রজত কান্তি রায়, ঢাকা
হিম শরীর বয়ে নিয়ে গাড়িটা যখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এল, তখন বৃষ্টি পড়ছিল, ঝুমবৃষ্টি। পুরো নব্বইয়ের দশকজুড়ে আমরা যখন বড় হয়ে উঠতে থাকি, তখন ছিল মাইকের যুগ। খোলা মাঠে মাইক বাজিয়ে গান শোনা ছিল তখনকার শখ। মধ্যরাতে সে মাইক থেকে ভেসে আসত ‘মায়ের এক ধার দুধের দাম’, ‘ও সখিনা গেছস কি না ভুইলা আমারে’, ‘ড্যাগেরও ভেতরে ডাইলে চাইলে’, ‘মন আমার দেহঘড়ি’ ইত্যাদি জনপ্রিয় সব গান। আমরা বিমোহিত হয়ে যেতাম। সময়টাই ছিল বিমোহিত হওয়ার। ভাওয়াইয়া, কীর্তনের মতো গানের বাইরে নতুন ধরনের গানের কথা ও সুর আমাদের কানে পড়ল তখন।
এর পরেই সময় কিছু পালটে গেল। শুনতে থাকলাম ‘আমার এক জনমে পাইতাম যদি’, ‘কৃষ্ণ প্রেমের পোড়া দেহ’, ‘ওই পাখিটা মানলো না তো পোষ’ এরকম কিছু রোমান্টিক গান। তারও পরে, কিছুটা বড় শোনা হলো ‘কালো কালো মানুষের দেশে’, ‘হঠাৎ কোনো পথে দেখা হলে দুজনাতে’। আমাদের প্রচলিত গানের বাইরে একটু অন্য রকম গান।
তখন যদিও গানের জগৎ সম্পর্কে খুব জানাশোনা ছিল না। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম, বিষয়গুলো নতুন। না, নতুন গানের জন্য নয়। বরং নতুন একটি প্রজন্মের গান শোনার ধরন বদলে দেওয়ার জন্য ফকির আলমগীর আমাদের প্রজন্মের কাছে শ্রদ্ধাষ্পদ।
আমাদের যাঁদের স্মৃতিতে গ্রাম এখনো উজ্জ্বল হয়ে আছে, তাঁরা বুঝবেন। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন যাঁদের এখনো স্মৃতিতে আছে, তাঁরাও বুঝবেন। যাঁরা সদ্য স্বাধীন দেশে যুবক ছিলেন, তাঁরাও বুঝবেন ফকির আলমগীরের চিরবিদায়ে কেন অন্তর কাঁদে।
আর যাঁরা রাজনীতিসচেতন হতে চেয়েছিলাম, ফকির আলমগীরের গান তাঁদের কাছে ছিল সত্যিকারেই গণমানুষের গান। ‘গণসংগীত’ ঘরানায় আবদ্ধ যে গান, আমাদের দেশে সে গানের শিল্পী হিসেবে আমরা তাঁকেই জানি। কতবার কত কারণে আমরা তাঁর গান গেয়েছি, তার কোনো হিসাব নেই। মনে আছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন থিয়েটার চর্চায় একটা উত্তাল সময় কাটিয়েছি, ফকির আলমগীর তখন আমাদের কণ্ঠে কণ্ঠে ছিলেন। স্বাধীনতাবিরোধী ছাত্র শক্তি তখন ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে। আমরা ফকির আলমগীরের গান গাইতে গাইতে দল বেঁধে ঘুরছি ক্যাম্পাসে। সুযোগ পেলেই নাটকের কোনো অংশে তাঁর গান ঢুকে পড়েছে। এই যে দুঃসাহস, মুখোমুখি দাঁড়াবার এই যে প্রেরণা, তার জন্য ফকির আলমগীরের কাছে মাথা নত করতেই হয়।
শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফকির আলমগীর। খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গার্ড অব অনার দেওয়া হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শত শত মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন করোনার ভয় উপেক্ষা করে। তখনো বৃষ্টি ঝরছিল।
আরও পড়ুন
হিম শরীর বয়ে নিয়ে গাড়িটা যখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এল, তখন বৃষ্টি পড়ছিল, ঝুমবৃষ্টি। পুরো নব্বইয়ের দশকজুড়ে আমরা যখন বড় হয়ে উঠতে থাকি, তখন ছিল মাইকের যুগ। খোলা মাঠে মাইক বাজিয়ে গান শোনা ছিল তখনকার শখ। মধ্যরাতে সে মাইক থেকে ভেসে আসত ‘মায়ের এক ধার দুধের দাম’, ‘ও সখিনা গেছস কি না ভুইলা আমারে’, ‘ড্যাগেরও ভেতরে ডাইলে চাইলে’, ‘মন আমার দেহঘড়ি’ ইত্যাদি জনপ্রিয় সব গান। আমরা বিমোহিত হয়ে যেতাম। সময়টাই ছিল বিমোহিত হওয়ার। ভাওয়াইয়া, কীর্তনের মতো গানের বাইরে নতুন ধরনের গানের কথা ও সুর আমাদের কানে পড়ল তখন।
এর পরেই সময় কিছু পালটে গেল। শুনতে থাকলাম ‘আমার এক জনমে পাইতাম যদি’, ‘কৃষ্ণ প্রেমের পোড়া দেহ’, ‘ওই পাখিটা মানলো না তো পোষ’ এরকম কিছু রোমান্টিক গান। তারও পরে, কিছুটা বড় শোনা হলো ‘কালো কালো মানুষের দেশে’, ‘হঠাৎ কোনো পথে দেখা হলে দুজনাতে’। আমাদের প্রচলিত গানের বাইরে একটু অন্য রকম গান।
তখন যদিও গানের জগৎ সম্পর্কে খুব জানাশোনা ছিল না। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম, বিষয়গুলো নতুন। না, নতুন গানের জন্য নয়। বরং নতুন একটি প্রজন্মের গান শোনার ধরন বদলে দেওয়ার জন্য ফকির আলমগীর আমাদের প্রজন্মের কাছে শ্রদ্ধাষ্পদ।
আমাদের যাঁদের স্মৃতিতে গ্রাম এখনো উজ্জ্বল হয়ে আছে, তাঁরা বুঝবেন। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন যাঁদের এখনো স্মৃতিতে আছে, তাঁরাও বুঝবেন। যাঁরা সদ্য স্বাধীন দেশে যুবক ছিলেন, তাঁরাও বুঝবেন ফকির আলমগীরের চিরবিদায়ে কেন অন্তর কাঁদে।
আর যাঁরা রাজনীতিসচেতন হতে চেয়েছিলাম, ফকির আলমগীরের গান তাঁদের কাছে ছিল সত্যিকারেই গণমানুষের গান। ‘গণসংগীত’ ঘরানায় আবদ্ধ যে গান, আমাদের দেশে সে গানের শিল্পী হিসেবে আমরা তাঁকেই জানি। কতবার কত কারণে আমরা তাঁর গান গেয়েছি, তার কোনো হিসাব নেই। মনে আছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন থিয়েটার চর্চায় একটা উত্তাল সময় কাটিয়েছি, ফকির আলমগীর তখন আমাদের কণ্ঠে কণ্ঠে ছিলেন। স্বাধীনতাবিরোধী ছাত্র শক্তি তখন ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে। আমরা ফকির আলমগীরের গান গাইতে গাইতে দল বেঁধে ঘুরছি ক্যাম্পাসে। সুযোগ পেলেই নাটকের কোনো অংশে তাঁর গান ঢুকে পড়েছে। এই যে দুঃসাহস, মুখোমুখি দাঁড়াবার এই যে প্রেরণা, তার জন্য ফকির আলমগীরের কাছে মাথা নত করতেই হয়।
শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফকির আলমগীর। খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গার্ড অব অনার দেওয়া হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শত শত মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন করোনার ভয় উপেক্ষা করে। তখনো বৃষ্টি ঝরছিল।
আরও পড়ুন
আগামী ১৫ নভেম্বর মেক্সিকোতে শুরু হচ্ছে ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৪ ’। এবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ আনিকা আলম।
৬ ঘণ্টা আগেনয়নতারার জীবনকাহিনি নিয়ে তথ্যচিত্র বানিয়েছে নেটফ্লিক্স। ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেইরি টেল’ নামের তথ্যচিত্রটি নয়নতারার জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তি পাবে আগামী ১৮ নভেম্বর।
৮ ঘণ্টা আগেকয়েক মাস আগে মুম্বাইয়ের হাজী আলীর দরগা সংস্কারের জন্য প্রায় দেড় কোটি রুপি দান করেছিলেন অক্ষয় কুমার। এবার তিনি এগিয়ে এলেন অযোধ্যার রাম মন্দিরের ১২০০ হনুমানদের সাহায্যে। দিয়েছেন এক কোটি রুপি।
১০ ঘণ্টা আগেসুড়ঙ্গ হিট হওয়ার পর অনেকেই মনে করেছিলেন, সিনেমার যাত্রাটা দীর্ঘ হবে নিশোর। তমাও নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। কিন্তু হয়েছে তার উল্টো। সুড়ঙ্গ মুক্তির পর অনেকটা আড়ালেই চলে যান তাঁরা দুজন।
১০ ঘণ্টা আগে