রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘এক্সিট পলিসি’ চান ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ০৬
Thumbnail image
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত

বড় ও মাঝারি শিল্প খাতের রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংকিং খাতের দায়দেনা মুক্তি ও গুটিয়ে নেওয়ার জন্য ‘এক্সিট পলিসি’ চেয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে সুদহার কমানো, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি, একক গ্রাহকের ঋণপ্রাপ্তির সীমা বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণের শ্রেণীকরণের ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোসহ কিছু নীতি পরিবর্তনের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ রোববার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) ও ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব দাবি জানান। সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা তুলে ধরেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ।

বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘একদিকে সরকার ভ্যাট ও কর বৃদ্ধি করছে, অন্যদিকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেড়েই যাচ্ছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ শ্রেণীকরণ আরও জটিল করেছে। এভাবে আমাদের সুবিধাগুলো তুলে নেওয়া হলে ব্যবসা করা খুবই কঠিন হবে। তাই আমরা নীতিগত কিছু সুবিধা চেয়েছি।’

আনোয়ার-উল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদ্যমান রুগ্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান কীভাবে অবসায়ন হবে, তার স্পষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। আমরা গভর্নরের কাছে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর এক্সিট নীতিমালা চেয়েছি। বিদ্যমান বড় শিল্প খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন রুগ্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক বছরের মনিটোরিয়াম সুবিধাসহ আগামী ১২ বছরে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের এক্সিট পলিসির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যাংক দায়ের ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট, এক বছরের মনিটোরিয়ামসহ ১৫ বছর মেয়াদে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি।’

একটি প্রতিষ্ঠান এক্সিট সুবিধা নিয়ে পরবর্তী সময়ে কীভাবে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার-উল আলম সাংবাদিকদের বলেন, একজন ব্যক্তির একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকে। সব প্রতিষ্ঠানই একসঙ্গে খারাপ হয়ে যায় না। যে প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ হয়েছে, তার দায় পরিশোধের জন্য তার অন্য ভালো প্রতিষ্ঠানের আয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের শর্ত অনুযায়ী ঋণ শ্রেণীকরণে নতুন নিয়ম চালু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুসারে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তিন মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার পর সব ধরনের ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণীকরণ করা হবে। বর্তমানে এ সময়সীমা ছয় মাস।

এ বিষয়ে আনোয়ার-উল আলম বলেন, ‘ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করার যে শর্ত ঠিক করা হয়েছে, তা শিথিল করার দাবি জানাই। গ্রাহক ছয় মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে খেলাপি হবে, এটাকে অন্তত ৯ মাসে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছি।’

ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধি শিল্পের সংকট বাড়িয়েছে উল্লেখ করে বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘ব্যাংক সুদের হার ৯ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা, যে সংকট সমাধান করা অসম্ভব। উৎপাদনমুখী শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য সুদহার কমানোর দাবি জানিয়েছি।’

এ সময় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বিসিআইয়ের পরিচালক এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এলএফএমইবির সিনিয়র সহসভাপতি নজরুল হাসান সোইল, বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক, বিসিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম স্বপন, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হাসান, কোকা-কোলা বাংলাদেশের এমডি সাদাপ আহমেদ, বিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিউলিপের পদত্যাগপত্রের জবাবে যা লিখলেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার

সংবিধানের অস্তিত্ব নেই, প্রোক্লেমেশন না হলে বিপদ: বিচারপতি আব্দুর রহমান

পদত্যাগপত্রে যা লিখলেন টিউলিপ সিদ্দিক

টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন

কার্যালয় থেকে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি সরানোর ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত