Ajker Patrika

রাজধানীতে ওলামা দল নেতার ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

ঢামেক প্রতিনিধি ও নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা 
Thumbnail image
দনিয়া কলেজের সামনে ছুরিকাঘাতে নিহত মিনহাজুর রহমান (২৫)। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে এক প্রকৌশলীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বিরোধের ‘জের’ হিসেবে দেখছেন নিহত মিনহাজুর রহমানের (২৫) বন্ধু ও স্বজনেরা।

মিনহাজুর বেসরকারি একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে লেখাপড়া শেষ করে সফটওয়্যার ফার্মে চাকরি করছিলেন। বন্ধু ও স্বজনেরা বলছেন, তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বাবা ওলামা দলের নেতা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ফারুক বলেন, গুরুতর অবস্থায় মিনহাজকে হাসপাতালে আনা হয়। রাত পৌনে ৮টায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে।

মিনহাজুরকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর বন্ধু ও স্বজনেরা। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা তানজিল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের স্থানীয় এক নেতাসহ কয়েকজন মিনহাজুরকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে চলে যায়। আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সে কদমতলি সাদ্দাম মার্কেট তুষারধারা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত।’

তানজিল বলেন, গত পরশুদিন মাহফুজসহ কয়েকজন তানজিলকে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। মঙ্গলবার দনিয়া কলেজের সামনে মিনহাজকে একা পেয়ে কুপিয়ে আহত করে। সংবাদ পেয়ে দ্রুত মিনহাজকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তানজিল জানান, মিনহাজ দনিয়া কলেজের সাবেক ছাত্র। নুরপুর এলাকার মাহফুজ, শাওন, সাইফুল, সোহান, সৌরভ তাঁরাও দনিয়া কলেজে পড়তেন। এর মধ্যে সাইফুল ও সোহান ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। মিনহাজ ছাত্রদলের সমর্থক ছিলেন। এসব বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে মিনহাজের দ্বন্দ্ব ছিল। ছাত্র আন্দোলনে মিনহাজ সক্রিয় ছিলেন।

তিনি বলেন, গত পরশুদিন মাহফুজ সহ কয়েকজন তানজিলকে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আজকে দনিয়া কলেজের সামনে মিনহাজকে একা পেয়ে কুপিয়ে আহত করে। সংবাদ পেয়ে দ্রুত মিনহাজকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে মারা যায়।

মিনহাজ নারায়ণগঞ্জ পলিটেকনিক কলেজ থেকে পাস করেন। একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করতেন বলেও জানান তানজিল।

মিনহাজের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার সোনারাপুর গ্রামে। বাবার নাম রফিকুল ইসলাম। বর্তমানে কদমতলি সাদ্দাম মার্কেট তুষারধারা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত।

এর আগে নিহতের ভগ্নিপতি খালিদ মাহফুজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, মিনহাজুরদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুরে। তাঁর বাবা রফিকুল ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক। মিনহাজ নিজেও বিএনপির রাজনীতি করতেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।

ঘটনার বিষয়ে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সন্ধ্যায় দনিয়া কলেজের সামনে ছুরিকাঘাতে মিনহাজুর নামের একজন গুরুতর আহত হলে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। কারা ও কী কারণে হামলা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, শনিরআখড়া এলাকা থেকে ওই যুবককে মুমূর্ষু অবস্থায় বন্ধুরা হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বন্ধুরা জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে কুপিয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত