Ajker Patrika

কেন পড়বেন রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং

আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৩, ১৫: ৩৫
কেন পড়বেন রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং

রোবট নিয়ে অনেকের একটি ভুল ধারণা হচ্ছে—রোবট মানেই মানুষের মতো হাত-পাওয়ালা একটি যন্ত্র। অটোমেটেড যেকোনো যন্ত্র, যা চারপাশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে প্রয়োজনমতো সাড়া দিতে সক্ষম, সেটাকেই আমরা রোবট বলি।

আর রোবট নিয়ে বিজ্ঞানের যে শাখা আলোচনা করে, সেটাই হচ্ছে রোবোটিকস। আর মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং হলো মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার সায়েন্সের সমন্বিত একটি শাখা, যা মূলত কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের সাহায্যে মেকানিক্যাল ডিভাইসকে ইলেকট্রনিকসের মাধ্যমে কন্ট্রোল করার বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করে। 

পড়ার যোগ্যতা
এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মোট জিপিএ ১০-এর মধ্যে সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম ৮ পেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই বিভাগে পড়ার সুযোগ পায়। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় আলাদাভাবে কমপক্ষে জিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে কমপক্ষে ১২.৫ (লিখিত ও এমসিকিউ মিলে) নম্বর করে পেতে হয়।

এ ছাড়া মাস্টার্স প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে ওই বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান থেকে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভর্তির সুযোগ পেলেও অন্য বিভাগ কিংবা অন্য বিশ্ববিদ্যালয় (পাবলিক ও প্রাইভেট) থেকে স্নাতক সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার (লিখিত ও ভাইভা) মাধ্যমে ভর্তি হতে হয়।

সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, ইনফরমেশন টেকনোলজি, অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাপ্লাইড ফিজিকস, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা সংশ্লিষ্ট যেকোনো একটি বিভাগ থেকে ন্যূনতম ৩.২৫ (৪-এর মধ্যে) সিজিপিএ নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করতে হবে।

কোথায় পড়া যায়
রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও রুয়েটের মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, চুয়েটের মেকাট্রনিকস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, কুয়েটের মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ইন্টারনেট অব থিংকস অ্যান্ড রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এ-সম্পর্কিত বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে।

বেসরকারিভাবে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের মেকাট্রনিকস অ্যান্ড অটোমেশন, খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে মেকাট্রনিকস টেকনোলজি বিভাগে ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন বয়সীদের রোবোটিকস শিক্ষার জন্য কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্কুল অব রোবোটিকস। 

কর্মসংস্থানের সুযোগ 
বাংলাদেশে অনেকগুলো অটোমেটেড ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। যেগুলো চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমাদের দেশের নিজস্ব কোনো এক্সপার্ট নেই। ফলে সেই ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বিদেশ থেকে মিলিয়ন ডলার খরচ করে এক্সপার্ট আনতে হয়, যা দেশের ইকোনমিক স্ট্যাবিলিটির জন্য মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের কোনো এক্সপার্ট থাকলে অনেক খরচ কমে যেত এবং দেশের মুদ্রা দেশেই থাকত।

তাই এই সেক্টরে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে এই বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা। এমনকি বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে রোবোটিকসের গ্র্যাজুয়েটদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে গার্মেন্টস ও প্রোডাকশন সেক্টরে রোবোটিকসের ব্যবহার বহুগুণে বেড়েছে। এমনকি বর্তমানে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে যে হাই-টেক পার্ক গড়ে উঠছে, সেখানে বিশ্বের নামীদামি কোম্পানিগুলো জায়গা করে নেবে। সেখানে চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্যই এই বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা অগ্রাধিকার পাবে। 

রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজনীয়তা
এই আধুনিক ও যুগোপযোগী বিভাগ বাংলাদেশের মেধাবী প্রজন্মকে রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করবে; যা দেশে প্রযুক্তিসম্বৃদ্ধ গার্মেন্টস সেক্টর, পাওয়ার সেক্টর, নবায়নযোগ্য সৌরশক্তি উৎপাদন ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থসামজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় রোবোটিকসের বিভিন্ন প্রযুক্তি, যেমন অটোমেটেড আন্ডারওয়াটার ভেহিক্যাল কিংবা রিমোটলি অপারেটেড ভেহিক্যাল ইত্যাদির মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের সন্ধান ও আরোহণ করা যাবে।

এভাবে সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে রোবোটিকসের ব্যবহার বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে। তাই রোবট এখন আর বিলাসী পণ্য নয়। চিকিৎসা, কৃষি ও শিল্প খাতের উন্নয়ন, অগ্নিকাণ্ড, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও রোবোটিকস বিষয়ে দক্ষতা অর্জন না করতে পারলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। কারণ রোবোটিকস প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রোডাকশন বাড়াতে না পারলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে পিছিয়ে পড়ব। ফলে মুখ থুবড়ে পড়বে আমাদের এক্সপোর্ট খাত।

যেসব কোর্সে পড়ানো হয়
মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার সায়েন্স–এই তিনটি সাবজেক্টের সমন্বয়ে মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি গঠিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এ তিনটি বিষয়ের ওপর সমন্বিত কোর্সগুলো পড়ানো হয়। কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইসকে অ্যানালাইসিস করে, নিজের মতো করে সার্কিট ডিজাইন করার জন্য ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক সার্কিট, ডিজিটাল লজিক সার্কিট থেকে শুরু করে মেকানিক্যাল ডিভাইসকে দক্ষভাবে কন্ট্রোল করার জন্য যতটুকু ইলেকট্রনিক জ্ঞানের প্রয়োজন তা সবই পড়ানো হয়। মেকানিক্যাল সিস্টেম নিয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য সলিড মেকানিকস, ফ্লুয়িড মেকানিকস, মেকানিক্যাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন সিস্টেম, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, হাইব্রিড ইলেকট্রিক্যাল ভেহিক্যাল, ম্যানুফ্যাকচারিং প্রসেসের ওপর বিস্তারিত কোর্স রয়েছে। ইলেকট্রনিকস ও মেকানিক্যাল সিস্টেমের মধ্যে সমন্বয় সাধনের কাজটি করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং। এ ক্ষেত্রে বেসিক প্রোগ্রামিং থেকে শুরু করে ‘অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং’ বিভাগে পড়ানো হয়। বিভিন্ন ধরনের কন্ট্রোল সিস্টেম, যেমন মাইক্রোকন্ট্রোলার, মাইক্রোপ্রসেসর, পিএলসি, সিএনসি নিয়ে বিস্তারিত পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীদের কন্ট্রোল সিস্টেমে দক্ষ বানাতে বিভিন্ন ধরনের অ্যালগরিদম, যেমন পিআইডি অ্যালগরিদম, ডেরিভেটিভ অ্যালগরিদম, ইন্টিগ্রাল অ্যালগরিদম এখানে শেখানো হয়। রোবটের দর্শন ও ইন্টারেকশন ক্ষমতা তৈরির জন্য রোবট ভিশন, ইন্টারনেট অব থিংকস, হিউম্যান রোবট ইন্টারেকশন ও ইমেইজ প্রসেসিং কোর্স পড়ানো হয়, যা একটি রোবট ইমেজিং সেন্সর থেকে সিগন্যাল গ্রহণ, সরবরাহ, কন্ডিশনিং, রূপান্তর, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়া যায়। রোবটের বিভিন্ন কম্পোনেন্টের সিমুলেশন করার জন্য ম্যাটল্যাব, সলিড ওয়ার্ক, এনসিস, রোবট অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করানো হয়। রোবটকে প্রোগ্রামের বাইরে নিজে নিজে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম বানাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিং লার্নিং ও ডিপ লার্নিং বিস্তারিত পড়ানো হয়। এ ছাড়া হাতে-কলমে কাজ করার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক ল্যাবের সুযোগ-সুবিধা। রোবোটিকস ল্যাবে হেক্সা রোবট, অহনি ভি৫, নাও রোবট, রোভার ভি৫, থ্রিডি প্রিন্টার, ই-পাক রোবট, ড্রোনসহ অনেক ধরনের ম্যানুপেলেটর রয়েছে। অটোমেশন নিয়ে কাজ করার জন্য মেকাট্রনিকস ল্যাবে রয়েছে অত্যন্ত ব্যয়বহুল সিএনসি মিলিং মেশিন, প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোলার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মডুলার সিস্টেম ও লেজার কাটার মেশিন।

পড়ার খরচ কেমন
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র অর্থ খরচ করে এ রকম একটি ব্যয়বহুল বিভাগে পড়াশোনা করা যায়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্ষেত্রবিশেষে খুবই রিজনেবল খরচে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। 
 
উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা 
উচ্চশিক্ষার জন্য এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সামনে খুলে যাচ্ছে রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকসের বিশাল দুয়ার। কারণ ইউরোপ-আমেরিকার নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রোবোটিকস ও মেকাট্রনিকসের ওপর বেশ কাজ হচ্ছে। সে জন্য এই সাবজেক্টে পড়ে দেশের বাইরে ভালো স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাওয়া খুবই সহজ।

তা ছাড়া আপনি যেকোনো সাবজেক্টে চাইলেই শিফট করতে পারবেন; যেমন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, মেশিন লার্নিং ইত্যাদি। উপরন্তু এ বিষয়ে রয়েছে রিসার্চের অনেক সুযোগ। এর কারণ হচ্ছে বিষয়টি মাল্টি ডাইমেনশনাল। বর্তমান প্রজন্মে বিভিন্ন ডাইমেনশনের সমন্বয় সাধন করে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

মো. আরিফুল ইসলাম সহকারী অধ্যাপক, রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৭
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন একাদশ থেকে বাড়িয়ে দশম গ্রেডে নির্ধারণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রাজীব কুমার সরকার।

এদিন এই প্রজ্ঞাপন জারি হলেও নতুন গ্রেডে বেতন ১৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে গেল ২৭ অক্টোবর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। এরপর ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকদের সবগুলো পদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২৮ জুলাই অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ ও অক্টোবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব প্রধান শিক্ষক পদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার সম্মতি দিয়েছিল।

পরে গত ১১ নভেম্বর অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ এ প্রস্তাবে সম্মতি জানায়।

৩ ডিসেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায়ও প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগ প্রধান শিক্ষকদের ‘আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত’ এবং তাঁদের ‘সামাজিক মর্যাদা সুসংহত’ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এর ফলে প্রধান শিক্ষকেরা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও ‘সৃজনশীল ও উদ্দীপ্ত’ ভূমিকা রাখবেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আরও উন্নত ও গতিশীল’ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধান শিক্ষকেরা অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক ও সব স্তরের অংশীজনদের সহায়তায় প্রাথমিক শিক্ষার মান ‘কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে’ উন্নীত করবেন বলে প্রত্যাশা করছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি

রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি
ছবি: সংগৃহীত

অবসর ভাতার আবেদন করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবশ্যই ইনডেক্স (পরিচয় শনাক্তকারী নম্বর) থাকতে হবে। এই শর্ত ঠিক রেখেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ইনডেক্সধারীদের অবসর ভাতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আবেদন না করেও অনেকে এই ভাতা পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অর্থ ব্যয় এবং পরিচালনায় এমন অনেক অনিয়ম ও অসংগতি পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আইন লঙ্ঘন করে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানত ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনটির সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন অনুবিভাগ) জহিরুল ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অবসর সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৫ লাখের বেশি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলপর্যায়ের ২৭ হাজার ৮৬২টি, কলেজের ১৭ হাজার ২৭৮টি, মাদ্রাসার ১২ হাজার ৯৬৮টি এবং কারিগরির শিক্ষকদের ৬ হাজার ৬৬৭টি।

আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১৮ জন ভুয়া ইনডেক্সধারীকে বোর্ড তহবিল থেকে ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৬৭ টাকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা পরিশোধের আগে ইনডেক্স যাচাই আবশ্যক। অথচ ইনডেক্স যাচাই না করে ভুয়া ইনডেক্সের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসব অর্থ আদায় করে বোর্ডের তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দল।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর ভাতা প্রাপ্তির আবেদন না করলেও এবং বোর্ড থেকে ব্যাংকে কোনো অ্যাডভাইস না পাঠালেও তাঁদের অনুকূলে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া একই ইনডেক্সধারীকে একাধিকবার অবসর সুবিধা দেওয়ায় বোর্ডের ১ কোটি চার লাখ ৭২ হাজার ৮৬১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন হিসাবে ৫৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮ টাকা এবং ভুয়া ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে সফটওয়্যার ভেন্ডরের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৫ টাকা পরিশোধের তথ্যও উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে না রেখে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৬১ হাজার ৭২৫ টাকা। এসব টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জমা করা আবশ্যক বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য আদায় করা ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৪০ টাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের তহবিল থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিলে জমা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপিওর চেক নগদায়নপূর্বক নির্ধারিত সময়ে ৫২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৩ টাকা জমা হয়নি। স্থায়ী তহবিলের প্রাপ্ত সুদ চলতি তহবিলে জমা না দেওয়ায় ৫৬ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তহবিল যথাযথভাবে সংরক্ষণ না হওয়ায় ৯১ লাখ ৩৫ হাজার, যথাযথ নিয়মে হিসাবভুক্ত না করায় ২৯ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৭ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

পরামর্শক বাবদ বিল পরিশোধ করায় অনিয়মিত ব্যয় ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮০ টাকা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাপ্যতা না থাকলেও সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ টাকা পারিতোষিক দেওয়া হয়েছে। আবার অতিরিক্ত অবসর সুবিধা পরিশোধ করায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৪ টাকা, ভ্যাট না কাটায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫৩ টাকা, চেকের ব্যবহার না থাকলেও এ খাতে ব্যয় দেখিয়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব ব্যয়কে প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করে এসব অর্থ আদায় করে বোর্ড তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে উৎসে কর না কাটায় ১ লাখ ৬ হাজার ১১ টাকা, ক্রয় সিলিং না মেনে ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৩০৪ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না মেনে ১ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ৭০৭ টাকা ব্যয় এবং আর্থিক ক্রয়সীমার অতিরিক্ত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪১ টাকা ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সম্পাদিত কার্যাবলির প্রতিবেদন প্রণয়ন না করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন বোর্ডের আইন ও প্রবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড কর্তৃক ক্যাশবই ও স্টক রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হয়নি। তহবিল প্রাপ্তি নিশ্চিত না করে অধিক হারে পরিশোধের অঙ্গীকার করার অবসর সুবিধা বোর্ডের দায় উত্তরোত্তর বাড়ছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের আপত্তিগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষার আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। সে আলোকে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনের পর রমজান, আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা কবে?

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  ছবি: আজকের পত্রিকা
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী বছরের (২০২৬) মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, গণভোট ও পবিত্র রমজান মাস বিবেচনায় নিয়ে আগামী এপ্রিল বা মে মাসে এই পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে এমন আভাস পাওয়া গেছে। এর আগে একসময় ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষা শুরুর রেওয়াজ থাকলেও করোনা মহামারি ও পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপঞ্জিতে পরিবর্তন আসে।

২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষাকে আবারও ফেব্রুয়ারিতে ফিরিয়ে আনা হয়। সে বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এরপর ২০২৪ সালের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের পর রমজানের কারণে ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি শুরু করতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরে ঈদুল ফিতরের পর ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা।

আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। তবে অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসের প্রশ্নে এ পরীক্ষায় বসতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির আজ বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, যাতে সরকার যেকোনো সময় বললে পরীক্ষা নিতে পারি। পরীক্ষার ব্যাপারে কিছু চিন্তাভাবনা, কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকার সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিলে আমরা পরীক্ষা নেব।’

এহসানুল কবির আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, এর মধ্যে কীভাবে পরীক্ষা হবে। এরপর রমজান। এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা কোন সময় আয়োজিত হবে, সে সিদ্ধান্ত সরকারের। তাই পরীক্ষা কবে শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না।’

এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘গত বছর এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এপ্রিলে। এবার এপ্রিলেও শুরু হতে পারে, মে মাসেও শুরু হতে পারে। আবার এপ্রিল-মে মাসে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার একটা বিষয় আছে। এসএসসি পরীক্ষা কবে হবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত। আমরা প্রস্তুতি রাখছি, সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে পরীক্ষার আনুষ্ঠিকতা শুরু হবে।’

গত বছর ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা এবং ১৫ থেকে ২২ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা আয়োজনের পরিল্পনা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ১৪ ও ১৫ মের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। পরে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হয় ২৮ মে। আর ২৯ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত নেওয়া হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। এরপর ২৬ জুন থেকে শুরু হয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা।

এদিকে, ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণ চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিলম্বসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৩৫ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণে এ ফি দিতে হবে। আর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৮
শহীদ শরিফ ওসমান হাদীর হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা: ছবি সংগৃহীত
শহীদ শরিফ ওসমান হাদীর হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা: ছবি সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে গতকাল দুপুর ১২টায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রোক্টর অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক শিহাব উদ্দিন, সহকারী প্রোক্টর মনিরুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বক্তারা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তাঁরা বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ন্যায়বিচার, ইনসাফ ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই আদর্শ ধারণ করেই শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যেতে হবে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে একটি সুন্দর, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তাঁরা দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। কর্মসূচি শেষে উপস্থিত সবাই শহীদ শরিফ ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর হত্যার সুষ্ঠু বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত