Ajker Patrika

করোনাকালে প্রাথমিকে শিক্ষণ ঘাটতি ২৭ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৫৩
করোনাকালে প্রাথমিকে শিক্ষণ ঘাটতি ২৭ শতাংশ

করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল দেড় বছরের বেশি সময়। এ সময়ে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে গড়ে ২৭ শতাংশ শিক্ষণ ঘাটতি হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।  
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘করোনার দুই থেকে আড়াই বছরে আমাদের শিক্ষণ গ্যাপ হয়েছে, এটি সত্য। এর জন্য চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় এনসিটিবি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি গবেষণা করেছে। সেখানে আমরা দেখেছি, প্রাথমিকে শিক্ষণ ঘাটতি গড়ে ২৭ শতাংশ। বিভিন্ন বিষয়ে এই ক্ষতি হয়েছে। কোনো বিষয়ে বেশি, কোনো বিষয়ে কম। শিক্ষণ ঘাটতি গ্রামে এক রকম, শহরে আরেক রকম।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা, শিক্ষক বদলি কার্যক্রম, সহকারী শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন  ফরিদ আহাম্মদ। কবে নাগাদ প্রাথমিকের বৃত্তির ফল প্রকাশ করা হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ২০২২ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।

দ্বিতীয় ধাপে চলতি মাসেই (ফেব্রুয়ারি) আন্তজেলা, আন্তসিটি করপোরেশন এবং আন্তবিভাগ পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান সচিব। এ নিয়ে বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে এ মাসেই আন্তজেলা, আন্তসিটি করপোরেশন এবং আন্তবিভাগ পর্যায়ে বদলি কার্যক্রম শুরু হবে। শিক্ষক বদলিতে আরও কিছু কাজ করতে হবে। সেই কাজটা করছি।’

চলতি মাসেই প্রাথমিকে ফের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানান ফরিদ আহাম্মদ। তিনি বলেন, প্রতিবছর ছয় হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতিবছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার। তবে এখন থেকে নিয়োগ হবে ক্লাস্টারভিত্তিক (বিভাগ ধরে)। এতে তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। চলতি মাসেই একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। 
দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এক শিফটে চালানোর পরিকল্পনা থেকেও সরে আসার ইঙ্গিত দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের লক্ষ্য। তবে সিদ্ধান্ত হবে স্থানীয় চাহিদা ও বাস্তবতা বিবেচনায়। একসঙ্গে চাপিয়ে দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। আমরা এক শিফটের বিদ্যালয় চাই। কিন্তু স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে জুন থেকে স্কুল ফিডিং শুরুর কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের জুন থেকে স্কুল ফিডিং প্রকল্প চালু হবে। দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।

‘দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১০ সালে চালু হয়ে ২০২২ সালের জুনে সমাপ্ত হয়। প্রকল্পটি দেশের ১০৪টি উপজেলায় চালু ছিল।

এ ছাড়া শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক স্কুলের নাম পরিবর্তনে নীতিমালা জারির কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বেশ কিছু নাম শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক ভাবার্থ সংবলিত, যা শিশুর রুচি, মনন, বোধ ও পরিশীলিতভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অন্তরায়। এ জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি নীতিমালা জারি করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তিত নামগুলোর গেজেটে প্রকাশ করা হবে।

এ সময় সচিব ফরিদ আহাম্মদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রুতিকটু নামের উদাহরণ দিতে গিয়ে বরিশালের ‘চরকাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’, ময়মনসিংহের  ‘চোরের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’সহ কয়েকটি স্কুলের নাম উচ্চারণ করেন। সেই সঙ্গে জানান, তাঁরা এ রকম নামে থাকা প্রায় ২০০ বিদ্যালয় চিহ্নিত করেছেন। এসব নাম পরিবর্তন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত