Ajker Patrika

চলতি অর্থবছরে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আয় কমেছে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১: ৪৫
চলতি অর্থবছরে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আয় কমেছে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দরে চলতি অর্থবছরে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৯৫ টাকা আয় কমেছে। চাহিদা মোতাবেক এলসি করতে না পারা এবং ডলার সংকটে কমেছে পণ্য আমদানিও। পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হওয়ার পর ১৮টি পণ্য আমদানির কথা থাকলেও শুধু পাথর আমদানিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে বন্দরটি।

আমদানিকারকেরা বলছেন, নাকুগাঁও স্থলবন্দরে শুধু পাথর আমদানি কার্যক্রম চলায় নতুন ব্যবসায়ীর দেখা মিলছে না। অন্যদিকে চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের এলসি না পাওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

নাকুগাঁও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে ৫৮ হাজার ৮১৬ টন ভুটানের পাথর, ২ লাখ ৭ হাজার ৯৮৬ টন ভারতের পাথর এবং ৯ হাজার ৩৯৩ টন কয়লা আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। যার মূল্য ৪০ কোটি ৯৯ লাখ ৪ হাজার টাকা। এই অর্থবছরে বন্দর মাশুল, ভ্যাটসহ নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আয় ছিল ৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৭ টাকা। তা ছাড়া কাস্টমসে রাজস্ব জমা পড়ে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

অপরদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৭ হাজার ১৯৩ টন ভুটানের পাথর, ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫৮৫ টন ভারতের পাথর, ১ হাজার ৩৮৭ টন কয়লা এবং ১১ টন আদা আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। যার আনুমানিক মূল্য ২৮ কোটি ৭১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। বন্দর মাশুল, ভ্যাটসহ স্থলবন্দরের আয় ২ কোটি ৬১ লাখ ৬ হাজার ৫২ টাকা এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আদায় করেছে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বন্দরের আয় কমেছে ৭১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৫ টাকা এবং কাস্টমসের রাজস্ব কমেছে ১ কোটি ৬২ লাখ ১ হাজার টাকা। এতে এক বছরে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের মোট আয় কমেছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৯৫ টাকা।

এর আগে প্রায় ৩৩ বছর বন্ধ থাকার পর ১৯৯৭ সালে দেশের উত্তর সীমান্তবর্তী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ বন্দরটি প্রথমে স্থল শুল্ক বন্দর হিসেবে চালু হয়। সে সময় কয়লা আমদানির মধ্য দিয়ে এই বন্দর বেশ চাঙা হয়ে ওঠে। সৃষ্টি হয় কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান।

এ ছাড়া এ বন্দর দিয়ে বাংলা-ভুটান ট্রানজিট রুটসহ ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্যের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে সেই সম্ভাবনা অনেকটা ম্লান হয়ে যায়। পরে এলাকার এমপি ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এটিকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। পরে ২০০৯ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বন্দরটি পরিদর্শন করে এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে চালু করার ঘোষণা দেন।

২০১৫ সালে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের মর্যাদা পায় নাকুগাঁও। সাড়ে ১৩ একর জমির ওপর প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় ওয়্যার হাউস ও কাস্টমস ভবন। যোগাযোগ সহজ করতে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ২৯ কিলোমিটার সড়ক। আমদানির অনুমতি দেওয়া হয় পাথর, কয়লাসহ প্রচলিত ১৯টি পণ্য।

তবে দীর্ঘ আট বছরে বন্দরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের সুবিধা পাচ্ছেন না এখানকার আমদানিকারকেরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু পাথর সরবরাহে আটকে থাকলে অচল হয়ে পড়বে নাকুগাঁও স্থলবন্দর। বন্দরের ওপারেই মেঘালয় রাজ্য থেকে শুঁটকি মাছ, খৈল, সুপারি ও পশুখাদ্য আমদানি শুরুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

নাকুগাঁও স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘ব্যবসা বাড়াতে আমদানির পাশাপাশি চাহিদা মোতাবেক পণ্য রপ্তানি শুরু করতে পারলে এখানকার চিত্র পাল্টে যাবে। তবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও ভারতের কাস্টমস জটিলতায় তা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা ব্যবসায়ীরা চাহিদা মোতাবেক নতুন পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী আছি। আমরা এনবিআরের কাছে বারবার আবেদন করেও অনুমোদিত পণ্য সরবরাহের সুযোগ পাচ্ছি না। সরকারের সহযোগিতা পেলে এই বন্দর দিয়ে আমরা সব ধরনের বৈধ পণ্য আমদানি করতে চাই।’

মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল আরও বলেন, গত অর্থবছরে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও সময়মতো ডলার না পাওয়ায় এলসি করতে না পেরে পণ্য আমদানি সম্ভব হয়নি। তাই এবার বন্দরের আয় কমেছে।

নাকুগাঁও স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৈশ্বিক মন্দাভাব ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ঠিকভাবে এলসি করতে পারেননি। তাই পণ্য কেনার সুযোগ হয়নি। গত অর্থবছরের শেষদিকে জানুয়ারি থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে। তবে অর্থবছরের সার্বিক চিত্র গতবারের চেয়ে খারাপ। আশা করছি, পরবর্তী অর্থবছরে এটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক পার্থ ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের আরও আন্তরিকতা বাড়াতে হবে। নতুন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের যুক্ত করতে পারলে এখানে আরও ব্যবসা বাড়বে। সকল বৈধ পণ্য আমদানি করতে সরকারিভাবে ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০১৭ সালের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার দুর্বল অবস্থানে রয়েছে এবং ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক পতনের পথে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, মূল্যস্ফীতি কমতির দিকে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আগামী বছরও সুদহার কমানোর সুযোগ পাবে, যেখানে অধিকাংশ বড় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে শিথিল নীতিতে রয়েছে। খবর রয়টার্সের।

গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী জিডিপি তথ্য সুদহার-সংক্রান্ত প্রত্যাশায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন ২০২৬ সালে ফেডের আরও প্রায় দুই দফা সুদহার কমানোর সম্ভাবনা হিসাব করছেন।

গোল্ডম্যান স্যাকসের যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড মেরিকল বলেন, ‘আমরা আশা করছি নীতিনির্ধারকেরা আরও দুটি ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার কমিয়ে হার ৩ থেকে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশে নামাবে। তবে ঝুঁকির দিকটা আরও কমার দিকেই।’

গতকাল বুধবার ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ড তিন মাসের নতুন উচ্চতায় উঠলেও দিনের শেষে প্রায় স্থিতিশীল ছিল। ইউরো লেনদেন হয়েছে ১.১৮০ ডলার, পাউন্ড ১.৩৫২২ ডলারে।

ডলার সূচক নেমে আসে আড়াই মাসের সর্বনিম্ন ৯৭.৭৬৭ পয়েন্টে। চলতি বছরে ডলারের দরপতন প্রায় ৯.৮ শতাংশ, যা ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক ক্ষতি। বছরের শেষ সপ্তাহে আরও দুর্বল হলে ২০০৩ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফলও হতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনিয়মিত শুল্কনীতি ও ফেডের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডলারের ওপর আস্থার সংকট তৈরি করেছে। এর বিপরীতে ইউরো এ বছর ১৪ শতাংশের বেশি শক্তিশালী, যা ২০০৩ সালের পর সেরা পারফরম্যান্সের পথে।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) গত সপ্তাহে সুদহার অপরিবর্তিত রেখে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। এতে নিকট ভবিষ্যতে সুদ কমানোর সম্ভাবনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাবে ইউরোপের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা মূল্যায়ন করছেন ট্রেডাররা।

ফলে অস্ট্রেলীয় ডলার ও নিউজিল্যান্ডের ডলার শক্তিশালী হয়েছে। অস্ট্রেলীয় ডলার এ বছর এখন পর্যন্ত ৮.৪ শতাংশ বেড়ে গতকাল বুধবার তিন মাসের সর্বোচ্চ ০.৬৭১০ ডলারে পৌঁছায়। নিউজিল্যান্ড ডলারও আড়াই মাসের সর্বোচ্চ ০.৫৮৪৭৫ ডলার ছুঁয়েছে।

ব্রিটিশ পাউন্ড এ বছর ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে অন্তত একবার সুদ কমাবে এবং বছরের শেষ নাগাদ দ্বিতীয়বার কমানোর সম্ভাবনাও প্রায় ৫০ শতাংশ।

ডলার নরওয়েজিয়ান ক্রোনের বিপরীতে ১২ শতাংশ, সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ১৩ শতাংশ এবং সুইডিশ ক্রোনার বিপরীতে ১৭ শতাংশ দুর্বল হয়েছে। গতকাল সুইডিশ ক্রোনার বিপরীতে ডলার নেমে আসে ৯.১৬৭ ক্রোনায়, যা ২০২২ সালের পর সর্বনিম্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সরকার জনগুরুত্ব বিবেচনায় এবং পরিবেশবান্ধব ও দূরনিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেলকে অধিক জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর আরোপিত ভ্যাট ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহতি দিয়েছে। মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন করের বিদ্যমান অব্যাহতি চালু রাখার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বার্থে ওই অব্যাহতির মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে এনবিআর গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী, যেকোনো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিধান আছে। মেট্রোরেল পুরোপুরি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ও গণপরিবহন। কিন্তু মেট্রোরেল চালুর পর শুরু থেকেই এর মালিক কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অনুরোধে এই সেবার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়নি।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেল চলাচল মতিঝিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ভবিষ্যতে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে। মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস নেই। সব যাত্রী একই ভাড়ায় নির্ধারিত গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে শুরু হয়েছে চার দিনের আবাসন মেলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

শুরু হলো আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৫। আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) চেয়ারম্যান মোছা. ফেরদৌসী বেগম।

চার দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের মেলায় ২২০টি স্টল থাকছে। মেলায় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়েছে রিহ্যাব।

মেলায় আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্ল্যাট বা প্লট বিক্রির প্রস্তাবের সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক জীবনযাত্রার ধারণাও তুলে ধরছেন। এবারের মেলার অন্যতম আকর্ষণ আবাসন খাতে ডিজিটাল রূপান্তর, যা ক্রেতাদের অভিজ্ঞতায় আনছে নতুন মাত্রা। থ্রি-ডি ও ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে মেলা প্রাঙ্গণেই পছন্দের ফ্ল্যাটটি ঘুরে দেখছেন ক্রেতারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে ফ্ল্যাট কেমন হবে, তা বুঝতে ক্রেতাদের ব্রশিউর ও নকশার ওপর নির্ভর করতে হতো। তবে এবার থ্রি-ডি ও ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রেতারা মেলা প্রাঙ্গণেই তাঁদের পছন্দের ফ্ল্যাটটি ঘুরে দেখছেন। এতে ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ও বাস্তবসম্মত হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এবার নিজস্ব ডিজিটাল সেলস প্ল্যাটফর্মও চালু করেছে।   

এ ছাড়া মেলায় এমন বহু প্রকল্প প্রদর্শিত হচ্ছে, যেখানে স্মার্ট লক, অটোমেটেড লাইটিং, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। এই প্রযুক্তির ফলে স্মার্টফোন ব্যবহার করে বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বলেন, দেশ গঠনে ভবন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তা ও নির্মাণকারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আবাসন খাতে নানা পেশাজীবী সংগঠন যুক্ত থাকলেও বাস্তবে ভবন নির্মাণের মূল দায়িত্ব উদ্যোক্তা ও নির্মাতাদের। দীর্ঘদিন ধরে আবাসন খাত নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এসেছে। বর্তমানে কিছুটা মন্দা থাকলেও এটি স্থায়ী নয়, সুদিন অবশ্যই ফিরে আসবে।

ডেভেলপারদের বিষয়ে প্রচলিত ভুল ধারণার কথা তুলে ধরে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, ডেভেলপাররা শুধু নিজেদের ব্যবসার কথা ভাবেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই ধারণা সঠিক নয়। হয়তো হাতে গোনা কয়েকজন ব্যতিক্রম থাকতে পারেন, তবে সবাই একটি সুন্দর, পরিকল্পিত ও নিয়মের মধ্যে গড়ে ওঠা শহরই চান।’

বিশেষ অতিথি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) চেয়ারম্যান মোছা. ফেরদৌসী বেগম নিয়ম অনুযায়ী ভবন নির্মাণের কথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট মো. ওয়াহিদুজ্জামান। সদস্য ও ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে মানুষের ভালো জায়গায় সুন্দর একটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকার আগ্রহ বাড়ছে। আমরা নাগরিকদের স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছি।’

রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত্ আলী ভূঁইয়া আবাসন খাতের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন নাগরিকের পক্ষে হাউজিং লোন ছাড়া ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রয় করা প্রায় অসম্ভব। ক্রেতারা যাতে খুব সহজে এই ঋণ পেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করার জন্য জানান তিনি। পরিকল্পিত ও আধুনিক বাসস্থান তৈরিতে গৃহঋণের অবদান অনস্বীকার্য।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রিহ্যাবের পরিচালক ও মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান মিরাজ মোক্তাদিরসহ আরও অনেকে।

প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। মেলায় দুই ধরনের টিকিট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি, অপরটি মাল্টিপল। সিঙ্গেল টিকিটের প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিটের প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকিটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে। এ বছরের মেলায় প্রতিদিন র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুব কর্মসংস্থানে ১৮৩৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বাড়াতে বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার ৮৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী নিম্ন আয়ের যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে এই অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অনানুষ্ঠানিক খাত কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার ও অগ্রগতি প্রকল্পের আওতায় এ ঋণ দেওয়া হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের জন্য কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। এর আগে প্রকল্পটির আওতায় ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। নতুন অর্থায়নের ফলে অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ কর্মসূচি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণের সুযোগসহ বিভিন্ন সহায়তা পাবেন। এতে তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান ও ব্যবসা সম্প্রসারণে বিদ্যমান বাধা অতিক্রম করতে পারবেন।

প্রকল্পটির একটি বড় অংশ নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু সহনশীল জীবিকার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মানসম্মত ও সাশ্রয়ী শিশু যত্নসেবার সুযোগ, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সম্প্রদায়ভিত্তিক জীবিকা সহায়তা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি একটি জীবন, একটি পরিবার এবং একটি সম্প্রদায়কে বদলে দিতে পারে। কিন্তু প্রতিবছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করা অনেক তরুণ বাংলাদেশি কাজ খুঁজে পায় না। কাজের মান, দক্ষতার ঘাটতি ও দক্ষতার অমিল বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।’

তিনি আরও জানান, নতুন এই অর্থায়ন বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তরুণদের বাজার–প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ অর্জনে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, অতিরিক্ত অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটির কার্যক্রম শহরের বাইরে গ্রামীণ এলাকাতেও সম্প্রসারিত হবে। এতে প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি নারীদের প্রশিক্ষণ ও স্টার্টআপ অনুদানের মাধ্যমে গৃহভিত্তিক শিশু যত্নসেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যা নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়াবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে প্রমাণিত উদ্যোগগুলো সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং শিশু যত্নের মতো উদ্ভাবনী সমাধান চালু করা সম্ভব হবে। এতে আরও বেশি তরুণ ও নারী তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন।’

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে। শিক্ষানবিশ কর্মসূচি সম্পন্ন করা অংশগ্রহণকারীদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যেই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় ও ব্যবসা পরিচালনায় উন্নতির কথা জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত