পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে করণীয়

আঁখি রানী দাস তিতলি
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮: ১২
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪: ৩২

চাকরি, ব্যবসা, ভ্রমণ বা শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশে যেতে হয়। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের পরিচয় বহনের একমাত্র প্রমাণপত্র হলো পাসপোর্ট। আর এই পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া, পাসপোর্ট হারানো—এসব কারণে বিদেশের মাটিতে আমাদের নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সঠিক প্রমাণাদির অভাবে কারাগারেও যেতে হতে পারে। আবার বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষাকালে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড হিউম্যা ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী (আইসিসিআর স্কলার) আঁখি রানী দাস তিতলি

পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু
বর্তমান পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা পাসপোর্টের কোনো তথ্য পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে নতুন আরেকটি পাসপোর্টের আবেদন করা ও নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করার প্রক্রিয়াই হলো পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু। উভয় ক্ষেত্রেই নতুন পাসপোর্টটি হাতে পাওয়ার পর আগের পাসপোর্ট বাতিল করা হয় ও নতুনটি সচল হয়। আবেদন করে নতুন যে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে তার নম্বরও নতুন হবে কিন্তু আগের পাসপোর্টের নম্বর নতুন পাসপোর্টে থাকবে। সাধারণত বর্তমান পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ মাস থাকা অবস্থাতেই পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু আবেদন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ, প্রায় সব দেশই পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস না থাকলে ভিসা দেওয়া হয় না এবং ইমিগ্রেশন এন্ট্রি দেয় না। এ ক্ষেত্রে দেশে এসে পাসপোর্ট রিনিউ করে পুনরায় পড়াকালীন দেশে ফিরে যাওয়া যায়। বিদেশে অবস্থান করার সময় নিজের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে সে দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের কনস্যুলার শাখা থেকে বাংলাদেশিরা তাদের পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারবেন। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাসের আগেই নবায়ন করা ভালো। কলকাতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপ-হাইকমিশন অবস্থিত রবীন্দ্রসদনের এলগিন রোডের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণিতে।

পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু 
করার নিয়ম পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মাবলি বা ধাপ: আসলে নতুন পাসপোর্টের আবেদন করা ও রিনিউ আবেদন করার প্রসেস প্রায় একই। শুধু অল্প কিছু পার্থক্য আছে। প্রথমত পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। তারপর আবেদন ফরম পূরণ, পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু ফি জমা, আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়া ও বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট সম্পন্ন করা, পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করে শেষে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 
পুরোনো পাসপোর্ট ও এর ফটোকপি, ভিসার ফটোকপি, মূল এনআইডি কার্ড ও এর ফটোকপি, এফআরআরও সার্টিফিকেট ফটোকপি, সদ্য তোলা ২ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বোনাফাইড সার্টিফিকেট কপি (৬ মাসের অধিক মেয়াদ থাকতে হবে) এবং পাসপোর্ট রিনিউ ফি দিতে হবে।

কলকাতার বৈদেশিক আঞ্চলিক নিবন্ধন দপ্তর (এফআরআরও অফিস) থেকে প্রাপ্ত এফআরআরও সার্টিফিকেট পেতে মূলত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত বোনাফাইড সংযুক্ত করতে হয়। যেটি শিক্ষার্থী হওয়ার প্রমাণপত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। পাসপোর্ট রিনিউ হলে নতুন পাসপোর্ট নম্বর সংযুক্ত এফআরআরও সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হয়। ফরেন রেজিস্ট্রেশন অফিস পোর্টালে গিয়ে চেঞ্জ অব পাসপোর্ট অপশনে গিয়ে এটি করতে হয়। সঠিক সময়ে এফআরআরও সার্টিফিকেট রিনিউ না করা হলে জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়। যা একজন ফরেন শিক্ষার্থীর জন্য একটু বেশি কষ্টের। এ ছাড়া যেহেতু পাসপোর্ট এবং এফআরআরও সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীদের ব্যাংকের স্কলারশিপের সঙ্গে সংযুক্ত। সে ক্ষেত্রে এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রগুলো সঠিক সময়ে রিনিউ না করা হলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কলারশিপ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে একজন শিক্ষার্থী পড়তে পারেন বড় সমস্যায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত