মেডিকেলে ভর্তি-ইচ্ছুদের জন্য ৭ পরামর্শ

আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৮: ৩১
Thumbnail image

এইচএসসি পরীক্ষা তো শেষ। একটা টেনশন দূর হলেও ভর্তি পরীক্ষার টেনশন নিশ্চয়ই ভর করতে শুরু করেছে। পরীক্ষার পর আপনারা হয়তো নির্ধারণ করে ফেলেছেন কে কোন ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবেন। আপনারা যাঁরা সাদা অ্যাপ্রোন পরার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন সত্যি করতে চাইছেন, এ লেখাটি তাঁদের জন্য। মেডিকেলে ভর্তি-ইচ্ছুদের জন্য এইচএসসি পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তুর্জয় কবীর। 

মেডিকেলে ১০০ মার্কের ভর্তি পরীক্ষা হয়। কিন্তু এ পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেতে এইচএসসি-পরবর্তী সময়ের সঠিক ব্যবহার ও পরিশ্রমের পাশাপাশি বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন জরুরি। কয়েকটি কৌশল উল্লেখ করছি। 

১. মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, টেক্সট বই খুব মনোযোগসহকারে পড়া। প্রথম থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়ে ফেলতে হবে। গতানুগতিক ভাবে, জীববিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের জন্য যথাক্রমে আজমল ও হাসান স্যার, পদার্থবিজ্ঞানের জন্য ইসহাক স্যার ও রসায়নের জন্য হাজারী স্যারের বইয়ের কোনো জুরি নেই। তথ্য মনে রাখার জন্য বারবার রিভিশন দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

২. একজন মেন্টর নির্ধারণ করতে পারলে খুবই ভালো হয়। অভিজ্ঞ কোনো বড় ভাই বা আপু যাঁর বোঝানো ভালো লাগে ও বোধগম্য হয়, যাঁর গাইডলাইন সহজ ও সাবলীলভাবে অনুসরণ করা যায়, সর্বোপরি নিজের জন্য Compatible এমন মেন্টরের সাহচর্যে থাকা। 

৩. সাহায্যকারী বই বা রিভিউ বুকের ব্যবহার খুবই জরুরি। এগুলো হলো এমন সব বই, যেগুলোতে টেক্সট বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য আলাদা করে একসঙ্গে থাকে এবং মনে রাখার উপায় পাওয়া যায়। এই বইগুলোর মডেল টেস্টগুলো অনুশীলন করে ফেলতে হবে। 

৪. বিগত ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলোর সমাধান করতে হবে। দেখা যায় কিছু বিশেষ টপিক, অধ্যায়, ছক থেকে প্রতিবার প্রশ্ন আসছে। সেসব বিষয় বিশেষ গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে। 

৫. কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নিজের পড়া নিজেকেই পড়তে হয়। তবে মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলে নিজের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। টাইম ম্যানেজমেন্ট ও নার্ভাস ব্রেকডাউন প্রতিরোধ—এই দুটো বিষয় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বারবার পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে এই কৌশলগুলো রপ্ত করা জরুরি। 

৬. এইচএসসি-পরবর্তী সময়টুকুতে সুস্থ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষার আগে আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এই সংখ্যাটা অনেক। অনেকে রাত জেগে পড়েন কিন্তু পরের দিন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অস্বাভাবিক ও অমানবিক পরিশ্রম করতে গিয়ে নিজের Biological clock Pattern নষ্ট করা একদম অনুচিত। এর চেয়ে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর রুটিন এই স্থিরতা অনেক বেশি ফলপ্রসূ। পরীক্ষায় ভালো করার জন্য শুধু পড়াশোনা নয়, সঙ্গে পারিপার্শ্বিক এসব সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন। 

৭. এ সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া, রিলেশনশিপ, যেকোনো সময় অপচয়কারী বা মনোযোগ বিগ্ন ঘটায়, এ রকম বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে। সর্বোপরি নিজের স্বপ্ন, ইচ্ছা ও চেষ্টার সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। অনেক ছাত্রছাত্রী অভিভাবকের চাপে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন এবং পরে ধৈর্যচ্যুত হন।

পরিশেষে বলব। আমরা জানি, কয়লা ও হীরা দুটোই কার্বন দিয়ে তৈরি। হীরা তৈরি হয় তুলনামূলক বেশি তাপ ও চাপে আর তাই এটি এত উজ্জ্বল ও মূল্যবান। ঠিক তেমনি চেষ্টা ও শ্রমের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত করলে, আগামীতে আপনিও পাবেন উজ্জ্বল অ্যাপ্রোন পরার মহিমা।
 
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত