বাংলাদেশে ওষুধ, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি, সেবা খাতসহ মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউরোপ প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে এফবিসিসিআই এবং ইউরোপ-বাংলাদেশ ফেডারেশন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইবিএফসিআই) ২৬ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সভায় ইউরোপপ্রবাসী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি বাজার হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপের দেশসমূহের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে জিএসপি, ইবিএসহ বিভিন্ন বাণিজ্য সুবিধা দিয়ে আসছে।’ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে ভবিষ্যতেও তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। নতুন বাংলাদেশে আরও বেশি ইউরোপীয় বিনিয়োগ আসবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন হাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের ওষুধশিল্প, পুঁজিবাজার, কৃষি ও অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ ইউরোপের বিনিয়োগকারীদের তিনি আহ্বান জানান। 

প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইবিএফসিআইয়েএর সভাপতি ড. ওয়ালি তসর উদ্দিন জানান, বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের অধিক সম্ভাবনা রয়েছে। অধিকন্তু নতুন প্রজন্মের প্রবাসী ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আগ্রহ বেড়েছে। 

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় দেশসমূহের মধ্যে প্রয়োজনীয় বাণিজ্য চুক্তি সই এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর সভায় উপস্থিত আলোচকবৃন্দ গুরুত্বারোপ করেন। শুধু এথ্নিক মার্কেটে (প্রবাসী বাংলাদেশি ভোক্তা) সীমাবদ্ধ না থেকে ইউরোপের মূল বাজারে জায়গা করে নেওয়ার জন্য পণ্য বহুমুখীকরণ, প্যাকেজিং, বাজারজাতকরণ ও বিপণন কৌশল উন্নয়নসহ প্রমোশন ও ব্র্যান্ডিংয়ের প্রতি নজর বাড়ানোর পরামর্শও দেন তাঁরা। এর পাশাপাশি, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কাস্টমস ও ভিসা জটিলতা সহজীকরণের জন্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান। 

উইমেন অন্ট্রাপ্রেনিউর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডব্লিউইএবি) সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালকবৃন্দ, ইবিএফসিআইয়ের নন-এক্সিকিউটিভ পরিচালকবৃন্দ, অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, আন্তর্জাতিক উইংয়ের প্রধান মো. জাফর ইকবাল এনডিসি ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।