দু-একদিনের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামের গ্যাস ভালো অবস্থায় যাবে: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৪১
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৫১

আগামী দু-একদিনের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামের গ্যাস ভালো অবস্থায় যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। 

নসরুল হামিদ বলেন, ‘গত দুদিন ধরে গ্যাসে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। গত শুক্র ও শনিবার মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছিল চট্টগ্রামে এবং পরবর্তীকালে ঢাকায়। দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটের (এফএসআরইউ) একটির কাজ করতে ডকিং করার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। সেটি এ দেশে কাজ শুরুর সময়ে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয় এফএসআরইউতেও কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আপাতত আজকের দিনে দুটিই চালু আছে। এর মধ্যে একটি আবার চলে যাবে ডকিংয়ে। তবে যেটি বাইরে থেকে এসেছে, সেটি পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু করেছে। আমরা আশাবাদী, ঢাকা ও চট্টগ্রামের গ্যাস দু-একদিনের মধ্যে আরও ভালো অবস্থায় চলে যাবে।’ 

নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘শীতে গ্যাসে এমনিতেই বাসাবাড়িতে রান্নাবান্নার জন্য সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যাটির সমাধানের জন্য এরই মধ্যে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ইন্ট্রোডিউস করেছি। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ এলপিজি কাভার করে। অল্পসংখ্যক গ্রাহক বাসাবাড়িতে চুলায় গ্যাস ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ঢাকা এবং আশপাশে, ময়মনসিংহের কিছু অংশ ও চট্টগ্রামের কিছু অংশ কাভার করে।’ 
 
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহে সবার জন্য মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প খাত বাদ দিলে সব মিলিয়ে আমাদের গ্রাহকসংখ্যা ২০ থেকে ২৫ লাখ হতে পারে। এই গ্রাহকদের আমরা আস্তে আস্তে মিটারের মধ্যে নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে সাড়ে চার লাখ গ্যাস মিটার বসানো হয়েছে। আগামী তিন বছরের মাথায় সবার জন্য গ্যাস মিটার লাগানোই আমাদের লক্ষ্য। বহুদিন ধরে আমরা গ্যাস মিটার বসানো শুরু করার চেষ্টা করেছিলাম, এ জন্য অর্থের প্রয়োজন, সেটাও আমরা পেয়ে গেছি।’ 

নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান ফাইন্যান্সিং ব্যাংক অর্থায়ন করছে। আমরা অচিরেই টেন্ডার করে কাজ শুরু করব। এরই মধ্যে জালালাবাদে ৫০ হাজার, কর্ণফুলিতে আড়াই লাখ ও ঢাকায় চার লাখ মিটার বসানোর কাজ শুরু করে দিয়েছি। এই মিটারগুলো বসানো হলে যারা যেভাবে গ্যাস পাবেন, সেভাবেই বিল হবে। এখন যেটা হচ্ছে, মাস শেষে অনেকে টাকা দিচ্ছেন, কিন্তু গ্যাস পাচ্ছেন না। গ্যাসের প্রেসার কম। আমরা অন্তত সাড়ে সাত লাখ অবৈধ গ্যাস লাইন উচ্ছেদ করেছি। কিন্তু তবুও অবৈধ লাইন রয়েছে। যে কারণে বিরাট অঞ্চলে গ্যাস প্রাপ্তিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা এই লাইন উচ্ছেদের কাজ চলমান রেখেছি।’ 

গ্রাহকদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন। আমরা জানি, সাময়িক সমস্যা আছে। তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহার বাড়াতে চাচ্ছি আমরা। এলপিজি এখন গাড়িতেও ব্যবহার হচ্ছে, বাসাবাড়িতেও হচ্ছে। কোনো কোনো সময় কেউ কেউ বলেন, এটার দাম বেশি। আমরা এটিকে ডায়নামিক প্রাইসিংয়ের আন্ডারে নিয়ে গিয়েছি।’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ভর করে বিশ্ববাজারে দামের ওপর। বিশ্ববাজারে দাম কম হলে এখানেও কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু আপনাদের অনুরোধ করব, একটু ধৈর্য ধরেন, অচিরেই বাসা-বাড়িতে মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা যায়। 

এটা করতে কত দিন লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দুই থেকে তিন বছরের মাথায় সব বাড়িতে মিটার বসানো হবে। পাঁচ থেকে সাত বছর আগে আমরা জাইকার তহবিল পেয়েছিলাম, এটা চলমান প্রক্রিয়া। এখন আরও ২০ লাখ মিটার লাগাতে হবে। এই প্রকল্পের জন্য আমরা মোটামুটি অর্থের সম্ভাবনা পেয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত