দিয়ে বানানো হতো কমপ্লিট স্যুট। অফিস পার্টি বা সামাজিক অনুষ্ঠানে এটি ছিল সম্মান আর রুচির প্রতীক। তখন এটি ছিল শুধু উচ্চবিত্তের নাগালে।
কিন্তু সময় বদলেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, রুচিরও পরিবর্তন ঘটেছে। তা ছাড়া এর রেডিমেড মার্কেট গড়ে ওঠায় এবং তা সহজলভ্য হয়ে ওঠার কারণে এখন ব্লেজার হয়ে উঠেছে সবার পোশাক। শীত বা গ্রীষ্ম—সব ঋতুতেই এটি মানায়। বিয়েতে শেরওয়ানির জায়গায় স্যুটের ব্যবহার বাড়ছে। এখন শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বাড়ছে এর চাহিদা। উদ্যোক্তারা শুরু করেছেন রপ্তানি। এভাবেই ব্লেজার সীমানা পেরিয়ে হয়ে উঠেছে সর্বজনীন।

আদি কারিগরেরা অস্তিত্বের সংকটে
রেডিমেড পোশাকের সহজলভ্যতা আর বৈচিত্র্য দরজি সম্প্রদায়কে আজ সংকটে ফেলেছে। একসময় পছন্দের কাপড়, নিখুঁত মাপ আর ব্যক্তিগত চাহিদার জন্য দরজিদের দ্বারস্থ হতেন ক্রেতারা। এখন সময়স্বল্পতা আর রেডিমেডের আকর্ষণীয় ডিজাইন তাঁদের সেই অভ্যাস বদলে দিয়েছে। শপিং মল, ব্র্যান্ড স্টোর আর অনলাইনে বিভিন্ন মান ও দামের স্যুট-ব্লেজার সহজে পাওয়া যায়। মাপ দেওয়ার ঝামেলা বা অপেক্ষার ধৈর্য এখন আর অনেকের নেই। ক্রেতারা দামের দিকে বেশি ঝুঁকছেন, মানের সঙ্গে আপস করতে রাজি। ফলে টেইলার্স ও ফ্যাব্রিকসের দোকানগুলো টিকে থাকার লড়াই করছে। অথচ দরজিদের তৈরি পোশাক এখনো মানসম্মত। কিন্তু সময় আর খরচের কারণে তাঁদের আয় কমে যাচ্ছে। রেডিমেডের দাপটে দেশের আদি কারিগরেরা যেন হারিয়ে যেতে বসেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বি এম হারুন অর রশিদ বলেন, শৌখিন ও রুচিশীল কিছু মানুষ এখনো আছেন, যাঁরা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী কোট-ব্লেজার পরতে চান। তাঁদের জন্যই মূলত আমাদের ব্যবসা টিকে আছে, অন্যথায় ব্লেজার তৈরির ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যেত। তবে করোনার পর থেকে আমাদের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে, অনেকের ব্যবসা ৫০-৭০ শতাংশ কমে গেছে। একসময় শীত এলে ডিসেম্বরে কারিগরেরা বিশ্রামের সময় পেতেন না, কিন্তু এখন অনেক সময় কারিগরদের বসে থাকতে হয়; কারণ, কাজের পরিমাণ অনেক কমে গেছে।
অর্থ ও সময় সাশ্রয় রেডিমেডেই
দরজির বাজারে মন্দা থাকলেও রেডিমেড ব্লেজারের বাজার এখন বেশ জমজমাট। আগে মধ্যবয়সীদের মধ্যে ব্লেজারের চাহিদা বেশি ছিল। এখন তরুণেরাও এতে আকৃষ্ট হচ্ছে। রেডিমেড বাজার এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রেখেছে। ব্র্যান্ডের পাশাপাশি স্থানীয় কারখানাগুলোও ব্লেজার তৈরি করছে। কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব কারখানা। এই ব্লেজারের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাব্রিকসের বাজার গড়ে উঠেছে রাজধানীর ইসলামপুরে। বিদেশি ফ্যাব্রিকসের মানে না পৌঁছালেও দেশের চাহিদা অনেকটাই মেটাচ্ছে। দাম ও আকর্ষণীয় ডিজাইন রেডিমেড ব্লেজারের চাহিদা বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন বিক্রেতারা।
ক্যাটস আইয়ের এলিফ্যান্ট রোড শাখার ব্যবস্থাপক সম্রাট জানিয়েছেন, রুচির পরিবর্তনের পাশাপাশি মানুষ এখন অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। এ জন্য দরজির দোকানে অর্ডার দেওয়ার চেয়ে রেডিমেড ব্লেজার কেনাই বেশি সুবিধাজনক মনে করেন ক্রেতারা। তিনি আরও জানান, দরজির দোকানে ব্লেজার বানাতে যেখানে ৭-১০ হাজার টাকা লাগে, সেখানে একই টাকায় ব্র্যান্ড দোকান থেকে আকর্ষণীয় ডিজাইনের কমপ্লিট স্যুট বা ব্লেজার কিনতে পারছেন তাঁরা। এতে শুধু অর্থ নয়, সময়ও সাশ্রয় হচ্ছে। এসব কারণে ক্রেতারা রেডিমেড ব্লেজারের প্রতি ঝুঁকছেন।
কোথায় কেমন মজুরি
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও টেইলার্সের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্লেজারের দাম মূলত ফ্যাব্রিকসের মান ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে। এ ছাড়া আইডিয়াল, টপ টেন, রেমন্ড, ব্যালমন্ড, সানমুন, ফিট এলিগেন্সসহ প্রথম সারির প্রায় সব টেইলার্সের মজুরি প্রায় সমান ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে।
মোস্তফা টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মোস্তফিজার রহমান জানান, ভালো ফ্যাব্রিকস দিয়ে প্যান্ট ও ব্লেজারের কমপ্লিট সেট তৈরিতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাগে, তবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে এই ধরনের কাস্টমার কম। বেশির ভাগ ক্রেতার বাজেট ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, এর মধ্যে ভালো মানের ব্লেজার তৈরি করা সম্ভব।
ফ্যাব্রিকসের দাম যেমন
দরজির দোকানের কর্মকর্তারা জানান, কমপ্লিট ব্লেজার সেট তৈরিতে সোয়া চার গজ থেকে সাড়ে চার গজ কাপড় লাগে, যার মধ্যে তিন গজ ব্লেজারেই ব্যবহৃত হয়। বাজারে দেশীয় ও বিদেশি ফ্যাব্রিকস; যেমন থাই, ইতালি, চায়না ও ভারতীয় ফ্যাব্রিকস পাওয়া যায়, যার দাম ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা গজ। এভাবে ব্লেজার তৈরিতে খরচ ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।
রেডিমেডে খরচ আরও কম
রেডিমেড ব্লেজার কম খরচে পাওয়া যায়। ক্যাটস আইয়ের মতো ব্র্যান্ড দোকান থেকে ব্লেজার ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় পাওয়া যায়, এবং কমপ্লিট স্যুট ৯ থেকে ১২ হাজার টাকায়। সুপারমার্কেট বা বিপণিবিতানে এসব ব্লেজার ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতারা ক্রেতাদের জন্য ব্লেজারের হাতা বা লম্বা ছোট করে দেন এবং ব্র্যান্ড দোকানগুলো আজীবন রিপেয়ার সুবিধা দেয়।
আছে কম দামের ব্লেজারও
নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যও ব্লেজার রয়েছে বাজারে। এর দাম আরও কম, যা পাওয়া যাচ্ছে ফুটপাতেও। গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টের পাশে ফুটপাতে, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, ফার্মগেটের পাশ ঘেঁষে ফুটপাতসহ বিভিন্ন এলাকার মার্কেটগুলোতে বসেছে অস্থায়ী কোট-ব্লেজারের দোকান। সকাল থেকে শুরু হয় হাঁকডাক। বেলা গড়ানোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বেচাকেনা। সন্ধ্যায় ভিড় জমে বেশি। নিম্ন আয়ের থেকে মধ্যবিত্তরাও ভিড় জমায় এখানে।
মানভেদে এসব ব্লেজার সর্বনিম্ন ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, যা কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার বড় কারখানাগুলোতে তৈরি হয়।
নভেম্বরে অর্ডার, ডিসেম্বরে ডেলিভারি
বাংলাদেশ ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ২ হাজারের বেশি টেইলার্স ব্লেজার তৈরি করেন, যার সিংহভাগই রাজধানীতে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে অর্ডার বেশি আসে এবং জানুয়ারিতে শেষ সময়ের বিক্রি হয়। এই সময় ব্লেজারের দাম ২০-৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টে পাওয়া যায়, বিশেষ করে সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয় স্টকের অবশিষ্ট ব্লেজার। বিক্রেতারা জানান, মূল্যস্ফীতির কারণে বিক্রি কম হবে বলে ধারণা ছিল, তবে আশা অনুযায়ী বিক্রি খারাপ হয়নি এবং জানুয়ারির শুরুতে অনেকের স্টক শেষ হয়ে গেছে।
বাড়ছে রপ্তানির বাজার
দেশের কোট-ব্লেজারের চাহিদা এখন রপ্তানির বাজারেও বাড়ছে। পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা মনে করছেন, এটি পণ্যের বহুমুখীকরণের বড় হাতিয়ার হতে পারে। গত পাঁচ থেকে সাত বছরে কোট-ব্লেজার তৈরির জন্য আলাদা কারখানা গড়ে উঠেছে এবং এখন পাঁচ থেকে সাতটি প্রতিষ্ঠান শুধু ব্লেজার তৈরি ও রপ্তানি করছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিগ বস। এ ছাড়া এফসিআই ও সায়হামের মতো কোম্পানিগুলোর রপ্তানির পুরোটাই ব্লেজার। এনার্জি প্যাক, অনন্তসহ আরও কিছু কারখানাও অন্য পণ্যের পাশাপাশি ব্লেজার রপ্তানি করছে। রপ্তানিকারকদের হিসাবে এখন কমবেশি ১০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণে ব্লেজার রপ্তানি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিগবস করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ রেজা উল হোসেন কাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোট-ব্লেজারের বাজার সিজনাল ও স্পর্শকাতর হওয়ায় অনেকে অন্য পণ্যের সঙ্গে ব্লেজার তৈরি করে রপ্তানি করেন। সাত বছর আগে এই বাজার তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম ও বিনিয়োগ করতে হয়েছে; কারণ, ব্লেজার তৈরি করা সহজ নয় এবং বিশ্বস্ত বেয়ারাও পাওয়া যায় না। এ জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে উৎপাদন শুরু করতে হয়েছে এবং এখনো টপ ম্যানেজমেন্টে বিদেশি কর্মকর্তারা রয়েছেন। এসব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হচ্ছে।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

শীতের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলেই মনের কোণে উষ্ণতার খোঁজ শুরু হয়। এ সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নানা অনুষ্ঠানের সাজে। ক্লাবের জমায়েত, সামাজিক মেলবন্ধন বা পারিবারিক আয়োজন—সবই যেন শীতের নিজস্ব রং। তার মাঝে অফিসের দৈনন্দিনতা তো রয়েছেই।
১২ জানুয়ারি ২০২৫
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

শীতের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলেই মনের কোণে উষ্ণতার খোঁজ শুরু হয়। এ সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নানা অনুষ্ঠানের সাজে। ক্লাবের জমায়েত, সামাজিক মেলবন্ধন বা পারিবারিক আয়োজন—সবই যেন শীতের নিজস্ব রং। তার মাঝে অফিসের দৈনন্দিনতা তো রয়েছেই।
১২ জানুয়ারি ২০২৫
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

শীতের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলেই মনের কোণে উষ্ণতার খোঁজ শুরু হয়। এ সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নানা অনুষ্ঠানের সাজে। ক্লাবের জমায়েত, সামাজিক মেলবন্ধন বা পারিবারিক আয়োজন—সবই যেন শীতের নিজস্ব রং। তার মাঝে অফিসের দৈনন্দিনতা তো রয়েছেই।
১২ জানুয়ারি ২০২৫
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

শীতের ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলেই মনের কোণে উষ্ণতার খোঁজ শুরু হয়। এ সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নানা অনুষ্ঠানের সাজে। ক্লাবের জমায়েত, সামাজিক মেলবন্ধন বা পারিবারিক আয়োজন—সবই যেন শীতের নিজস্ব রং। তার মাঝে অফিসের দৈনন্দিনতা তো রয়েছেই।
১২ জানুয়ারি ২০২৫
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
৬ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
১১ ঘণ্টা আগে