পথে এবার নামো সাথি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২১, ২২: ৩৮

ঢাকা: মানুষের আসল ঘর কোনটা? যেখানে বাস করে, নাকি অনন্ত আকাশের নিচে কোথাও? যেটা কিছু মানুষ আমৃত্যু খুঁজেই চলে। যেমন ‘নোম্যাডল্যান্ড’–এর মধ্যবয়স্ক নায়িকা ফার্ন।

পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় জিপসামের খনি বন্ধ হয়ে গেলে পুরো এম্পায়ার শহরটাই পরিত্যক্ত হয়ে যায়। গত শতকের ‘গ্রেট’ আর্থিক মন্দার যুগ। স্বামীহারা ফার্ন নিজের গাড়িকে চলন্ত বাড়ি বানিয়ে পথে বেরিয়ে পড়ে। খানিকটা ভবঘুরে বা জিপসিদের মতো। কোনো পিছুটান নেই। শুধুই চোখ আর মনের টানে এগিয়ে চলা।

পথই তখন ফার্নের ঘর। বাড়ি তার ভ্যান। আর পরিজন বলতে পথের অজানা মানুষের দল। তাদেরও অনেকেই ফার্নের মতোই ভবঘুরে। একবার ফার্ন বলে, ‘আমি হোমলেস নই, বলতে পারো হাউসলেস।’

ঘর তো প্রত্যেক মানুষকে খুঁজে নিতে হয়। মনের মতো ঘর আর কজন পায়! ফার্নও পায়নি। পেছনে ফেলে আসা এম্পায়ার শহরে নিজের ভাঙা বাড়িতে একবারের জন্য ফিরে আসে। আবার পথে বেরিয়ে পড়ে। পথের সাথি খুঁজতে নয়, বরং অন্তহীন পথের পথিক হয়ে জীবনের অন্য উদ্দেশ্যের খোঁজে।

‘নোম্যাডল্যান্ড’–এর পরিচালক ক্লোয়ি ঝাও একেবারেই সহজ–সরল ভঙ্গিতে গল্প বলেছেন। শুধু শখের ভবঘুরে ফার্নের জীবন নয়, আছে আরও কিছু সত্যিকার ভবঘুরের দল। তাঁরা অনেকেই অভিনেতা নন, আসল ভবঘুরে। আর এখানেই ঝাও তথ্যচিত্রের ছোঁয়া লাগিয়ে সিনেমাকে দিয়েছেন ডকুফিচারের আদল।

গত বছর ভেনিস উৎসবে গোল্ডেন লায়ন প্রাপ্তির পর থেকেই ঝাওয়ের ওপর ভরসা তৈরি হয়েছিল। ক্লোয়ি ঝাওয়ের প্রথম সিনেমা ‘সংস মাই ব্রাদার টট মি’ দেখলেই ধারণা পাওয়া যায়, প্রবাসী এই চায়না তরুণী অন্য মানসিকতার।

চীনের অন্য পরিচালকদের সঙ্গে ক্লোয়ি ঝাওয়ের কাজের অনেক পার্থক্য। দ্বিতীয় সিনেমা ‘নোম্যাডল্যান্ড’ প্রমাণ করে, তিনি নারীর মনের গভীরে যেভাবে প্রবেশ করতে পারেন, সেটা কোনো পুরুষ পরিচালকের পক্ষে সম্ভব নয়।

স্বামীহারা ফার্ন নিজের গাড়িকে চলন্ত বাড়ি বানিয়ে পথে বেরিয়ে পড়েন।ক্লোয়ি ঝাও একজন মুক্তমনা মানুষ, যিনি জীবনকে খুঁজতে শুরু করেছেন নিজস্ব ভাবনায়। কোনো পুরুষের ছায়ার নিচে দাঁড়িয়ে নয়। সেটাই এ সিনেমার মূল শক্তি।

‘নোম্যাডল্যান্ড’–এর অন্যতম সম্পদ ফ্রান্সেস ম্যাকডোরম্যান্ডের মতো দক্ষ অভিনেত্রী। তাঁর ভাঙাচোরা মুখ। জশুয়া জেমসের ক্যামেরার সামনে যে কত রকম অনুভূতির মানচিত্র নিয়ে খেলা করেছে! ফ্রান্সেস আবার এই ছবির অন্যতম প্রযোজক।

জীবন বহতা। তাকে বইতে দিতে হয়। কোথাও আটকে পড়লে জীবন যায় থেমে। আমরা বেশির ভাগ মানুষ সেই থমকে থাকা জীবন নিয়েই বাঁচি।

‘নোম্যাডল্যান্ড’ বানিয়ে ক্লোয়ি ঝাও জানিয়ে দিলেন, বাঁচার অন্য অর্থ পথে নামা। পথ খোঁজা। পথের সাথিকে চিনে নেওয়া। কিন্তু কোনো বাঁধনে নিজেকে বাঁধা নয়।

ফ্রান্সিস ম্যাকডর্মান্ড জাদু

অস্কারকে তো রীতিমতো ডালভাত বানিয়ে ফেলেছেন ফ্রান্সিস ম্যাকডর্মান্ড। এটি তাঁর তৃতীয় অস্কার। ‘থ্রি বিলবোর্ড আউটসাইড এবিং, মিজৌরি’ আর ‘ফার্গো’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য আগেই এই পুরস্কার পান। এ বছর মিললো ‘অলমোস্ট ফেমাস’, ‘নর্থ কান্ট্রি’ আর ‘মিসিসিপি বার্নিং’–এর জন্য আরও তিনবার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। ফলে ছয়টি মনোনয়ন থেকে তিনটি অস্কার বাড়ি নিয়ে যেতে পেরেছেন ৬৩বছর বয়স্ক এই অভিনেত্রী।

সূত্র: রটেন টম্যাটোস, হলিউড রিপোর্টার্স

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত