শিক্ষার্থী পাচ্ছে না বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, ১২০০ আসন খালি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ২১: ৫০

শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো। এ বছর ১ হাজার ২০০ আসন খালি রয়েছে। এতে শিক্ষা ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটি হুমকির মুখে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)। 

আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থী সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। 

লিখিত বক্তব্য বলা হয়, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চিকিৎসা শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে। বেসরকারি মেডিকেল চালুর পর শিক্ষার্থীরা পছন্দমতো মেডিকেল কলেজে মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পেতেন। গত বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির ব্যাপারে অটোমেশন চালু করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহী হচ্ছেন।

বিপিএমসিএর সভাপতি এম এ মুবিন খান বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ সেক্টর ধ্বংসের নীলনকশা করা হয়েছে। প্রাইভেট সেক্টরে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা নিজের চয়েজমতো ভর্তি হবেন। কিন্তু অটোমেশনে তাঁরা তা পারছেন না। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাই হতাশ। হাত-পা বেঁধে পানিতে সাঁতার কাটার মতো অবস্থায় অটোমেশন। 

সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ হাবিবুল হক বলেন, অন্য দেশে এক আসনের বিপরীতে ১০ জন পরীক্ষা দেয়। সেখানে অটোমেশন প্রয়োজন। এখানে কয়েকটা সিটের বিপরীতে একজন আগ্রহী। কিশোরগঞ্জের জহুরুল মেডিকেল কলেজে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সাক্ষাৎকারে অংশ নেন মাত্র একজন। ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে অসচ্ছল কোটায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী বিগত বছরে দুজন থাকলেও চলতি বছরে এর সংখ্যা শূন্যের কোঠায়। এই চিত্র শুধু রাজধানী ঢাকার বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নয়, বরং বাংলাদেশে সব জেলায়।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘অটোমেশন নতুন কোনো ব্যবস্থা না। এটা পাকিস্তান আমলেও ছিল। এ পদ্ধতির কারণে অনেকে ভর্তিতে সমস্যা বোধ করছে। আমি নিজেও এটার শিকার। এই অটোমেশনের কারণে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারিনি।’ 

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, দেশের হাসপাতালের চিকিৎসকদের গুণগত মান ভালো। হাসপাতালের ওপর মানুষের আস্থা আনতে হবে। প্রতিযোগিতা বাড়াতে হবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে মান বাড়লে মানুষ এমনি প্রতিদান দেবে। 

বিপিএমসিএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দেশের ৯৫ শতাংশ মেডিকেল কলেজের মান ও অবকাঠামোগত সুবিধা ভালো। তারপরও সিট খালি আছে। যাঁরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ করেছেন, তাঁরা ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। 

বিএমডিসির সহসভাপতি অধ্যাপক ড. রওশন আরা বেগম বলেন, মেডিকেল শিক্ষার মানোন্নয়নে গুণগত মানের প্রশ্নে আপস নেই। সবাই মিলে গাইনি পড়ব বা সার্জারি পড়ব—এই ধারা ছাত্র-ছাত্রীদের বদলাতে হবে। মেধানুসারে নানা দিকে যেতে হবে। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের খুব ভালোভাবে পরীক্ষা গ্রহণ ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে হবে। তাতেই মান তৈরি হবে। প্রেরণা ও পুরস্কার মান বৃদ্ধি করে। 

চলতি ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশের ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দেশি–বিদেশি শিক্ষার্থীর ৬ হাজার ২০৮টি আসনের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ২০০টি আসন এখনো খালি আছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত