পাহাড়ি মেয়ে জ্যাকলিন, গানের সঙ্গে সারাদিন

ঝুলন দত্ত
Thumbnail image

কাপ্তাই(রাঙামাটি): কাপ্তাইয়ের সংগীতাঙ্গনের অতি পরিচিত মুখ জ্যাকলিন তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি একজন মেলোডি গানের শিল্পী। রবীন্দ্র-নজরুল সংগীত, আধুনিক গান, ফোক গান এবং উপজাতীয় গান সব ধরনের গান গাইতে পারদর্শী তিনি। কণ্ঠের অপূর্ব মাদকতায় ইতিমধ্যে মন জয় করেছে পাহাড় ও সমতলের অসংখ্য শ্রোতার।

বাংলাদেশ বেতার রাঙামাটি কেন্দ্রের আধুনিক গান ও তঞ্চঙ্গ্যা গানের তালিকাভুক্ত এই শিল্পী নিয়মিত বেতারে অনুষ্ঠান করছেন। এ ছাড়াও কাপ্তাই, রাঙামাটি, বান্দরবান,  রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় স্টেজ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। চলতি বছর বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে একমাত্র উপজাতীয় শিল্পী হিসাবে তিনি আধুনিক গানে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

গত ১৯ মার্চ বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ‘মিউজিক স্টেশন’ নামক একটি অনুষ্ঠানে তাঁর পাঁচটি একক গান ধারণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয়েছে বলেও শিল্পী জ্যাকলিন তঞ্চঙ্গ্যা জানান। ইতিমধ্যে তিনি তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় প্রকাশিত দুটি ধর্মীয় মিক্সড অ্যালবামে কণ্ঠ দিয়েছেন। শ্রোতামহলে সেটি প্রশংসিত হয়েছে। রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের অধীনে কাপ্তাই উপজেলায় সংগীত শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন জ্যাকলিন তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সংগীত শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত আছেন।

কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাপছড়ি পাড়ার দয়া রঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা এবং মানসী তঞ্চঙ্গ্যার বড় মেয়ে জ্যাকলিন। তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা চারজন। জ্যাকলিনের ছোট ভাইও গান, তবলা ও আবৃত্তি শিখছে। জ্যাকলিন মাত্র পাঁচ বছর বয়সে চট্টগ্রামের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ওস্তাদ স্বপন কুমার দাশের কাছে সংগীতের হাতেখড়ি নেন। এরপর আরও অনেকের নিকট সংগীতের বিভিন্ন বিষয়ে তালিম নেন।

জ্যাকলিন বলেন, ‘ছোটবেলায় গান শিখেছি বাবার অনুপ্রেরণায়। বাবা–মা দুজনই সব সময় আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। ভাবিনি যে কখনো এত দূর আসতে পারব। ছোটবেলা থেকে অনেক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অনেক পুরস্কার জিতেছি এবং সার্টিফিকেট অর্জন করেছি।’

উপমহাদেশের সংগীত গুরু পণ্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্তী বলেন, ‘সংগীতে আত্মনিবেদিত জ্যাকলিন তঞ্চঙ্গ্যা। সে শুধু পাহাড়ি সংগীত ধারণ করেনি। একই সঙ্গে সমতল তথা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংগীত সংস্কৃতিও ধারণ করবার অদম্য স্পৃহা তার মধ্যে লক্ষ করেছি। আমাকে বিষয়টি আশান্বিত করেছে। সে সংগীতে সফলতাও পেয়েছে। তাকে যেতে হবে আরও অনেক দূর।’

কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংগীত গুরু ফনিন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, ‘জ্যাকলিন একজন জাত শিল্পী। তাঁর কণ্ঠে যেকোনো বিষয়ের গান শুনতে ভালো লাগে। সে একবার কোনো গান শুনলে অনায়াসে কণ্ঠে ধারণ করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত