কামরুল হাসান

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে