অনলাইন ডেস্ক
ঢাকা: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়;
রপ্তানিমুখী শিল্প বহুমুখীকরণ এবং তার পশ্চাদ শিল্পে প্রণোদনা; স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স এবং আইসিটি খাতের বিকাশ ও উন্নয়ন, ‘Ease of doing business’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নয়ন; এবং স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ও প্রতিরক্ষণে শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব (মূল্য সংযোজন কর ও আয়কর) আহরণ বৃদ্ধি– এসব বিষয় বিবেচনায় ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি পর্যায়ের শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে বিদ্যমান ছয় স্তর বিশিষ্ট আমদানি শুল্ক কাঠামো (০%, ১%, ৫%, ১০%, ১৫% এবং ২৫%), সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক আরোপিত রয়েছে এমন পণ্যের ওপর আবশ্যিকভাবে বিদ্যমান রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ এবং ১২ (বার) স্তর বিশিষ্ট সম্পূরক শুল্কহার (১০%, ২০%, ৩০%, ৪৫%, ৬০%, 100%, 150%, ২০০%, ২৫০%, ৩০০%, ৩৫০% এবং ৫০০%) আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরেও অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, সার, বীজ, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং আরো কিছু শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্কহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কৃষিখাত
বাংলাদেশ এখনও কৃষিপ্রধান দেশ এবং কৃষি আমাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত। কৃষিখাতের প্রধান উপকরণসমূহ, বিশেষ করে সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শূন্য শুল্কহার অব্যাহত রাখা, দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় প্রধান প্রধান খাদ্যদ্রব্যের ওপর বিদ্যমান শূন্য শতাংশ শুল্কহার অপরিবর্তিত রাখা এবং অন্যান্য নিত্যসামগ্রী আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ক-করভার স্থিতাবস্থায় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশীয় চাষীদের প্রতিরক্ষণে গাজর ও মাশরুম আমদানিতে শুল্কহার বৃদ্ধিকরণ এবং গাজর, মাশরুম, কাঁচামরিচ, টমেটো, কমলা ও ক্যাপসিকাম এর ন্যূণতম শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করার প্রস্তাব।
কৃষি আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কৃষি উপকরণ আমদানিতে প্রযোজ্য আমদানি শুল্ক হ্রাস এবং কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন সুসংহত করতে সুরক্ষা প্রদান করার প্রস্তাব।
দীর্ঘদিন যাবৎ দেশে খাবার লবণ (সোডিয়াম ক্লোরাইড) আমদানি নিষিদ্ধ থাকলেও শিল্প লবণ (সোডিয়াম সালফেট/ডাইসোডিয়াম সালফেট) আমদানির সুযোগ রয়েছে। খাবার লবণের সঙ্গে শিল্প লবণের দামের তারতম্য অনেক বেশি হওয়ায় অপঘোষণার মাধ্যমে খাবার লবণ আমদানির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
তাছাড়া, খাবার লবণের সঙ্গে শিল্প লবণ মিশিয়ে বাজারজাত করার অভিযোগও শোনা যায় যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের লবণ চাষী ও লবণ মিলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লবণ চাষিদের প্রতিরক্ষণ, আমদানিকৃত শিল্প লবণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প লবণ (সোডিয়াম সালফেট/ডাইসোডিয়াম সালফেটের) আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিল্প খাত
বর্তমানে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে কর্মসংস্থান সৃজন ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে শিল্প খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। শিল্পখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, যথাযথ প্রতিরক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং রপ্তানিমুখি শিল্পের বহুমুখি প্রসারের কৌশল অবলম্বনে শিল্প খাতের বিভিন্ন উপখাতের জন্য শুল্ক-কর হ্রাস/বৃদ্ধির নিম্নরূপ প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিরক্ষণে শিল্প কর্তৃক তৈরিকৃত কয়েকটি পণ্য (ফিনিশড প্রোডাক্ট) আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ককর বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের যন্ত্রপাতি বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে ১ শতাংশ হারে আমদানির সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বহুল ব্যবহৃত পেপারকাপ প্রস্তুতকারী শিল্পের সুরক্ষায় ওই শিল্পের প্রধান দুটি কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান ও তৈরি পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়নযোগ্য মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া, বিলুপ্তপ্রায় প্রাচীন শঙ্খ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এই শিল্পের কিছু কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রপ্তানিমুখী শিল্প
টেক্সটাইল শিল্পকে সুরক্ষিতকরণে ফটোসেনসিটিভ রোটারি স্ক্রিন, টেমপারেচার সেন্সর এবং লোডেড পিসিবি বোর্ড রেয়াতি সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণে সম্ভাবনাময় পাদুকা শিল্পের প্রসারে এই শিল্পের দুটি কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
ইস্পাতজাত বিবিধ শিল্প খাত
দেশীয় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আয়রন ওয়্যার শিল্পের প্রতিরক্ষণে তৈরি পণ্য আমদানিতে ৩ শতাংশ হারে রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি–৩%) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট ডোর প্রস্তুতকারী শিল্পের সুরক্ষায় এই শিল্পের প্রধান কাঁচামাল (কোল্ড রোলড অব আইরন/স্টিল) আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়াও, ক্যাবল ও ইন্টারনেট ক্যাবল উৎপাদনকারী শিল্পের বিকাশে এই শিল্পের কাঁচামাল যথাক্রমে– প্লাস্টিক ফ্রেমওয়ার্ক ও কোটেড ক্যালিসয়াম কার্বোনেট আমদানিতে শুল্কহার হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইলেকট্রনিক্স শিল্প
ইলেকট্রনিক্স শিল্পের অনুষঙ্গ হিসেবে স্থানীয় রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারের কম্প্রেসার উৎপাদনকারী শিল্পের সুরক্ষায় এই শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা সম্প্রসারণ; ওয়াশিং মেশিন উৎপাদনকারী শিল্পের সুরক্ষায় এই শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি এবং টেলিভিশন প্রস্তুতকারী শিল্পের বিকাশে এই শিল্পে প্রয়োজনীয় কতিপয় কাঁচামালের ওপর রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অ্যাব্রেসিড পেপার শিল্প
শিরিষ কাগজ উৎপাদনকারী শিল্পের প্রতিরক্ষণে এই শিল্পের চারটি কাঁচামাল (আর্টিফিশিয়াল কোরানডাম, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, কোটেড/ইমপ্রেগন্যান্ট পেপার এবং পেপার বোর্ড, কোটেড টেক্সটাইল ফেব্রিক্স) আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এলইডি লাইট উৎপাদনকারী/সংযোজনকারী শিল্প
এলইডি লাইট উৎপাদনকারী/সংযোজনকারী শিল্পের বিকাশে এই শিল্পের যন্ত্রাংশ আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাসের মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
জিপসাম বোর্ড ও পার্টিক্যাল বোর্ড প্রস্তুতকারী শিল্প
আমদানি বিকল্প দেশীয় জিপসাম বোর্ড ও পার্টিক্যাল বোর্ড প্রস্তুতকারী শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তিনটি কাঁচামাল (প্লেট/শিট/ফিল্ম/ফয়েল/ভিনাইল ক্লোরাইডের পলিমার ফিতা, সেলফ অ্যাডেসিভ টেপ, ফ্লুটিং পেপার) আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
লুব ব্লেন্ডিং শিল্প
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক রিসাইক্যালড লুব বেইজ অয়েল ও লুব্রিকেটিং অয়েল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কহার বৃদ্ধিকরণ, রাজস্ব ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে লব্রিকেটিং অয়েল–এর সঙ্গে প্যারাফিনের শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ এবং লুব ব্লেন্ডিং শিল্পের সুরক্ষায় এর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত অ্যাডিটিভের শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইসিটি খাত
দেশীয় কম্পিউটার/ল্যাপটপ ও আইসিটি পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিরক্ষণে কম্পিউটারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ও আইসিটি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
ঢাকা: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়;
রপ্তানিমুখী শিল্প বহুমুখীকরণ এবং তার পশ্চাদ শিল্পে প্রণোদনা; স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স এবং আইসিটি খাতের বিকাশ ও উন্নয়ন, ‘Ease of doing business’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নয়ন; এবং স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ও প্রতিরক্ষণে শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব (মূল্য সংযোজন কর ও আয়কর) আহরণ বৃদ্ধি– এসব বিষয় বিবেচনায় ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি পর্যায়ের শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে বিদ্যমান ছয় স্তর বিশিষ্ট আমদানি শুল্ক কাঠামো (০%, ১%, ৫%, ১০%, ১৫% এবং ২৫%), সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক আরোপিত রয়েছে এমন পণ্যের ওপর আবশ্যিকভাবে বিদ্যমান রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ এবং ১২ (বার) স্তর বিশিষ্ট সম্পূরক শুল্কহার (১০%, ২০%, ৩০%, ৪৫%, ৬০%, 100%, 150%, ২০০%, ২৫০%, ৩০০%, ৩৫০% এবং ৫০০%) আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরেও অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, সার, বীজ, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং আরো কিছু শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্কহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কৃষিখাত
বাংলাদেশ এখনও কৃষিপ্রধান দেশ এবং কৃষি আমাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত। কৃষিখাতের প্রধান উপকরণসমূহ, বিশেষ করে সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শূন্য শুল্কহার অব্যাহত রাখা, দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় প্রধান প্রধান খাদ্যদ্রব্যের ওপর বিদ্যমান শূন্য শতাংশ শুল্কহার অপরিবর্তিত রাখা এবং অন্যান্য নিত্যসামগ্রী আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ক-করভার স্থিতাবস্থায় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশীয় চাষীদের প্রতিরক্ষণে গাজর ও মাশরুম আমদানিতে শুল্কহার বৃদ্ধিকরণ এবং গাজর, মাশরুম, কাঁচামরিচ, টমেটো, কমলা ও ক্যাপসিকাম এর ন্যূণতম শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করার প্রস্তাব।
কৃষি আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কৃষি উপকরণ আমদানিতে প্রযোজ্য আমদানি শুল্ক হ্রাস এবং কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন সুসংহত করতে সুরক্ষা প্রদান করার প্রস্তাব।
দীর্ঘদিন যাবৎ দেশে খাবার লবণ (সোডিয়াম ক্লোরাইড) আমদানি নিষিদ্ধ থাকলেও শিল্প লবণ (সোডিয়াম সালফেট/ডাইসোডিয়াম সালফেট) আমদানির সুযোগ রয়েছে। খাবার লবণের সঙ্গে শিল্প লবণের দামের তারতম্য অনেক বেশি হওয়ায় অপঘোষণার মাধ্যমে খাবার লবণ আমদানির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
তাছাড়া, খাবার লবণের সঙ্গে শিল্প লবণ মিশিয়ে বাজারজাত করার অভিযোগও শোনা যায় যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের লবণ চাষী ও লবণ মিলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লবণ চাষিদের প্রতিরক্ষণ, আমদানিকৃত শিল্প লবণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প লবণ (সোডিয়াম সালফেট/ডাইসোডিয়াম সালফেটের) আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিল্প খাত
বর্তমানে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে কর্মসংস্থান সৃজন ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে শিল্প খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। শিল্পখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, যথাযথ প্রতিরক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং রপ্তানিমুখি শিল্পের বহুমুখি প্রসারের কৌশল অবলম্বনে শিল্প খাতের বিভিন্ন উপখাতের জন্য শুল্ক-কর হ্রাস/বৃদ্ধির নিম্নরূপ প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিরক্ষণে শিল্প কর্তৃক তৈরিকৃত কয়েকটি পণ্য (ফিনিশড প্রোডাক্ট) আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ককর বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের যন্ত্রপাতি বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে ১ শতাংশ হারে আমদানির সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বহুল ব্যবহৃত পেপারকাপ প্রস্তুতকারী শিল্পের সুরক্ষায় ওই শিল্পের প্রধান দুটি কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান ও তৈরি পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়নযোগ্য মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া, বিলুপ্তপ্রায় প্রাচীন শঙ্খ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এই শিল্পের কিছু কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রপ্তানিমুখী শিল্প
টেক্সটাইল শিল্পকে সুরক্ষিতকরণে ফটোসেনসিটিভ রোটারি স্ক্রিন, টেমপারেচার সেন্সর এবং লোডেড পিসিবি বোর্ড রেয়াতি সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণে সম্ভাবনাময় পাদুকা শিল্পের প্রসারে এই শিল্পের দুটি কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
ইস্পাতজাত বিবিধ শিল্প খাত
দেশীয় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আয়রন ওয়্যার শিল্পের প্রতিরক্ষণে তৈরি পণ্য আমদানিতে ৩ শতাংশ হারে রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি–৩%) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট ডোর প্রস্তুতকারী শিল্পের সুরক্ষায় এই শিল্পের প্রধান কাঁচামাল (কোল্ড রোলড অব আইরন/স্টিল) আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়াও, ক্যাবল ও ইন্টারনেট ক্যাবল উৎপাদনকারী শিল্পের বিকাশে এই শিল্পের কাঁচামাল যথাক্রমে– প্লাস্টিক ফ্রেমওয়ার্ক ও কোটেড ক্যালিসয়াম কার্বোনেট আমদানিতে শুল্কহার হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইলেকট্রনিক্স শিল্প
ইলেকট্রনিক্স শিল্পের অনুষঙ্গ হিসেবে স্থানীয় রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারের কম্প্রেসার উৎপাদনকারী শিল্পের সুরক্ষায় এই শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা সম্প্রসারণ; ওয়াশিং মেশিন উৎপাদনকারী শিল্পের সুরক্ষায় এই শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি এবং টেলিভিশন প্রস্তুতকারী শিল্পের বিকাশে এই শিল্পে প্রয়োজনীয় কতিপয় কাঁচামালের ওপর রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অ্যাব্রেসিড পেপার শিল্প
শিরিষ কাগজ উৎপাদনকারী শিল্পের প্রতিরক্ষণে এই শিল্পের চারটি কাঁচামাল (আর্টিফিশিয়াল কোরানডাম, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, কোটেড/ইমপ্রেগন্যান্ট পেপার এবং পেপার বোর্ড, কোটেড টেক্সটাইল ফেব্রিক্স) আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এলইডি লাইট উৎপাদনকারী/সংযোজনকারী শিল্প
এলইডি লাইট উৎপাদনকারী/সংযোজনকারী শিল্পের বিকাশে এই শিল্পের যন্ত্রাংশ আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাসের মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
জিপসাম বোর্ড ও পার্টিক্যাল বোর্ড প্রস্তুতকারী শিল্প
আমদানি বিকল্প দেশীয় জিপসাম বোর্ড ও পার্টিক্যাল বোর্ড প্রস্তুতকারী শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তিনটি কাঁচামাল (প্লেট/শিট/ফিল্ম/ফয়েল/ভিনাইল ক্লোরাইডের পলিমার ফিতা, সেলফ অ্যাডেসিভ টেপ, ফ্লুটিং পেপার) আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
লুব ব্লেন্ডিং শিল্প
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক রিসাইক্যালড লুব বেইজ অয়েল ও লুব্রিকেটিং অয়েল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কহার বৃদ্ধিকরণ, রাজস্ব ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে লব্রিকেটিং অয়েল–এর সঙ্গে প্যারাফিনের শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ এবং লুব ব্লেন্ডিং শিল্পের সুরক্ষায় এর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত অ্যাডিটিভের শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইসিটি খাত
দেশীয় কম্পিউটার/ল্যাপটপ ও আইসিটি পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিরক্ষণে কম্পিউটারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ও আইসিটি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেছেন, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলমের আন্তর্জাতিক সালিসে যাওয়ার হুমকিতে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
৩ ঘণ্টা আগেবেশ কিছু দিন ধরেই কেনিয়াতে ছাত্র–জনতা আদানির সঙ্গে সরকারের ‘গোপন’ চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। পরে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। অবশেষে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থমূল্যের দুটি চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
৮ ঘণ্টা আগেঘুষের নোটে সাগর আদানি ঘুষের পরিমাণ, কাকে ঘুষ দেওয়া হয়েছে এবং কত মেগাওয়াট বিদ্যুতের বিনিময়ে এটি হয়েছে—তার বিবরণ উল্লেখ করেছেন। তিনি মেগাওয়াট প্রতি ঘুষের হারও উল্লেখ করেছেন। ২০২০ সালে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে সাগর আদানি বলেন, ‘হ্যাঁ...কিন্তু বিষয়টা দৃশ্যমান হওয়ার ঠেকানো বেশ কঠিন।’
৯ ঘণ্টা আগেগৌতম আদানি, ভারতীয় কনগ্লোমারেট আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের একজন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বহু-বিলিয়ন ডলারের জালিয়াতি এবং ঘুষ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি বাগিয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে