Ajker Patrika

একের পর এক দুর্ঘটনায় দিশেহারা বোয়িংকে ছাড়িয়ে গেল এয়ারবাস

আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮: ০৬
এয়ারবাসের তুলনায় বোয়িংয়ের উৎপাদন অর্ধেকেরও কম হয়েছে। ছবি: এপিক ফ্লাইট একাডেমি
এয়ারবাসের তুলনায় বোয়িংয়ের উৎপাদন অর্ধেকেরও কম হয়েছে। ছবি: এপিক ফ্লাইট একাডেমি

বোয়িংয়ের দুর্দিনের অন্ত মিলছে না। একের পর এক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা অন্ধকারে ঢেকে দিচ্ছে বোয়িংয়ের ভবিষ্যৎ। গত বছরের জুলাইয়ে কেলি অর্টবার্গ দায়িত্ব নিয়ে বোয়িং পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু বছরের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘটে যাওয়া বড় উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তাঁর পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। তার আগে বছরের শুরুতে মাঝ আকাশে বোয়িংয়ের একটি উড়োজাহাজের দরজার প্যানেল খুলে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় হয়। বোয়িংয়ের ত্রুটিপূর্ণ উড়োজাহাজ নিয়ে আলোচনা ছিল বছরজুড়েই।

১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বোয়িংয়ের আকাশে কালো মেঘ জমতে থাকে মূলত ২০১৮ সাল থেকে। সে বছর রেকর্ড ৮০৬ উড়োজাহাজ সরবরাহ করেছিল এই মার্কিন কোম্পানি। সে বছরই ৭৩৭ ম্যাক্স সিরিজের উড়োজাহাজে দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পর মাত্র ১৩ মিনিটে লায়ন এয়ারের ফ্লাইট ৬১০ সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয়, সলিলসমাধি হয় ৮৯ জনের। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ৩০২ ইথিওপিয়া থেকে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি যাওয়ার পথে উড্ডয়নের ৬ মিনিট পর বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৫৭ জন নিহত হন।

ওই দুটি দুর্ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স সিরিজের সব উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করা হয়। বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বোয়িং। এরপর কোভিড মহামারির কারণে কয়েক মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণ প্রায় বন্ধ ছিল, যার ফলে বোয়িংয়ের আয় কমতে থাকে।

২০২৩ সালে এসে এয়ারলাইনগুলোর কাছে বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ বিক্রি একলাফে ৭৭৪টি থেকে ৫২৮টিতে নেমে আসে। ২০২৪ সালে সেটা আরও নিম্নমুখী হয়। সদ্য বিদায়ী বছরে বোয়িং ৩৪০টি উড়োজাহাজ বিক্রি করেছে বলে ফ্লাইট প্ল্যানের পূর্বাভাসের বরাতে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

২০২৩ সালে এসে এয়ারলাইনগুলোর কাছে বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ বিক্রি একলাফে ৭৭৪টি থেকে ৫২৮টিতে নেমে আসে। ২০২৪ সালে সেটা আরও নিম্নমুখী হয়। সদ্য বিদায়ী বছরে বোয়িং ৩৪০টি উড়োজাহাজ বিক্রি করেছে বলে ফ্লাইট প্ল্যানের পূর্বাভাসের বরাতে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের তুলনায় বোয়িংয়ের উৎপাদন হয়েছে অর্ধেকেরও কম। গত বছর এয়ারবাস ৭৬৬টি উড়োজাহাজ বিক্রি করেছে, যা বোয়িংয়ের সম্ভাব্য বিক্রির দ্বিগুণ।

গত ডিসেম্বরের শেষে জেজু এয়ার উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থার বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান উড়োজাহাজ বন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র দুজন বেঁচে ফেরেন।

এর আগে বছরের শুরুতে মাঝ আকাশে বোয়িংয়ের একটি উড়োজাহাজের দরজার প্যানেল উড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, মেরামতের পর চারটি বোল্ট সঠিকভাবে লাগানো হয়নি।

সে ঘটনাটি এত আলোড়ন না ফেললেও ডিসেম্বরের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ার দুর্ঘটনাটি আবারও সব আলোচনা সামনে নিয়ে এল। এত বড় দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। উড়োজাহাজের কোনো নকশাগত ত্রুটিকে সরাসরি দায়ী না করা হলেও বোয়িংয়ের ত্রুটিপূর্ণ উড়োজাহাজের ইতিহাস এখন পর্যন্ত সব আলোচনাকে সেদিকে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে বোয়িংয়ের দুর্দশার পুরো সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি এয়ারবাস। নিজস্ব বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি এই কোম্পানি। ২০২৪ সালে এয়ারবাসের বার্ষিক সরবরাহ লক্ষ্য ছিল ৭৭০টি। বছরের মাঝামাঝি এসে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়। তবে তারা দাবি করে, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। সম্ভাব্য ভবিষ্যতে এয়ারবাস তাদের ২০১৯ সালের রেকর্ড বার্ষিক উৎপাদন ৮৬৩ ইউনিটকে ছাড়িয়ে যাবে।

গত বৃহস্পতিবার এয়ারবাসের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিভাগের প্রধান নির্বাহী ক্রিশ্চিয়ান শেরার বলেন, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করেও কোম্পানি (এয়ারবাস) একটি ভালো বছর পার করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা উৎপাদন বাড়াচ্ছি না। যতটা আমাদের গ্রাহকেরা বা আমরা চাই, তার চেয়ে বেশি উৎপাদন করা হবে না।’

তবে বোয়িং নিয়ে আশার খবর জানিয়েছে উড়োজাহাজ শিল্প প্রকাশনা এয়ার কারেন্ট। এক প্রতিবেদনে তারা জানায়, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উৎপাদন কার্যক্রম বাড়ানোর চেষ্টা করছে বোয়িং। নতুন প্রধান নির্বাহী অর্টলিগ বোয়িংয়ের সর্বাধিক বিক্রীত ৭৩৭ ম্যাক্স জেটের সরবরাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন। আগামী মে মাস থেকে প্রতি মাসে ৩৮টি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন তিনি।

তবে উড়োজাহাজগুলোর একের পর এক বড় দুর্ঘটনার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎপাদন হার বাড়িয়ে বোয়িং মাসিক লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম হবে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকেরা।

আর্থিক গবেষণা ও বিনিয়োগ পরামর্শদানকারী প্রতিষ্ঠান বার্নস্টিনের বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘মাসে ৩৮টি উড়োজাহাজ উৎপাদনের পরিকল্পনাটি বেশ উৎসাহের সঙ্গে এগিয়ে চলছে মনে হচ্ছে। তবে বোয়িং এখনো পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটার প্রমাণ দিতে পারেনি। তারা মে মাসে সময় নির্ধারণ করে দিলেও পরবর্তীকালে বলেছে ৩৮টি উড়োজাহাজ উৎপাদনের সক্ষমতায় পৌঁছাতে জুলাই মাস গড়াবে। এ ছাড়া, নতুন ব্যবস্থাপকদের উৎপাদন বাড়ানোর অভিজ্ঞতার অভাব নিয়েও তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

গত মাসে গবেষণা এবং বিশ্লেষণমূলক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিটসাইটসের বিশ্লেষক ম্যাট উডরুফ বলেন, বোয়িংয়ের উৎপাদন বাড়ানোর হার প্রায় ‘অবাস্তব’। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্যাব ও বিএসটিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ক্যাব ও বিএসটিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাব এ তথ্য জানায়।

ক্যাব জানায়, গতকাল রোববার বিএসটিআইয়ের কাউন্সিল সভা শেষে আয়োজিত এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ক্যাবের সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ও বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া ও বিএসটিআইয়ের কাউন্সিলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে মানসম্মত ও নিরাপদ পণ্য নিশ্চিতকরণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বিভাগীয় ও জেলাপর্যায়ে বাজার মনিটরিং ও তদারকি কার্যক্রমে সহযোগিতা, নকল ও ভেজালবিরোধী উদ্যোগ জোরদার, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ এবং তথ্যভিত্তিক উদ্যোগ যৌথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায্য বাজারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থ্রি-হুইলারের লাইসেন্স ও রুট পারমিটের নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির গতি বাড়বে: সিপিডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
থ্রি-হুইলারের লাইসেন্স ও রুট পারমিটের নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির গতি বাড়বে: সিপিডি

দেশে মূলধারার বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি থ্রি-হুইলার রিকশা ব্যাপক হারে বেড়েছে। যার নেই কোনো রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে চলাচল করছে এসব যান। ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এসব থ্রি-হুইলার নিয়ন্ত্রণে অনেক আওয়াজ উঠছে। কিন্তু কার্যত বন্ধ বা সামনে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে নীতিমালা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এই নীতিমালার বাস্তবায়ন হলে থ্রি-হুইলার দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে অর্থনীতির গতি আরও বেগবান হবে।

আজ সোমবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ‘স্টাডি অন ইন্টিগ্রিটিংস ইলেকট্রনিক থ্রি-হুইলার ইনটু ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়েফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির প্রোগ্রাম সহযোগী মো. খালিদ মাহমুদ বলেন, দেশে লাখ লাখ যানবাহন চলে। কিন্তু নিবন্ধিত আছে মাত্র সাড়ে ২২ হাজার। এর বাইরে থ্রি-হুইলার রিকশা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে। সেবা নিচ্ছেন ১১২ কোটি মানুষ, যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এত বড়সংখ্যক যানের রেজিস্ট্রেশন নেই। যারা চালান, তাঁদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ। এতে দক্ষতা বাড়ছে না। মুখের কথায় চলে এসব যান। যদি প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা যায়, তখন একটা আয় পাবে সরকার। আবার নীতিমালার কারণে ক্ষতি কমবে। যাঁরা এর সঙ্গে জড়িত, তাঁদের আয় বাড়বে। যার বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।

খালিদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘নীতিমালা ছাড়া লাখ লাখ থ্রি-হুইলার চলছে। এই গণপরিবহন যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে চলছে। এটার সিস্টেম দাঁড় করাতে হবে। স্ট্রাকচার থাকতে হবে। ব্যাটারি ক্যাপাসিটি নির্ধারণ করতে হবে। ইলেকট্রনিক যান হওয়ায় পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কীভাবে কার অনুমোদন নিয়ে চলবে, নির্ধারণ করতে হবে। আইনের আওতায় আনা জরুরি। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি দিতে হবে ৷ তখন এলোমেলো চলাচল নিয়ন্ত্রণ হবে। মানুষ উন্নত সেবা পাবে।

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের যানের প্রায় ৪০ লাখ চালক, তাঁদের পরিবারসহ বিশাল জনগোষ্ঠী সুবিধাভোগী। তাঁদের রোড নেটওয়ার্ক, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক সেফটি, এয়ার কোয়ালিটির ব্যবস্থাপনার সুনির্দিষ্ট কাঠামো ও নীতিমালা জরুরি।

অনুষ্ঠানে নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন এবং চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন করা এবং ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ না করা; বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় বন্ধ করতে ইলেকট্রিক বা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা; প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত, স্বল্পগতির ও লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস রোড/বাই লেন নির্মাণ করা; ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক জব্দ বন্ধ করা, জব্দ গাড়ি ও ব্যাটারি ফেরত দেওয়া; চালকসহ সংশ্লিষ্টদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ করা এবং চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইস্টার্ন ব্যাংক ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস-২০২৫ জিতল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৪
ইস্টার্ন ব্যাংক ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস জিতেছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইস্টার্ন ব্যাংক ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস জিতেছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) কাছ থেকে এক্সিলেন্স ইন বিজনেস পে-আউট পুরস্কার পেয়েছে নগদ। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটাল রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা ৪০টি সহযোগী মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানিয়েছে।

এবার দ্বিতীয়বারের মতো ইবিএল এই আয়োজন করেছে। এবারের অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘স্কাইস্ফ্রি: ইবিএল ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস-২০২৫’।

গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি কনভেনশন হলে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইবিএল তার ব্যবসায়িক সহযোগীদের সম্মাননা জানায়।

অনুষ্ঠানে পুরস্কার দেন ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রেজা ইফতেখার। নগদের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, সহযোগী প্রশাসক আনোয়ার উল্লাহ ও নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া। এ সময় ইবিএলের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদ আনোয়ার, হেড অব ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস আহসান উল্লাহ চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইবিএলের এবারের আয়োজনে নগদ পে-আউট ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছে, কারণ বাংলাদেশের ডিজিটাল লেনদেনকে এগিয়ে নিতে অসামান্য অবদান রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। নগদ পে-আউট সলিউশন ও ইভল্যুশনে তাদের প্রভাব রেখেছে এবং বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় চার দিনের আবাসন মেলার শুরু বুধবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেলার তথ্য জানায় রিহ্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেলার তথ্য জানায় রিহ্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) আয়োজনে ঢাকায় চার দিনব্যাপী আবাসন মেলা ‘রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৫’ আগামী বুধবার শুরু হচ্ছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত এবারের মেলায় আবাসন, নির্মাণসামগ্রীসহ বিভিন্ন খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ২২০টি স্টল থাকবে। ২৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তিন দিনের সরকারি ছুটি থাকায় এবারের মেলায় ভালো সাড়া পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করেন আয়োজকেরা।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানায় রিহ্যাব। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান, সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, রিহ্যাব পরিচালক ও মিডিয়া স্টানিং কমিটির চেয়ারম্যান লাবিব বিল্লাহ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের মেলায় মোট ২২০টি স্টল থাকবে। এতে অংশ নিচ্ছে চারটি ডায়মন্ড স্পনসর, সাতটি গোল্ড স্পনসর, ১০টি কো-স্পনসর, ১৪টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস প্রতিষ্ঠান ও ১২টি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান। মেলায় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। প্রবেশ টিকিটের মূল্য সিঙ্গেল এন্ট্রি ৫০ টাকা ও মাল্টিপল এন্ট্রি ১০০ টাকা। টিকিট বিক্রির সম্পূর্ণ অর্থ রিহ্যাবের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে। প্রতিদিন রাত ৯টায় র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

রিহ্যাব নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে আবাসন খাত স্থবির হয়ে পড়েছিল। তবে ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত নতুন ড্যাপ ও ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা-২০২৫ আবাসন খাতে নতুন গতি আনবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবাসন খাত শুধু মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করছে না; বরং সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রড-সিমেন্টসহ ২০০টির বেশি লিংকেজ শিল্পের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বর্তমানে নির্মাণ খাতের অবদান জাতীয় অর্থনীতিতে প্রায় ১৫ শতাংশ এবং এ খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২ কোটি মানুষ।

রিহ্যাব নেতারা বলেন, রিহ্যাব ফেয়ার ক্রেতাদের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এক ছাদের নিচে ফ্ল্যাট ও প্লট কেনাবেচা, গৃহঋণ সুবিধা, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এবং আধুনিক নির্মাণসামগ্রী যাচাইয়ের সুযোগ পাওয়া যায়। ব্যস্ত জীবনে আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠানে ঘুরে তথ্য সংগ্রহের পরিবর্তে এ মেলা ক্রেতাদের জন্য সময় ও সিদ্ধান্ত নেওয়াকে সহজ করে।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, নতুন ড্যাপ ও ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা, ২০২৫-এ পুরোনো জটিলতা ও বৈষম্য অনেকাংশে দূর করা হয়েছে। নতুন ড্যাপ ও বিধিমালা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং আবাসন খাতকে দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীল করবে।

তিন দিন ছুটি থাকায় এবারের মেলায় লোকসমাগম অনেক বাড়বে—এমন প্রত্যাশা করেন রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এই ফেয়ার শুধু একটি প্রদর্শনী নয়; এটি ক্রেতা ও ডেভেলপারদের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের একটি বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম। একসঙ্গে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প মান, অবস্থান, সুযোগ-সুবিধা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ রিহ্যাব ফেয়ার ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত