তাসনিম মহসিন, পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে
‘হাজারো লাঠি ও ইট দিয়ে টিনের বাড়িতে হামলা করে। এমন শব্দ হতে থাকে যে, মানুষ ঘর ছেড়ে যে যার মতো পালায়। ধানের উচ্চতা বেশি থাকায় বেশির ভাগ মানুষ ধানখেতে শুয়ে লুকায়। আবার কিছু মানুষ প্রতিবেশী মুসলিমদের বাড়িতেও লুকায়।’ ১৭ অক্টোবর রংপুরের পীরগঞ্জে হামলার সময়ের বর্ণনা এভাবেই দিলেন কেশব সরকার। ৪০ বছর বয়সী এই জেলের স্মৃতিতে এমন দৃশ্য আর নেই।
রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা একসঙ্গে বাস করে আসছে দীর্ঘদিন। কিন্তু এবার দুর্গাপূজার পরপর রামনাথপুরের উত্তর জেলেপাড়ায় যা ঘটল, তার ক্ষত থেকে যাবে দীর্ঘদিন। সরকারি-বেসরকারি নানা সহায়তা এখন আসছে। বিধ্বস্ত ভূমিতেই আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মানুষ। কিন্তু সেদিনের সেই দৃশ্য, সেই আতঙ্ক রয়ে গেছে, রয়ে যাবে দীর্ঘদিন।
গত ১৭ অক্টোবর ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুরের জেলেপল্লিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ২৪টি পরিবারের বসতঘরে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এই দুঃসময়ে দীর্ঘদিনের মুসলিম প্রতিবেশীদের কাছে আশ্রয় পেলেও জেলেপল্লির মানুষদের প্রত্যাশাটা কিছুটা বেশি ছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, হামলাকারীদের সামনে তাঁদের হয়ে প্রতিবেশী মুসলিমেরা হয়তো দাঁড়াবেন। কিন্তু তেমনটি হয়নি। অবশ্য এমন মারমুখী পরিস্থিতিতে প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়াটা এক-দুজনের পক্ষে সম্ভবও নয়। সেটা তাঁরা বোঝেন; কিন্তু তাতে তৈরি হওয়ার ক্ষতের ওপর প্রলেপ পড়ে না।
ফেরা যাক কেশব সরকারের বয়ানে। সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে উত্তর জেলেপল্লির এ বাসিন্দা বলেন, ‘সন্ধ্যায় যখন সমস্যা শুরু হয়। তখন আমরা সবাই মন্দিরের সামনে চলে আসি। আমাদের মহৎ (নেতা) তখন বলেন, “যে যার বাড়িতে চলে যান। যা হয় দেখা যাবে। সমস্যা তো আর আমাদের সঙ্গে না। ” ফলে সবাই যে যার বাড়িতে চলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ভয় পাই, যখন হাজারো লাঠি ও ইট দিয়ে টিনের বাড়িতে হামলা করে। এমন শব্দ হতে থাকে যে, মানুষ ঘর ছেড়ে যে যার মতো পালায়। ধানের উচ্চতা বেশি থাকায় বেশির ভাগ মানুষ ধানখেতে শুয়ে লুকায়। আবার কিছু মানুষ প্রতিবেশী মুসলিমদের বাড়িতেও লুকায়। শত শত লোক “নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর” বলে হামলা চালায়।’
গতকাল সোমবার রাতে রামনাথপুরের উত্তর জেলেপাড়ার মন্দিরের সামনে গেলে সেখানে জেলেপল্লির মানুষদের জটলা দেখা যায়। পীরগঞ্জ উপজেলার পূজা উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক সুধীর চন্দ্র রায়, পৌরসভার পূজা উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক সুনীল চন্দ্র এবং পৌরসভার পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপুল চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা পাওয়া নিয়ে বৈঠক চলছিল তখন।
সেখানে উপস্থিত ভাদই রানি (৪৮) আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেন। আলাপে আলাপে জানালেন, পেশায় শ্রমিক এই নারীর স্বামী বেশ আগেই মারা গেছেন। বয়স্ক শাশুড়ি থাকেন তাঁর সঙ্গে। দুই ছেলে, দুই মেয়ের সবার বিয়ে হয়েছে। চার ছেলেমেয়ের চার নাতিনাতনি। দুই ছেলে পেশায় জেলে। দুই মেয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকেন। পূজার সময়ে স্বামী সন্তানদের নিয়ে এসেছিলেন রামনাথপুরের উত্তর জেলেপাড়ায়। সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু সেদিনের ঘটনাই সব ওলটপালট করে দিল। না কাউকে হারাতে হয়নি। কিন্তু এক ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।
হামলার সময় কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলেন—জানতে চাইলে ভাদই রানি বলেন, ‘আমাদের চারপাশেই ধানখেত। যখন হামলা হয়, তখন বুড়ো শাশুড়ি, ছেলেমেয়ে, নাতিনাতনিদের নিয়ে পাশের ধানখেতে লুকাই। খুবই ভয়ের মধ্যে ছিলাম, কী হয়। এ যাত্রায় বাঁচতে পারব কি না, তা নিয়েও ছিল সংশয়।’
সেই যে লুকালেন, তারপর অনেক ক্ষণ সেখানেই ছিলেন। প্রশাসনের লোকেদের উপস্থিতি বাড়লে কিছুটা আশ্বস্ত হন। তখন সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন ধানখেত থেকে। বললেন, ‘প্রশাসনের লোকের উপস্থিতি বাড়লে, আমরা বাসায় ফিরে আসি।’
এ এলাকার হিন্দু-মুসলিম একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে বসবাস করছে দীর্ঘদিন। যে যার ধর্ম পালন করছে। সাম্প্রদায়িক মনোভাব যে নেই, তা নয়। কিন্তু এটি এত দিন এমন কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেনি কখনো। বাজারেই কথা হয়েছিল রামনাথপুর ১৩ নম্বর ইউনিয়নের কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এই প্রথম পীরগঞ্জে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে।’
একই কথা বললেন কৃষক লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি মো. আনোয়ারুল মণ্ডল। এমন কিছু এর আগে দেখেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। বছরের পর বছর হিন্দু-মুসলিম একত্রে বসবাস করে আসছি। তারা মাছ ধরে, মাছ ব্যবসা করে। আর সেই মাছ আমরাই কিনে থাকি। ফলে একজন আরেকজনের ওপর নির্ভরশীল।’
সেই নির্ভরশীলতার ভিতে একটা বড় দাগ পড়ল এবার। জেলেপল্লির নিরীহ মানুষগুলোর প্রশ্ন—এমন একটি হামলা হলো, প্রতিবেশী মুসলিম পরিবারগুলো কোনো প্রতিবাদ করল না কেন? আবার এও মানছেন যে, প্রতিবেশী কয়েকটি মুসলিম পরিবার ঠিকই আক্রান্তদের আশ্রয় দিয়েছিল। এ অবস্থায় প্রশাসন কি আরও কিছু করতে পারত?
সুধীর চন্দ্র রায় ও বিপুল চন্দ্র সরকারের দাবি, এ হামলা ছিল পরিকল্পিত। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ হামলা চালানো হয়েছে। বিপুল চন্দ্র সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিকেলে একজন ফোন করে দক্ষিণ জেলেপল্লির কথা জানায়। এ ঘটনা জানার পরপরই সন্ধ্যার সময় জাতীয় সংসদের স্পিকারের একান্ত সহকারীকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। সেই সঙ্গে সুরক্ষা দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
সমস্যা তো হয়েছিল দক্ষিণ জেলেপল্লিতে উত্তর জেলেপল্লিতে হামলা হবে—এর ধারণা কীভাবে পেলেন? এর উত্তরে বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘তাদের হামলাটি ছিল পরিকল্পিত এবং সংখ্যালঘুর ওপর।’
এদিকে পীরগঞ্জের জেলেপল্লিতে হামলার ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তার সুস্পষ্ট ধারণা নেই ১৩ নম্বর ইউনিয়নের মুসলিম জনগোষ্ঠীরও। আর জেলেপল্লির হিন্দু জনগোষ্ঠীর দাবি আন্দোলন যারা করেছে, তারাই হামলা চালিয়েছে। একটা অবিশ্বাস যে ঢুকে পড়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর শুশ্রূষার জন্য সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী হিসেবে মুসলিম প্রতিবেশীদেরই এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
‘হাজারো লাঠি ও ইট দিয়ে টিনের বাড়িতে হামলা করে। এমন শব্দ হতে থাকে যে, মানুষ ঘর ছেড়ে যে যার মতো পালায়। ধানের উচ্চতা বেশি থাকায় বেশির ভাগ মানুষ ধানখেতে শুয়ে লুকায়। আবার কিছু মানুষ প্রতিবেশী মুসলিমদের বাড়িতেও লুকায়।’ ১৭ অক্টোবর রংপুরের পীরগঞ্জে হামলার সময়ের বর্ণনা এভাবেই দিলেন কেশব সরকার। ৪০ বছর বয়সী এই জেলের স্মৃতিতে এমন দৃশ্য আর নেই।
রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা একসঙ্গে বাস করে আসছে দীর্ঘদিন। কিন্তু এবার দুর্গাপূজার পরপর রামনাথপুরের উত্তর জেলেপাড়ায় যা ঘটল, তার ক্ষত থেকে যাবে দীর্ঘদিন। সরকারি-বেসরকারি নানা সহায়তা এখন আসছে। বিধ্বস্ত ভূমিতেই আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মানুষ। কিন্তু সেদিনের সেই দৃশ্য, সেই আতঙ্ক রয়ে গেছে, রয়ে যাবে দীর্ঘদিন।
গত ১৭ অক্টোবর ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুরের জেলেপল্লিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ২৪টি পরিবারের বসতঘরে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এই দুঃসময়ে দীর্ঘদিনের মুসলিম প্রতিবেশীদের কাছে আশ্রয় পেলেও জেলেপল্লির মানুষদের প্রত্যাশাটা কিছুটা বেশি ছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, হামলাকারীদের সামনে তাঁদের হয়ে প্রতিবেশী মুসলিমেরা হয়তো দাঁড়াবেন। কিন্তু তেমনটি হয়নি। অবশ্য এমন মারমুখী পরিস্থিতিতে প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়াটা এক-দুজনের পক্ষে সম্ভবও নয়। সেটা তাঁরা বোঝেন; কিন্তু তাতে তৈরি হওয়ার ক্ষতের ওপর প্রলেপ পড়ে না।
ফেরা যাক কেশব সরকারের বয়ানে। সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে উত্তর জেলেপল্লির এ বাসিন্দা বলেন, ‘সন্ধ্যায় যখন সমস্যা শুরু হয়। তখন আমরা সবাই মন্দিরের সামনে চলে আসি। আমাদের মহৎ (নেতা) তখন বলেন, “যে যার বাড়িতে চলে যান। যা হয় দেখা যাবে। সমস্যা তো আর আমাদের সঙ্গে না। ” ফলে সবাই যে যার বাড়িতে চলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ভয় পাই, যখন হাজারো লাঠি ও ইট দিয়ে টিনের বাড়িতে হামলা করে। এমন শব্দ হতে থাকে যে, মানুষ ঘর ছেড়ে যে যার মতো পালায়। ধানের উচ্চতা বেশি থাকায় বেশির ভাগ মানুষ ধানখেতে শুয়ে লুকায়। আবার কিছু মানুষ প্রতিবেশী মুসলিমদের বাড়িতেও লুকায়। শত শত লোক “নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর” বলে হামলা চালায়।’
গতকাল সোমবার রাতে রামনাথপুরের উত্তর জেলেপাড়ার মন্দিরের সামনে গেলে সেখানে জেলেপল্লির মানুষদের জটলা দেখা যায়। পীরগঞ্জ উপজেলার পূজা উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক সুধীর চন্দ্র রায়, পৌরসভার পূজা উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক সুনীল চন্দ্র এবং পৌরসভার পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপুল চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা পাওয়া নিয়ে বৈঠক চলছিল তখন।
সেখানে উপস্থিত ভাদই রানি (৪৮) আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেন। আলাপে আলাপে জানালেন, পেশায় শ্রমিক এই নারীর স্বামী বেশ আগেই মারা গেছেন। বয়স্ক শাশুড়ি থাকেন তাঁর সঙ্গে। দুই ছেলে, দুই মেয়ের সবার বিয়ে হয়েছে। চার ছেলেমেয়ের চার নাতিনাতনি। দুই ছেলে পেশায় জেলে। দুই মেয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকেন। পূজার সময়ে স্বামী সন্তানদের নিয়ে এসেছিলেন রামনাথপুরের উত্তর জেলেপাড়ায়। সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু সেদিনের ঘটনাই সব ওলটপালট করে দিল। না কাউকে হারাতে হয়নি। কিন্তু এক ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।
হামলার সময় কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলেন—জানতে চাইলে ভাদই রানি বলেন, ‘আমাদের চারপাশেই ধানখেত। যখন হামলা হয়, তখন বুড়ো শাশুড়ি, ছেলেমেয়ে, নাতিনাতনিদের নিয়ে পাশের ধানখেতে লুকাই। খুবই ভয়ের মধ্যে ছিলাম, কী হয়। এ যাত্রায় বাঁচতে পারব কি না, তা নিয়েও ছিল সংশয়।’
সেই যে লুকালেন, তারপর অনেক ক্ষণ সেখানেই ছিলেন। প্রশাসনের লোকেদের উপস্থিতি বাড়লে কিছুটা আশ্বস্ত হন। তখন সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন ধানখেত থেকে। বললেন, ‘প্রশাসনের লোকের উপস্থিতি বাড়লে, আমরা বাসায় ফিরে আসি।’
এ এলাকার হিন্দু-মুসলিম একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে বসবাস করছে দীর্ঘদিন। যে যার ধর্ম পালন করছে। সাম্প্রদায়িক মনোভাব যে নেই, তা নয়। কিন্তু এটি এত দিন এমন কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেনি কখনো। বাজারেই কথা হয়েছিল রামনাথপুর ১৩ নম্বর ইউনিয়নের কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এই প্রথম পীরগঞ্জে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে।’
একই কথা বললেন কৃষক লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি মো. আনোয়ারুল মণ্ডল। এমন কিছু এর আগে দেখেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। বছরের পর বছর হিন্দু-মুসলিম একত্রে বসবাস করে আসছি। তারা মাছ ধরে, মাছ ব্যবসা করে। আর সেই মাছ আমরাই কিনে থাকি। ফলে একজন আরেকজনের ওপর নির্ভরশীল।’
সেই নির্ভরশীলতার ভিতে একটা বড় দাগ পড়ল এবার। জেলেপল্লির নিরীহ মানুষগুলোর প্রশ্ন—এমন একটি হামলা হলো, প্রতিবেশী মুসলিম পরিবারগুলো কোনো প্রতিবাদ করল না কেন? আবার এও মানছেন যে, প্রতিবেশী কয়েকটি মুসলিম পরিবার ঠিকই আক্রান্তদের আশ্রয় দিয়েছিল। এ অবস্থায় প্রশাসন কি আরও কিছু করতে পারত?
সুধীর চন্দ্র রায় ও বিপুল চন্দ্র সরকারের দাবি, এ হামলা ছিল পরিকল্পিত। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ হামলা চালানো হয়েছে। বিপুল চন্দ্র সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিকেলে একজন ফোন করে দক্ষিণ জেলেপল্লির কথা জানায়। এ ঘটনা জানার পরপরই সন্ধ্যার সময় জাতীয় সংসদের স্পিকারের একান্ত সহকারীকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। সেই সঙ্গে সুরক্ষা দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
সমস্যা তো হয়েছিল দক্ষিণ জেলেপল্লিতে উত্তর জেলেপল্লিতে হামলা হবে—এর ধারণা কীভাবে পেলেন? এর উত্তরে বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘তাদের হামলাটি ছিল পরিকল্পিত এবং সংখ্যালঘুর ওপর।’
এদিকে পীরগঞ্জের জেলেপল্লিতে হামলার ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তার সুস্পষ্ট ধারণা নেই ১৩ নম্বর ইউনিয়নের মুসলিম জনগোষ্ঠীরও। আর জেলেপল্লির হিন্দু জনগোষ্ঠীর দাবি আন্দোলন যারা করেছে, তারাই হামলা চালিয়েছে। একটা অবিশ্বাস যে ঢুকে পড়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর শুশ্রূষার জন্য সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী হিসেবে মুসলিম প্রতিবেশীদেরই এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১৭ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১৭ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১৭ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
২১ দিন আগে