অনলাইন ডেস্ক
ভারত মহাসাগরের মাঝখানে একটি কোবাল্ট সমৃদ্ধ এলাকায় অভিযান চালানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে নয়াদিল্লি। তবে ছাড় দিতে রাজি নয় কলম্বো। মূল্যবান খনিজগুলোর জন্য ওই অঞ্চলে খনন চালাতে চায় দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কাও।
ভারতীয় কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকেরা আল জাজিরাকে বলেছেন, ভারত মহাসাগরে চীনের উপস্থিতির ভীতি থেকে নয়াদিল্লি এই খনন চালাতে চাচ্ছে। কেননা, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী কোবাল্ট সরবরাহের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছে।
কোবাল্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং ব্যাটারিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের শক্তিব্যবস্থাকে সবুজ শক্তিতে রূপান্তরের জন্য এটিকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দেখা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি জ্যামাইকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষের (আইএসএ) সঙ্গে যোগাযোগ করে মধ্য ভারত মহাসাগরের কোবাল্ট সমৃদ্ধ ‘আফানাসি নিকিটিন সি-মাউন্টে’ খনিজ অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়েছে। এই এলাকাটি মালদ্বীপের পূর্বে এবং ভারতীয় উপকূল থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কিমি (৮৫০ মাইল) দূরে অবস্থিত।
জাতিসংঘের সাগর আইনের কনভেনশন অনুমোদিত আইএসএ একটি স্বায়ত্তশাসিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯৯৪ সালে গঠিত এই সংস্থাটি সমুদ্র তলদেশে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অনুমোদন দিয়ে থাকে।
আবেদন বিবেচনা করার জন্য ভারত আইএসএকে ৫ লাখ ডলার ফি দিয়েছে। আবেদনে ভারত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তাবিত এলাকায় ব্যাপক ভূপদার্থ, ভূতাত্ত্বিক, জৈবিক, সমুদ্রবিজ্ঞান এবং পরিবেশগত অধ্যয়ন পরিচালনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। সি-মাউন্টটি ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার (১১৫৮ বর্গমাইল) জুড়ে ১৫০টি ব্লক নিয়ে গঠিত।
কিন্তু ভারতের আবেদন মূল্যায়ন করতে গিয়ে আইএসএ দেখতে পায়, আফানাসি নিকিতিন সি-মাউন্ট সম্পূর্ণভাবে এমন এলাকায়, যা অন্য একটি দেশ তার মহাদেশীয় সীমানার মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছে। একটি দেশের মহাদেশীয় সীমানা হলো সমুদ্রের তলদেশে তার ল্যান্ডমাসের প্রান্ত।
যদিও আইএসএ ভারতকে সেই দেশের নাম জানায়নি, তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেই দেশটি শ্রীলঙ্কা।
আল জাজিরাকে দেওয়া আইএসএর একটি নোট অনুসারে, সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষ প্রতিযোগী আঞ্চলিক দাবির ব্যাপারে ভারতের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। কিন্তু গত ১২ মার্চ ভারত বলেছে, আইএসএর ‘আইনি ও প্রযুক্তিগত কমিশনের ২৯তম অধিবেশন’ চলাকালে এ বিষয়ে দিল্লি মন্তব্য করবে না। আইএসএর এই অধিবেশনেই আবেদনটি বিবেচনাধীন রয়েছে।
আইএসএর নোটে আরও বলা হয়েছে, ফলস্বরূপ ভারতের আবেদনটি ‘মুলতবি’ করে রাখা হয়েছে। ভারত প্রতিক্রিয়া জানালে আইএসএ আবার আবেদনটি পর্যালোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার দাবি
সাধারণত একটি দেশের মহাদেশীয় সীমানা তার উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল (৩৭০ কিমি) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এটি একটি একচেটিয়ামূলক অর্থনৈতিক অঞ্চল, যা শুধু সেই জাতি অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে পারে। যদিও অন্যান্য দেশের জাহাজ এই সীমানায় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
কিন্তু উপকূলীয় দেশগুলো ইউনাইটেড ন্যাশনস কমিশন অন দ্য লিমিটস অব দ্য কন্টিনেন্টাল শেলফের (সিএলসিএস) কাছে আবেদন করতে পারে যে তাদের মহাদেশীয় সীমানা ২০০ নটিক্যাল মাইলের বেশি হতে পারে।
শ্রীলঙ্কা ২০০৯ সালে এটিই করেছিল। তার মহাদেশীয় শেলফের সীমা ২০০ নটিক্যাল মাইল থেকে বেশি বলে আবেদন করেছিল। সিএলসিএস এখনো শ্রীলঙ্কার দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে এটি গৃহীত হলে আফানাসি নিকিতিন সি-মাউন্ট শ্রীলঙ্কার সমুদ্রসীমানার মধ্যে পড়বে।
বর্ধিত মহাদেশীয় শেলফ সীমানার জন্য দেশের দাবি পরীক্ষা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএলসিএস অতীতে এই ধরনের অনুরোধ গ্রহণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ—পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নরওয়ের সমুদ্রসীমানা উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলের বেশি।
সিএলসিএসে ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কা আবেদন জমা দেওয়ার সময় আপত্তি জানায়নি ভারত। কিন্তু ২০২২ সালে অবস্থান পরিবর্তন করে নয়াদিল্লি বলে, শ্রীলঙ্কার দাবি ভারতের স্বার্থের ক্ষতি করবে। ভারত কমিশনকে শ্রীলঙ্কার আবেদনকে খারিজ করার জন্য অনুরোধ করেছে।
আল জাজিরা প্রতিযোগী দাবির বিষয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছ থেকে মন্তব্য চেয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পায়নি।
চীনা উপস্থিতি
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নয়াদিল্লির মাথাব্যথা শ্রীলঙ্কা নিয়ে নয়। একজন প্রবীণ সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানের চেয়ে এই অঞ্চলে চীনের উপস্থিতি ঠেকাতেই ভারত এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সমুদ্র বিশেষজ্ঞ ও ভারতীয় বিচার বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, দ্রুত খনিজ সম্পদ অন্বেষণ বা খনন করা ভারতের লক্ষ্য নয়, বরং চীনের উপস্থিতি ঠেকানো এবং নিজের অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
আইএসএর মতে, ভারত মহাসাগরের গভীরে বিভিন্ন অংশে অনুসন্ধানের জন্য বর্তমানে চীন, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার চুক্তি রয়েছে।
ভারতের চেন্নাইয়ের ডক্টর আম্বেদকর ল ইউনিভার্সিটির মেরিটাইম আইনের সহকারী অধ্যাপক নিখিলেশ নেদুমগাত্তুনমাল বলেছেন, আফানাসি নিকিতিন সি–মাউন্টের অবস্থান যেকোনো দেশের একক অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে। এটি আইএসএ ভারতের মামলাকে শক্তিশালী করেছে। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আইএসএর কাছ থেকে অনুসন্ধানের অনুমতি পাওয়ার অধিকার ভারতের আছে।’
ঝুঁকি কিসে?
ভারতের তিরুবনন্তপুরমের ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্স স্টাডিজের অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী কেভি থমাস ভারতের সিদ্ধান্তের পেছনে এই অঞ্চলে চীনের কার্যকলাপ নিয়ে দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার মূল্যায়ন কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন।
টমাস বলেছেন, ভারতের গভীর সমুদ্রে খনিজ সম্পদ আহরণের উদ্যোগগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন করেছে। ২০২১ সালে ভারত গভীর সমুদ্রের সম্পদ অন্বেষণের জন্য ‘গভীর মহাসাগর মিশন’ প্রকল্প চালু করে। এই প্রকল্পের প্রথম পাঁচ বছরের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
ভারত সরকার ২০২৩ সালে বলেছিল, গভীর মহাসাগর মিশনের অধীনে এটি একটি ক্রুযুক্ত গভীর সমুদ্রের খনন সাবমার্সিবল তৈরি করছে, যা সমুদ্রের তলদেশ থেকে পলিমেটালিক নডিউলসের অনুসন্ধানমূলক খনির কাজ করবে। পলিমেটালিক নডুলসকে ম্যাংগানিজ নডুলসও বলা হয়। এটি একধরনের পাথুরে পদার্থ, যা কোবাল্টসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
আন্তর্জাতিক পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংস্থা অনুসারে, চীন বর্তমানে বিশ্বের মোট কোবাল্টের ৭০ শতাংশ, লিথিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের ৬০ শতাংশসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ করে। তবে নিট-শূন্য নির্গমনের জন্য ২০৭০ সাল নির্ধারণ করা ভারতের ক্লিন এনার্জি বা পরিচ্ছন্ন শক্তির অর্থনীতির জ্বালানির জন্য এই খনিজগুলো প্রয়োজন।
আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
ভারত মহাসাগরের মাঝখানে একটি কোবাল্ট সমৃদ্ধ এলাকায় অভিযান চালানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে নয়াদিল্লি। তবে ছাড় দিতে রাজি নয় কলম্বো। মূল্যবান খনিজগুলোর জন্য ওই অঞ্চলে খনন চালাতে চায় দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কাও।
ভারতীয় কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকেরা আল জাজিরাকে বলেছেন, ভারত মহাসাগরে চীনের উপস্থিতির ভীতি থেকে নয়াদিল্লি এই খনন চালাতে চাচ্ছে। কেননা, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী কোবাল্ট সরবরাহের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছে।
কোবাল্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং ব্যাটারিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের শক্তিব্যবস্থাকে সবুজ শক্তিতে রূপান্তরের জন্য এটিকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দেখা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি জ্যামাইকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষের (আইএসএ) সঙ্গে যোগাযোগ করে মধ্য ভারত মহাসাগরের কোবাল্ট সমৃদ্ধ ‘আফানাসি নিকিটিন সি-মাউন্টে’ খনিজ অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়েছে। এই এলাকাটি মালদ্বীপের পূর্বে এবং ভারতীয় উপকূল থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কিমি (৮৫০ মাইল) দূরে অবস্থিত।
জাতিসংঘের সাগর আইনের কনভেনশন অনুমোদিত আইএসএ একটি স্বায়ত্তশাসিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯৯৪ সালে গঠিত এই সংস্থাটি সমুদ্র তলদেশে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অনুমোদন দিয়ে থাকে।
আবেদন বিবেচনা করার জন্য ভারত আইএসএকে ৫ লাখ ডলার ফি দিয়েছে। আবেদনে ভারত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তাবিত এলাকায় ব্যাপক ভূপদার্থ, ভূতাত্ত্বিক, জৈবিক, সমুদ্রবিজ্ঞান এবং পরিবেশগত অধ্যয়ন পরিচালনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। সি-মাউন্টটি ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার (১১৫৮ বর্গমাইল) জুড়ে ১৫০টি ব্লক নিয়ে গঠিত।
কিন্তু ভারতের আবেদন মূল্যায়ন করতে গিয়ে আইএসএ দেখতে পায়, আফানাসি নিকিতিন সি-মাউন্ট সম্পূর্ণভাবে এমন এলাকায়, যা অন্য একটি দেশ তার মহাদেশীয় সীমানার মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছে। একটি দেশের মহাদেশীয় সীমানা হলো সমুদ্রের তলদেশে তার ল্যান্ডমাসের প্রান্ত।
যদিও আইএসএ ভারতকে সেই দেশের নাম জানায়নি, তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেই দেশটি শ্রীলঙ্কা।
আল জাজিরাকে দেওয়া আইএসএর একটি নোট অনুসারে, সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষ প্রতিযোগী আঞ্চলিক দাবির ব্যাপারে ভারতের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। কিন্তু গত ১২ মার্চ ভারত বলেছে, আইএসএর ‘আইনি ও প্রযুক্তিগত কমিশনের ২৯তম অধিবেশন’ চলাকালে এ বিষয়ে দিল্লি মন্তব্য করবে না। আইএসএর এই অধিবেশনেই আবেদনটি বিবেচনাধীন রয়েছে।
আইএসএর নোটে আরও বলা হয়েছে, ফলস্বরূপ ভারতের আবেদনটি ‘মুলতবি’ করে রাখা হয়েছে। ভারত প্রতিক্রিয়া জানালে আইএসএ আবার আবেদনটি পর্যালোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার দাবি
সাধারণত একটি দেশের মহাদেশীয় সীমানা তার উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল (৩৭০ কিমি) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এটি একটি একচেটিয়ামূলক অর্থনৈতিক অঞ্চল, যা শুধু সেই জাতি অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে পারে। যদিও অন্যান্য দেশের জাহাজ এই সীমানায় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
কিন্তু উপকূলীয় দেশগুলো ইউনাইটেড ন্যাশনস কমিশন অন দ্য লিমিটস অব দ্য কন্টিনেন্টাল শেলফের (সিএলসিএস) কাছে আবেদন করতে পারে যে তাদের মহাদেশীয় সীমানা ২০০ নটিক্যাল মাইলের বেশি হতে পারে।
শ্রীলঙ্কা ২০০৯ সালে এটিই করেছিল। তার মহাদেশীয় শেলফের সীমা ২০০ নটিক্যাল মাইল থেকে বেশি বলে আবেদন করেছিল। সিএলসিএস এখনো শ্রীলঙ্কার দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে এটি গৃহীত হলে আফানাসি নিকিতিন সি-মাউন্ট শ্রীলঙ্কার সমুদ্রসীমানার মধ্যে পড়বে।
বর্ধিত মহাদেশীয় শেলফ সীমানার জন্য দেশের দাবি পরীক্ষা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএলসিএস অতীতে এই ধরনের অনুরোধ গ্রহণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ—পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নরওয়ের সমুদ্রসীমানা উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলের বেশি।
সিএলসিএসে ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কা আবেদন জমা দেওয়ার সময় আপত্তি জানায়নি ভারত। কিন্তু ২০২২ সালে অবস্থান পরিবর্তন করে নয়াদিল্লি বলে, শ্রীলঙ্কার দাবি ভারতের স্বার্থের ক্ষতি করবে। ভারত কমিশনকে শ্রীলঙ্কার আবেদনকে খারিজ করার জন্য অনুরোধ করেছে।
আল জাজিরা প্রতিযোগী দাবির বিষয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছ থেকে মন্তব্য চেয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পায়নি।
চীনা উপস্থিতি
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নয়াদিল্লির মাথাব্যথা শ্রীলঙ্কা নিয়ে নয়। একজন প্রবীণ সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানের চেয়ে এই অঞ্চলে চীনের উপস্থিতি ঠেকাতেই ভারত এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সমুদ্র বিশেষজ্ঞ ও ভারতীয় বিচার বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, দ্রুত খনিজ সম্পদ অন্বেষণ বা খনন করা ভারতের লক্ষ্য নয়, বরং চীনের উপস্থিতি ঠেকানো এবং নিজের অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
আইএসএর মতে, ভারত মহাসাগরের গভীরে বিভিন্ন অংশে অনুসন্ধানের জন্য বর্তমানে চীন, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার চুক্তি রয়েছে।
ভারতের চেন্নাইয়ের ডক্টর আম্বেদকর ল ইউনিভার্সিটির মেরিটাইম আইনের সহকারী অধ্যাপক নিখিলেশ নেদুমগাত্তুনমাল বলেছেন, আফানাসি নিকিতিন সি–মাউন্টের অবস্থান যেকোনো দেশের একক অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে। এটি আইএসএ ভারতের মামলাকে শক্তিশালী করেছে। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আইএসএর কাছ থেকে অনুসন্ধানের অনুমতি পাওয়ার অধিকার ভারতের আছে।’
ঝুঁকি কিসে?
ভারতের তিরুবনন্তপুরমের ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্স স্টাডিজের অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী কেভি থমাস ভারতের সিদ্ধান্তের পেছনে এই অঞ্চলে চীনের কার্যকলাপ নিয়ে দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার মূল্যায়ন কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন।
টমাস বলেছেন, ভারতের গভীর সমুদ্রে খনিজ সম্পদ আহরণের উদ্যোগগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন করেছে। ২০২১ সালে ভারত গভীর সমুদ্রের সম্পদ অন্বেষণের জন্য ‘গভীর মহাসাগর মিশন’ প্রকল্প চালু করে। এই প্রকল্পের প্রথম পাঁচ বছরের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
ভারত সরকার ২০২৩ সালে বলেছিল, গভীর মহাসাগর মিশনের অধীনে এটি একটি ক্রুযুক্ত গভীর সমুদ্রের খনন সাবমার্সিবল তৈরি করছে, যা সমুদ্রের তলদেশ থেকে পলিমেটালিক নডিউলসের অনুসন্ধানমূলক খনির কাজ করবে। পলিমেটালিক নডুলসকে ম্যাংগানিজ নডুলসও বলা হয়। এটি একধরনের পাথুরে পদার্থ, যা কোবাল্টসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
আন্তর্জাতিক পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংস্থা অনুসারে, চীন বর্তমানে বিশ্বের মোট কোবাল্টের ৭০ শতাংশ, লিথিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের ৬০ শতাংশসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ করে। তবে নিট-শূন্য নির্গমনের জন্য ২০৭০ সাল নির্ধারণ করা ভারতের ক্লিন এনার্জি বা পরিচ্ছন্ন শক্তির অর্থনীতির জ্বালানির জন্য এই খনিজগুলো প্রয়োজন।
আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
অত্যাধুনিক সুবিধা নিয়ে চালু হয়েছে বেনাপোল বন্দরের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল, যা সেবা ও বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করার পাশাপাশি যানজট ও পণ্যজট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ১৪ নভেম্বর এটি উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন ও শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ১৮ নভেম্বর থেকে টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু হয়।
২৭ মিনিট আগেবাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্যদের জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্র্যাক ব্যাংক এবং বেসিস-এর মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগেদেশে গত বোরো মৌসুমের পরই বাড়তে থাকে চালের দাম। ক্রেতাদের আশা ছিল, আমন মৌসুম শুরু হলে দাম কমবে। কিন্তু আশা দুরাশাই রয়ে গেছে এখন পর্যন্ত। মোকামে আমন ধান আসতে শুরু করলেও চালের বাজারে খুব একটা প্রভাব নেই। শুধু তা-ই নয়, সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েও পণ্যটির দাম কমিয়ে আনতে পারছে না।
৩ ঘণ্টা আগেআসন্ন পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রোজার ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পণ্যের ওপর থাকা অগ্রিম করও পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। তবে খেজুর আমদানির অযৌক্তিক ট্যারিফ ভ্যালু...
১২ ঘণ্টা আগে