কাজ শুরু করলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি পাব

মীর রাকিব হাসান, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩: ১৯
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ০৩

বছর ঘুরে জন্মদিন আসে, চলে যায়। কেমন লাগে?

ভালোই লাগে। একটা নতুন বছর আসে। নতুন উদ্যমে কাজ করার অনুপ্রেরণা পাই। সবাই শুভেচ্ছা জানায়। বিশেষ করে নাতি-নাতনি, মেয়ে-জামাইরা তো রাতেই কেক নিয়ে হাজির হয়। আমার স্ত্রী প্রতিবছর একটা সারপ্রাইজ গিফট দেবেই। আজকাল এক সুবিধা, ফেসবুকেও অনেক শুভেচ্ছা পাওয়া যায়। অনেকে সুন্দর সুন্দর লেখা লেখে আমাকে নিয়ে। সেগুলো পড়েও বেশ ভালো লাগে। সব মিলিয়ে উৎসবের মতো লাগে দিনটি।

ফেলে আসা জীবন বা শৈশবের জন্মদিনের কথা মনে পড়ে?

শৈশবে আমার কোনো জন্মদিন পালন হয়নি। আমার বোনদেরও আমি দেখিনি জন্মদিন পালন করতে। আমার বড় বোনের বিয়ের পর তাঁর সন্তান হলো। বড় বোনের সন্তানের জন্মদিন উদ্‌যাপনের মধ্য দিয়েই আমাদের পরিবারে জন্মদিন পালনের রেওয়াজ শুরু হয়।

আপনার চার বোন, তাঁরা কেমন আছেন?

চার বোনের এক ভাই আমি। আমার চেয়ে দুই বোন বড়। ওনারা মারা গেছেন। ছোট দুই বোন ঢাকায়ই আছে। ভালো আছে।

আমার বাবার কাছে শিখেছি, চাওয়াটা খুব লিমিটেড থাকতে হবে। যত কম চাইবে, তত আনন্দে দিন কাটবে। চাওয়াটা যখন বাড়তে থাকবে, তখনই অপূর্ণতা গ্রাস করতে থাকে। এই থিওরির ওপরই আমার সারা জীবন কেটেছে। আমি যা চেয়েছি, এক জীবনে তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি।

আবুল হায়াত, অভিনেতা

আবুল হায়াতনাতনি শ্রীশারও (নাতাশা হায়াতের মেয়ে) একই দিনে জন্মদিন...

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুজনার জন্মদিন একসঙ্গে পালিত হয়। হয়তো রাত ১২টার সময় আমি চলে যাই ওদের বাসায়, নাহয় ওরা আসে। পরদিন একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া হয়। পরিবারের যে যেখানেই যত ব্যস্ত থাকি না কেন, আমার জন্মদিনে সবাই একসঙ্গে একটু খাওয়াদাওয়া, আড্ডা হয়-ই।

আপনি তো করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন কেমন আছেন?

খুবই বিচলিত। কোনো কিছুই ভালো লাগাতে পারি না। আমি তো বিশ্রাম নেওয়ার মতো লোক নই। এই যে আমি কথা বলছি, লেখার টেবিলে বসে আছি। বহুদিন পর লিখতে বসলাম। এক পৃষ্ঠা লিখতে পারলাম অনেকক্ষণ বসে থেকে। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর মনে হয়, মানুষ একটা ডিপ্রেশনের মধ্যে পড়ে। শরীরের এখন কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। পোস্ট-কোভিডের রিঅ্যাকশনগুলো অচেনা। এখানে কখন কী ঘটে বলা মুশকিল। খুব ডিপ্রেশনের মধ্যে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, আমার কোনো অসুখ নেই। এটা পোস্ট-কোভিডের প্রতিক্রিয়া। কাজ শুরু করলে হয়তো এর থেকে কিছুটা স্বস্তি পাব।

কাজে ফিরছেন কবে?

১০ তারিখ শুটিং আছে। সীমান্ত সজলের পরিচালনায় ‘তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে’ টেলিফিল্মের শুটিং করব। বৃদ্ধাশ্রমের ওপর গল্পটা। আমার সঙ্গে দিলারা ভাবিও আছেন।

এত বছরের ক্যারিয়ার, কোনো অপূর্ণতা তাড়িয়ে বেড়ায়?

আমার বাবার কাছে শিখেছি, চাওয়াটা খুব লিমিটেড থাকতে হবে। যত কম চাইবে, তত আনন্দে দিন কাটবে। চাওয়াটা যখন বাড়তে থাকবে, তখনই অপূর্ণতা গ্রাস করতে থাকে। এই থিওরির ওপরই আমার সারা জীবন কেটেছে। আমি যা চেয়েছি, এক জীবনে তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। সারা জীবন মানুষের ভালোবাসা, স্বীকৃতি পেয়েছি। মেয়ে দুটিকে শিক্ষিত ও মানুষের মতো মানুষ করতে পেরেছি। আসলে এমন কোনো অপূর্ণতা নেই, যেটা আমাকে তাড়িয়ে বেড়াবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত