Ajker Patrika

দেবব্রত বিশ্বাস: সৃজন স্বাধীনতায় অঙ্গীকারবদ্ধ এক শিল্পী 

বিদ্যুৎ সরকার
দেবব্রত বিশ্বাস: সৃজন স্বাধীনতায় অঙ্গীকারবদ্ধ এক শিল্পী 

দেবব্রত বিশ্বাস ওরফে জর্জ। সংগীতজনের কাছে তিনি পরিচিত ‘জর্জ দা’ নামে। কিশোরগঞ্জে থাকাকালে আরও দুটো নাম ছিল তাঁর—দেবু এবং খোকা। সেখানে পরিচিতদের অনেকেই এই দুই নামের কোনো একটি দিয়েই চিনতেন বা ডাকতেন তাঁকে। পরে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে কলকাতায় যাওয়ায় তাঁর দেবু ও খোকা নাম ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যায়। কলকাতার মানুষের কাছে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন পিতা দেবেন্দ্রকিশোর বিশ্বাসের ইংরেজপ্রীতির নিদর্শন হিসেবে পাওয়া জর্জ নামে। ১৯১১ সালের ২২ আগস্ট তাঁর জন্মের কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডের রাজা হন পঞ্চম জর্জ। ইংরেজদের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও অতিভক্তি বশত তাঁর বাবা-মা আদর করে তাঁকে ডাকতেন জর্জ নামে। দেবব্রত বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত এই জর্জ থেকে ‘জর্জ দা’ নামেই সংগীত সমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন। 

দেবব্রত বিশ্বাসের বাবা ছিলেন গোঁড়া ব্রাহ্ম। সিনেমা, থিয়েটার, যাত্রাগানের প্রতি তাঁর ছিল ঘোর অমত। তবে ব্রাহ্ম হওয়ায় বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় প্রার্থনা হিসেবে মায়ের সঙ্গে দেবব্রত বিশ্বাস গাইতেন ব্রহ্মসংগীত। এই প্রার্থনা থেকেই তাঁর গাওয়ার শুরু। এ ছাড়া মায়ের কাছ থেকে শুনে শুনে আরও কিছু গান শিখে নিয়েছিলেন তিনি। ময়মনসিংহ ব্রাহ্মসমাজের মাঘোৎসবের গানের দলে প্রতি বছর মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনিও। বাড়িতে হারমোনিয়াম, অর্গান ছিল। বলা যায়, শৈশব থেকেই তিনি পেয়েছিলেন সংগীত-সহায়ক এক পরিবেশ।

স্কুলে পড়ার সময় কংগ্রেস ভলান্টিয়ার হয়ে সমবয়সী কয়েকজনকে নিয়ে দেশাত্মবোধক গানও গেয়েছেন বিভিন্ন স্বদেশি সভায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহের কনক দাস ছিলেন তার মাসি (বড় মামির বোন)। তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গানও গেয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। ১৯২৮-২৯ সালে কলকাতায় কলেজে পড়াকালীন সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও সন্তোষ সেনগুপ্তের মতো সংগীতগুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। বিশেষ করে হিমাংশু দত্তের কাছ থেকে এ সময় বেশ কিছু গান শিখে নেন দেবব্রত বিশ্বাস। পরে সেই গানগুলো ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনের সংগীতভবনের অধ্যক্ষ হেমেন্দ্রলাল রায়কে শুনিয়ে তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছিলেন তিনি। কাজী নজরুল ইসলামও সেনোলা রেকর্ড কোম্পানির হয়ে তাঁকে দিয়ে দুটি গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। বোঝা যায়, সংগীত সম্পর্কে যেখানে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, শিখে নিয়েছেন। 

তবে মাঝেমধ্যে দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান গাইলেও রবি ঠাকুরের গানের প্রতিই ছিল তাঁর অতলান্ত ভালোবাসা। বিশেষ করে মায়ের কাছে শেখা ও কলকাতায় ব্রাহ্মমন্দিরে শোনা ব্রহ্মসংগীতগুলো সব সময় তাঁকে আলোড়িত করেছে। এ গান সম্পর্কে তিনি বলছেন, ‘সেই সব আধ্যাত্মিক গানগুলোর মধ্যে কী যেন একটা মাধুর্য ছিল, যা আমার হৃদয়কে অত্যন্ত গভীরভাবে নাড়া দিত।’ বড় হতে হতে রবীন্দ্রসংগীত হয়ে ওঠে তাঁর যাপিত জীবনের আশ্রয়। সেটা আরও পাকাপোক্ত হয় ১৯৩৫ সালের দিকে ইন্দিরা দেবীর সান্নিধ্যে এসে। এ ছাড়া অনাদিকুমার দস্তিদারের কাছ থেকেও অনেক গান শেখেন তিনি। সিনেমার গানের প্রয়োজনে তিনি পঙ্কজ মল্লিকের সাহচর্য পেয়েছেন। শেখার ব্যাপারে দেবব্রত বিশ্বাস ছিলেন মুক্তমনা। যখন যেখানে যার কাছে সুযোগ পেয়েছেন, শিখেছেন তিনি। 

সংগীত, বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং জনপ্রিয় হওয়ার পরেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে তিনি হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। এক প্রকার ব্রাত্য করেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে নামী-অনামী অনেক শিল্পীই বহু প্রচারিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিংবা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রাণভরে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। ভাব ও সুরের সমন্বয় সেখানে যে সব সময় রক্ষা হয়, তা জোর গলায় বলা যায় না। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড কেউ বের করতে চাইলে তাঁকে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের অনুমোদন নিতে হতো। কোনো শিল্পীর সুর-বাজনা-গায়নভঙ্গি একটু এদিক-ওদিক হলেই তাঁর রেকর্ডটি প্রকাশের অনুমতি দিতে বোর্ড কার্পণ্য করত। 

তবে এই কৃপণতার মাত্রা সবার ক্ষেত্রে এক রকম ছিল না। বলা যায়, সবচেয়ে বেশি ছিল দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি। কেউ কেউ সঠিকভাবে না গেয়েও রেকর্ড বের করার অনুমতি পেয়ে যেতেন। কিন্তু দেবব্রত বিশ্বাস সহজে অনুমতি পেতেন না। কারণ তিনি রবীন্দ্রসংগীতের গায়নে অনুভূতি সঞ্জাত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করতেন। ফলে, গানের কথা অনুযায়ী ভাব সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট মিউজিক ব্যবহার করতেন তিনি। এ জন্য শান্তিনিকেতনি সুর ও পরিবেশনারীতির কিছু ব্যত্যয়ও ঘটাতেন দেবব্রত। 

রবীন্দ্রনাথের সংগীতচিন্তা সম্পর্কে দেবব্রত বিশ্বাসের ছিল সুস্পষ্ট ধারণা। ভরাট কণ্ঠ, নতুন গায়নভঙ্গি ও বাণীবাহিত ভাবকে শ্রুতিনন্দনভাবে উপস্থাপনার কারণে শ্রোতারা তাঁকে ভালোবেসেছিল অকৃত্রিম হৃদয়াবেগ দিয়েই। সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের জনপ্রিয়তার একটা প্রমাণ পাওয়া যায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি আমার গানের স্বরলিপি বইয়ে জানাচ্ছেন, ‘শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতে আমার ধারণা জর্জদারই হাইয়েস্ট। একবার ওঁর বিক্রির স্টেটমেন্ট দেখেছিলুম। ভাবা যায় না। শুধু রবীন্দ্রসংগীত বেচে এত টাকা। না, না ওই জর্জদারই ম্যাক্সিমাম। তারপর আমার।’

সংগীতানুরাগীদের কাছে প্রিয় হলেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ড রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে দেবব্রত বিশ্বাসের ভাবনাকে গ্রহণ করতে পারেনি। এ নিয়ে ১৯৬৪ সাল থেকে তাঁর সঙ্গে বোর্ডের বিবাদ শুরু হয়। এ সময় তাঁর গাওয়া চারটি রবীন্দ্রসংগীতের (১. শুধু যাওয়া আসা, ২. এসেছিলে তবু আস নাই, ৩. মেঘ বলেছে যাব যাব, ৪. গোধূলিগগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা) রেকর্ড মিউজিক বোর্ড প্রকাশ করতে বাধা দেয়। শান্তিদেব ঘোষ যে গানকে প্রকাশযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, বোর্ডের কর্মকর্তারা সে মতও গ্রহণ করেননি। 

এর পর থেকে মাঝে মাঝেই দেবব্রত বিশ্বাস বোর্ড কর্মকর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন। বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের এই খবরদারিমূলক আচরণের প্রতিবাদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই তিনি রবীন্দ্রসংগীত রেকর্ড বন্ধ করে দেন। অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি সংগীত থেকে ধীরে-ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ১৯৭১ সালের পর কোনো রবীন্দ্রসংগীত তিনি আর রেকর্ড করেননি। এ কারণে কারও-কারও কাছে তিনি পেয়েছেন অতি-অভিমানী কিংবা চরম জেদির তকমা। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, এই অতি-অভিমান কিংবা চরম জেদের মূলে রয়েছে শিল্পীর স্বাধীনতা ও অধিকার আদায় এবং তাকে সমুন্নত রাখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা। 

হেমাঙ্গ বিশ্বাস, ওমর শেখ, নিরঞ্জন সেন প্রমুখের সঙ্গে দেবব্রত বিশ্বাসরবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে যথেষ্ট না জানা, অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী সনদধারী কিছু মানুষের ক্ষমতাচর্চা ও ঈর্ষাজাত সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে শুধু গাওয়ার বিষয় ছিল না। দৈনন্দিন যাপনে তা ছিল আত্মচেতনা ও সম্মানবোধকে শাণিত করার মন্ত্র। 

শুধু শ্রোতার কাছেই নন, শিল্পীদের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়, বরণীয়। দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের সে আচরণ অন্যান্য শিল্পীকেও ব্যথিত করেছিল–লজ্জিতও। মান্না দে তাঁর আত্মজীবনী জীবনের জলসাঘরে জানাচ্ছেন, ‘কিছু সুরহীন মানুষ রবীন্দ্রসংগীতের অভিভাবক সেজে রবীন্দ্রসংগীতকে আটকে রেখেছেন তাঁদের নিজস্ব আঙিনায়, নিজস্ব বেড়াজালে। কখনো তাকে হয়ে উঠতে দেননি জনগণের সংগীত। প্রাণের গানকে আবদ্ধ রেখেছেন প্রাণহীন এক বিচিত্র স্বঘোষিত রাবীন্দ্রিক ঢঙে। এ অন্যায়, এ ঘোরতর এক অন্যায়। প্রাণ ঢেলে হৃদয়ের সুরে আবেগমথিত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন জর্জদা। আহা! কী গান গাইতেন উনি। এক-একটা গানের এক-একটা জায়গায় ওঁর সুর লাগানো শুনে বুকের ভেতর একটা ভালো লাগার অনুভূতি আমার চোখে আবেগ আপ্লুত জল এনে দিত। সেই জর্জদার গান গাওয়া ওরা বন্ধ করে দিল।’

শিল্পীর অর্থনৈতিক অধিকার নিয়েও সচেতন ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস। সে সময় অন্যান্য কণ্ঠশিল্পীরা বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ নিজের কাঁধে নিয়ে এইচএমভি ও কলাম্বিয়াতে রেকর্ড করে রয়্যালটি পেতেন মাত্র পাঁচ শতাংশ। দেবব্রত বিশ্বাস সেখানে দশ শতাংশ রয়্যালটি ও বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ কোম্পানিকে বহনের দাবি করেন। জনমানসে গ্রহণযোগ্যতার কারণে কোম্পানি তাঁকে এক হাজার কপি বিক্রি হওয়ার শর্তে এই দাবি মেনে নেয়। উল্লেখ্য, তাঁর এক শ’র বেশি গানের মধ্যে এমন কোনো গান নেই যে তিনি রয়্যালটি পাননি। বলা যায়, বিত্ত ও চিত্ত সংকীর্ণতার বেড়াজাল ছিঁড়ে রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। অন্য দুজন হলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। 

এই প্রতিবাদী চেতনা তিনি মূলত পেয়েছিলেন আইপিটিএ তথা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে। সাম্যবাদে আস্থাবান এ শিল্পী ১৯৪০ এর দশকের শুরুতে আইপিটিএর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের গান, বিশেষত তাঁর স্বদেশপ্রেমমূলক গানগুলো গাওয়া শুরু করেন। দেবব্রত বিশ্বাসের দরাজ কণ্ঠ ও স্বতন্ত্র গায়কির কারণে শ্রোতারা আবিষ্কার করলেন নতুন এক রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রসংগীত যে এভাবে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও গাওয়া যেতে পারে, তা দেবব্রত বিশ্বাসের আগে কোনো শিল্পী কল্পনা করেননি। 

এ সম্পর্কে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলছেন, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের সবল উদ্দীপক ধারার সঙ্গে গণসঙ্গীতকে মিশিয়ে দিলেন জর্জদা। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্পর্কে আমাদের অর্থাৎ গণসঙ্গীত গাইয়েদের মনোভাবকে সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করলেন যেমন, তেমনি রবীন্দ্রসংগীতকে মোহান্তদের বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও মন্দিরের বেদি থেকে গণসঙ্গীতের প্রান্তরে নামিয়ে আনলেন। এই দুই ধারার সমন্বয়ে জর্জদা যেমন শ্রেষ্ঠ গণসঙ্গীত শিল্পী, তেমনি শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। এখানেই জর্জদার যুগান্তকারী ভূমিকা। এখানেই তিনি মহান গণসঙ্গীতশিল্পী।’ এ সময় ‘নবান্ন’, ‘রক্তকরবী’র মতো অবিস্মরণীয় নাটকে অভিনয়ও করেন তিনি। 

জন্মভূমি পূর্ববাংলার প্রতি তাঁর ছিল গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য থেকে জানা যায়, পূর্ববাংলাকে দেবব্রত বিশ্বাস বলতেন ‘মা’ আর পশ্চিমবঙ্গকে বলতেন ‘বিমাতা’। মায়ের রাতারাতি বিদেশ হয়ে যাওয়াকে তিনি কোনো দিন মেনে নিতে পারেননি। আমৃত্যু বয়ে বেড়িয়েছেন দেশভাগের সেই ক্ষত। হয়েছেন যন্ত্রণায় কাতর। তবে দেশভাগ তাঁকে মর্মাহত করলেও জন্মভূমির প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে তিনি ছিলেন সচেতন। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ ও সহানুভূতি আদায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তিনি সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়ে দুটি গান লিখে স্বরলিপিসহ পাঠানোর অনুরোধ জানান। 

বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার এ কথা জানা যায় তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত’ থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জন্মভূমি পূর্ববঙ্গের অর্থাৎ বাংলাদেশের আমার ভাই-বোনেরা জীবন-মরণ পণে যে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সেই লড়াইকে তিনি সমর্থন করেন কিনা জানতে চাইলাম। যদি সেই লড়াই-এর প্রতি তাঁর সামান্য একটু সমর্থন থাকে তাহলে ওদের মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে দুটি গান আমায় লিখে পাঠাতে অনুরোধ জানালাম, যাতে সেই গান দুটির রেকর্ড প্রকাশ করে এবং নানা অনুষ্ঠানে গেয়ে এপার বাংলার জনসাধারণকে বাংলাদেশের আমার ভাইবোনদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।’ সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কথা রেখেছিলেন। কয়েক দিন পরে দুটো গান লিখে ও স্বরলিপি করে তিনি পাঠিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে। 

শান্তিনিকেতনি গায়ন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সুর কাঠামো বজায় রেখে আত্মোপলব্ধি দিয়ে স্বাধীনভাবে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কারণে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছে তিনি ব্রাত্য হয়েছেন বটে। কিন্তু সংগীতামোদী মানুষের কাছে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা। এখনো রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় ও অনুসরণীয় শিল্পী তিনি। তাঁর ভরাট গলায় গাওয়া ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’, ‘মহারাজ একি সাজে’ কিংবা ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ সিনেমায় গাওয়া ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’সহ অসংখ্য গান আজও শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। শিল্পীর স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য আমৃত্যু চেষ্টা তাঁকে শিল্পীদের মণিকোঠায় স্থান করে দিয়েছে। 

১৯৮০ সালের ১৮ আগস্ট তাঁর চলে যাওয়া বাংলার সংগীতানুরাগী সাধারণ মানুষকেও করেছিল শোকাহত। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তাঁর এক সময়ের কক্ষসঙ্গী ও শিল্পী সন্তোষ সেনগুপ্ত লিখছেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, সারা দেশের দুর্ভাগ্য যে দেবব্রত বিশ্বাস আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু কী সে যাওয়া-কী সে মহিমান্বিত নিষ্ক্রমণ-অগণিত জনতার আকুল ক্রন্দনধ্বনি-আকুল হাহাকার যেন তারই গানের রূপ নিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ”

বিদ্যুৎ সরকার: শিক্ষক ও সংগীত শিল্পী

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাপ্পা মজুমদারের নতুন গান ‘এই ব্যথা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাপ্পা মজুমদার
বাপ্পা মজুমদার

অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গায়ক বাপ্পা মজুমদার। গানের সঙ্গেই তাঁর সতত বসবাস। বাংলা গানের এই খরার সময়েও ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে নিয়মিত গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন বাপ্পা মজুমদার। নিজে যেমন গাইছেন, অন্যদের জন্যেও নতুন গান বাঁধছেন নিয়মিত। এবার তিনি অন্যের কথা ও সুরে গাইলেন ভিন্ন ধাঁচের একটি গান। গানের শিরোনাম ‘এই ব্যথা’।

‘এই ব্যথা কি তোমার অনুগত/ চাইলেই রোদে এসে পেতে দেয় গা/ এই ব্যথা কি দিনান্তে কোনো হাওয়া/ স্বপ্নের মতো সারা রাত্রি জেগে থাকা’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন মাহি ফ্লোরা। সুর করেছেন এহসান রাহি, সংগীতায়োজনে আমজাদ হোসেন। গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন শুভব্রত সরকার। ১৮ ডিসেম্বর ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে এই ব্যথা শিরোনামের গানের ভিডিও। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে দেশি ও আন্তর্জাতিক মিউজিক প্ল্যাটফর্মগুলোয়।

এই ব্যথা গানটি প্রসঙ্গে বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘অনেক দিন পর আয়োজন করে একটা গান করা হলো। আমি আনন্দিত। এই টিমে যারা কাজ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ট্যালেন্টেড। সবাই তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন এই গানে। আরও আনন্দের ব্যাপার হলো, আমার বড় কন্যার জন্মদিনে গানটির প্রকাশ আমাকে মুগ্ধতার অন্য জগতে নিয়ে গেছে। গানটির ভিডিও নিয়ে একটু বলতে চাই, এই ধরনের মিউজিক ভিডিও আমাদের দেশে একেবারেই নতুন। দেশের মিউজিক ভিডিওর অঙ্গনে এই ভিডিও ভিন্নমাত্রা এনে দেবে বলে বিশ্বাস করি।’

ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কর্ণধার ধ্রুব গুহ বলেন, ‘বাপ্পাদার এই ব্যথা গানটি প্রকাশ করতে পেরে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন আনন্দিত। আমি আশা করছি, গানটি শ্রোতাদের অনেক ভালো লাগবে।’

সম্প্রতি ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কার্যালয়ে গানটির প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়। নতুন গান প্রকাশ উপলক্ষে বাপ্পা মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন গীতিকার তরুণ মুন্সী, কণ্ঠশিল্পী জুয়েল মোর্শেদ, লুৎফর হাসান, কিশোর দাসসহ সংগীতাঙ্গনের অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যু: শিল্পী-নির্মাতাদের উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অর্ণব, চমক, সিয়াম ও পিয়া
অর্ণব, চমক, সিয়াম ও পিয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের লড়াকু যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে থমকে গেছে দেশ। শোকাহত দেশের মানুষ। শোকের ছায়া নেমেছে দেশের শোবিজ অঙ্গনেও। একই সঙ্গে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ছায়ানট ও গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়।

হাদি ও তাঁর শিশুপুত্রের একটি ছবি শেয়ার করে ঢাকাই সিনেমার নায়ক সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’

অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক লিখেছেন একাধিক পোস্ট। একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নামটা মনে রেখো, শহীদ-বীর শরিফ ওসমান হাদি।’ অন্য একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘সে কোনো এমপি-মন্ত্রী ছিল না, কারও হক আত্মসাৎ করেনি, সাধারণ মানুষের উপর অন্যায় করেনি। তবুও-সামান্য কথার দায়ে, একটা জীবন এভাবে শেষ হতে পারে?’ ভিন্ন একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনায় আসবে অগ্নিসংযোগ, কিন্তু আসার কথা ছিল হাদির কথা, তাঁর বীরত্বের কথা, খুনের বিচারের কথা। এ দেশে মানুষ মরলে, শোকও নিরাপদ থাকে না। সবকিছুই ঢেকে ফেলা হয় আগুনে, ভাঙচুরে, রাজনীতিতে। এখানে রক্তের রংও রাজনৈতিক। বরাবরই এখানে বিপ্লব বেদখল হয়। বরাবরই আমরা এখানে অসহায়।’

নির্মাতা অনন্য মামুন লিখেছেন, ‘মৃত্যুও পবিত্র সুন্দর হতে পারে, শহীদ হাদিকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।’

অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ওসমান হাদির একটি ছবি প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘শহীদ ওসমান বিন হাদি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে থাকবেন।’

মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল হাদির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে লিখেছেন, ‘এটা সত্যিই খুব কষ্টের আর একেবারেই মেনে নেওয়ার মতো না। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন, আর তাঁর শোকাহত পরিবারকে, বিশেষ করে তাঁর ছোট্ট বাচ্চাকে ধৈর্য, শক্তি আর সান্ত্বনা দেন।’ গণমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শোক জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এটি আমার হৃদয় ভেঙে দিচ্ছে। আগুন ভবন ধ্বংস করতে পারে, সাহস নয়।’

সংগীতশিল্পীদের অস্তিত্ব রক্ষা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে রাজনৈতিক সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে অর্ণব লিখেছেন, ‘আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে এবং ভোট দিতে হবে... নয়তো সংগীতশিল্পীরা বিপদে পড়ব। দেখুন ছায়ানটের সাথে কী করেছে! আমাদের পাল্টা লড়াইয়ের একমাত্র উপায় ভোট দেওয়া এবং অন্যদের ভোট দিতে উৎসাহিত করা।’

অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান লিখেছেন, ‘ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তাঁর পরিবার, তাঁর ছোট্ট বাবুটা এই শোক কাটিয়ে উঠুক। রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হোক। দেশে শান্তি ফিরে আসুক হে দয়াময়।’

নির্মাতা আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘ওসমান হাদি, শান্তিতে ঘুমান। আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন এবং আপনার পরিবার ও সন্তানকে শক্তি দিন। তারা হয়তো আপনাকে হত্যা করেছে কিন্তু আপনার শুরু করা লড়াই তারা থামাতে পারবে না।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির অকালমৃত্যুর প্রতিবাদের ভাষা ভাঙচুর, নৈরাজ্য হতে পারে না। এই মুহূর্তে সবার এক থাকা প্রয়োজন। দেশে বিশৃঙ্খলা যারা করতে চায় তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশের সম্পদের আর ভবিষ্যতের বারোটা বাজায়েন না!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বনন্দিত চীনা ধারাবাহিক এবার বাংলায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘রহস্যময়ী’ সিরিয়ালের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘রহস্যময়ী’ সিরিয়ালের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রাচীন চীনের ওয়েই সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বহুল আলোচিত চীনা ধারাবাহিক ‘প্রিন্সেস এজেন্টস’। ২০১৭ সালে চীনের হুনান টিভিতে প্রচারের পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ধারাবাহিকটি। এরপর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মেক্সিকো, পেরুসহ অনেক দেশে অনূদিত হয়ে প্রচারিত হয়েছে। প্রিন্সেস এজেন্টস এবার আসছে বাংলা ভাষায়। দীপ্ত টিভিতে ‘রহস্যময়ী’ নামে আজ ২০ ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহের শনি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন বিকেল ৫টা ৫০ মিনিট ও রাত ৮টা ৩০ মিনিটে দেখা যাবে ধারাবাহিকটি।

তিনটি অভিজাত বংশ ওয়েই, ইউয়েন আর ঝাওদের নিয়ে এগিয়ে গেছে ধারাবাহিকের গল্প। সঙ্গে যুক্ত হয় ইয়ান পরিবার এবং কয়েকটি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। প্রাদেশিক শাসনকর্তারা যেন বিদ্রোহ করতে না পারে, সে জন্য ওয়েই সম্রাট প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের একজন করে ছেলেকে নিজের কাছে এনে রাখে। মার্কুইস ডিংবেই নামে পরিচিত উত্তর ইয়ানের শাসনকর্তা ইয়ান শিচেংয়ের ছেলে প্রিন্স ইয়ান শুন সম্রাটের কাছে বড় হতে থাকে।

ইউয়েন পরিবারের দুজন উত্তরসূরি—ইউয়েন ইউয়ে ও ইউয়েন হুয়ায়। ইউয়েন ইউয়ে অত্যন্ত ধীরস্থির, সৎ এবং কোমল মানসিকতাসম্পন্ন হলেও ইউয়েন হুয়ায় বেশ নিষ্ঠুর আর চঞ্চল। সে যেভাবেই হোক ইউয়েন ইউয়েকে পথ থেকে সরিয়ে দিতে চায়। ঘটনাক্রমে ইউয়েন পরিবারে আগমন ঘটে বিখ্যাত গুপ্তচর লুহির মেয়ে চু-চিয়াওর। অতীতের কিছুই মনে করতে পারে না সে। নিজের যোগ্যতা দিয়ে সে ইউয়েন ইউয়ের ব্যক্তিগত দাসী নির্বাচিত হয়। প্রথম দেখাতেই চু-চিয়াওর প্রেমে পড়ে যায় লর্ড ইউয়েন ইউয়ে। কিন্তু নিজের সামাজিক অবস্থানের জন্য বিষয়টাকে সে কোনোভাবেই প্রকাশ হতে দিতে চায় না।

অন্যদিকে মার্শাল আর্টে দক্ষতা দেখে চু-চিয়াওর প্রেমে পড়ে যায় প্রিন্স ইয়ান শুন। ইউয়েন, ঝাও আর ওয়েইদের মিলিত ষড়যন্ত্রে প্রিন্স ইয়ান শুনের বাবা মার্কুইস ডিংবেই এবং তার পুরো পরিবার প্রাণ হারায়। পরিবারের সঙ্গে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় প্রিন্স ইয়ান শুন। কিন্তু তরুণ লর্ডরা যেভাবেই হোক ইয়ান শুনকে সরিয়ে দিতে চায়। অন্যদিকে সম্রাট চান ইয়ান শুনকে গৃহবন্দী করে উত্তর ইয়ানের ওপর নিয়ন্ত্রণ।

রহস্যময়ী ধারাবাহিকটির প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোর্শেদ সিদ্দিকী মরু, প্রযোজনা করেছেন তসলিমা তাহরিন। ধারাবাহিকটির অনূদিত সংলাপ রচনা ও সম্পাদনায় কাজ করেছেন দীপ্ত টিভির নিজস্ব সংলাপ রচয়িতার দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টম ক্রুজের নতুন সিনেমা ‘ডিগার’

বিনোদন ডেস্ক
টম ক্রুজ। ছবি: সংগৃহীত
টম ক্রুজ। ছবি: সংগৃহীত

দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা ইথান হান্ট হিসেবে টম ক্রুজ তাঁর যাত্রা শেষ করেছেন এ বছরের মে মাসে। ১৯৯৬ সালে ‘মিশন: ইম্পসিবল’ দিয়ে শুরু হয়েছিল এ যাত্রা। শেষ হয়েছে অষ্টম সিনেমা ‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ দিয়ে। সর্বশেষ সিনেমাটি আয় করেছে প্রায় ছয় শ মিলিয়ন ডলার। এই সাফল্য কাঁধে নিয়েই নতুন জার্নি শুরু করেছেন টম। যুক্ত হয়েছেন মেক্সিকান নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতুর ‘ডিগার’ সিনেমায়।

ইনারিতুর পরিচালনায় কাজ করতে চলেছেন টম ক্রুজ, এ খবর আগেই জানানো হয়েছিল। ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে এসেছে সিনেমার শিরোনাম, পোস্টার এবং ৫০ সেকেন্ডের একটি অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। ওয়ার্নার ব্রস ও লিজেন্ডারি এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত ডিগার মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ২ অক্টোবর। এবার আর অ্যাকশন নয়, কমেডি চরিত্রে দেখা দেবেন টম ক্রুজ। টিজারে দেখা গেল, একটি পরিত্যক্ত ভবনের নিচতলায় বেলচা হাতে নাচতে নাচতে ঢুকলেন টম। তারপর চরিত্রটিকে দেখা গেল জাহাজে। একইভাবে বেলচা হাতে নাচতে নাচতে রেলিং ধরে হাঁটছে।

জানা গেছে, ডিগার সিনেমায় রকওয়েল নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ। টিজারে আলো-আঁধারিতে যতখানি দেখা গেল, তাতে মনে হচ্ছে, সম্পূর্ণ ভিন্ন এক লুকে এ সিনেমায় হাজির হবেন তিনি। সিনেমার গল্প কী, তা জানা না গেলেও ধারণা মিলেছে, এতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র হিসেবে দেখা যাবে টমকে। মানবতার ত্রাণকর্তারূপে এক ভয়ংকর মিশনে নেমেছে রকওয়েল চরিত্রটি। ‘দ্য রেভেন্যান্ট’-এর পর ডিগার দিয়ে আবার ইংরেজি ভাষার সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন ইনারিতু। যুক্তরাজ্যে ছয় মাস ধরে হয়েছে শুটিং। এতে শুধু অভিনয় নয়, ইনারিতুর সঙ্গে যৌথভাবে সিনেমাটি প্রযোজনাও করছেন টম ক্রুজ। তিনি ছাড়া অভিনয়ে আরও আছেন সান্ড্রা হুলার, জন গুডম্যান, মাইকেল স্টুলবার্গ, জেসি প্লেমন্স, সোফি ওয়াইল্ড, রিজ আহমেদ, এমা ডি’আর্সি প্রমুখ।

আগামী ২ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হবে ডিগার সিনেমার। সেখানেই ইনারিতুর তিনটি সিনেমা ‘বারদো: ফলস ক্রনিকল অব আ হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’, ‘বার্ডম্যান’ এবং ‘টোয়েন্টি ওয়ান গ্রামস’ প্রদর্শিত হয়েছিল। ডিগার সিনেমাকে নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতু বর্ণনা করেছেন ‘বিপর্যয়কর মাত্রার একটি নিষ্ঠুর এবং বন্য কমেডি’ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘এটি একই সঙ্গে ভয়ংকর, মজার ও সুন্দর। আমি জানি, দর্শক আমার কিংবা টমের কাছ থেকে কমেডি সিনেমা আশা করে না। তবে এর কাহিনিতে কমেডির সঙ্গে অনেকটা ভয়ের মিশেলও থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত