ডিজেলের দাম বাড়ানোর অজুহাতে বগুড়ার শেরপুরে গ্যাসচালিত করতোয়া গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় অব্যাহত আছে । রাতে গ্যাস ভরে দিনে ডিজেল চালিত বলে চালু রয়েছে এই কার্যক্রম। এ বিষয়ে প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।

জানা যায়, দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৮ নভেম্বর থেকে দেশে ডিজেল চালিত পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে সরকার। সেই অজুহাতে শেরপুর থেকে বগুড়াগামী গ্যাসচালিত করতোয়া গেটলকের ভাড়া ২৫ টাকা থেকে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। পরিবহন মালিকদের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন যাত্রী সাধারণরা।

এ বিষয়ে এনজিও কর্মী রফিকুল আমিন বলেন, প্রতিদিন শেরপুর থেকে বগুড়ায় যাতায়াত করতে হয়। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অন্যদিকে অন্যায়ভাবে গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসেব মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে ডিজেল ও গ্যাস চালিত গাড়ি পৃথক্‌করণে স্থানীয় প্রশাসনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় তা স্থায়ী রূপ নিতে চলেছে। 

চাকরিজীবী আবু তাহের বলেন, করতোয়া গেটলক গাড়িগুলো রাতে গ্যাস ভরায়। কিন্তু দিনে ডিজেলের গাড়ি দাবি করে ১০ টাকা ভাড়া বেশি নিচ্ছে। প্রতিবাদ করলে নেমে যেতে বলে। 

আইনজীবী মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি লাল ও সবুজ স্টিকার লাগিয়ে ডিজেল ও গ্যাস চালিত গাড়ি চিহ্নিত করা হচ্ছে। অথচ শেরপুরে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের এ ধরনের কার্যক্রম চোখে পড়ে নাই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস মালিক বলেন, শেরপুর-বগুড়া রুটে ৬৫টি করতোয়া গেটলকের ৩৮টি বাস গ্যাসে চলে। প্রতি ১০ মিনিট পর পর গাড়িগুলো চলাচল করে। সরকার ডিজেল চালিত গাড়ির ভাড়া বৃদ্ধি করলেও গ্যাস চালিতগুলোর করে নাই। এখন একই সার্ভিসের গাড়ি ভাড়ার পার্থক্য যদি ১০ টাকা হয় তাহলে যাত্রীরা ডিজেল চালিত গাড়িতে চড়বে না। তাহলে আমাদের গাড়িগুলো বন্ধ রাখতে হবে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, গত ১১ নভেম্বর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে নির্বাচন থাকায় আমরা ব্যস্ত ছিলাম। এ জন্য মাঠে নামতে না পারলেও মালিক সমিতির সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। 

করতোয়া গেটলকের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে নির্বাহী কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেহেতু গাড়িগুলোর ভাড়া জেলা থেকে নির্ধারিত হয় তাই আমি প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। ভাড়া নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে।