তামান্না-ই-জাহান, ঢাকা
প্রথমে সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সবশেষ আজ বুধবার সকাল হলো ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ খ্যাত বাপ্পি লাহিড়ির প্রয়াণের খবরে। যেন অজানা সুরালোকে পাড়ি দিচ্ছেন একের পর এক সংগীত মহারথী।
বাপ্পি লাহিড়ির গান মানেই নানা বাদ্যযন্ত্র, আর অফুরন্ত প্রাণশক্তির সম্মিলন। পশ্চিমা মিউজিককে ভারতীয় ঢংয়ে ভিন্ন এক রূপ দিয়েছিলেন তিনি। যা ছুঁয়েছিল আশির দশকের তরুণ সংগীতপ্রেমীদের মন।
বাপ্পি লাহিড়ির গানের শুরুটা হয়েছিল মাত্র তিন বছর বয়সে, তবলা বাজানো দিয়ে। ১৯৭৫ সালে হিন্দি ছবি ‘জখমি’ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগীতজগতে পথ চলার শুরু। এর পর আশির দশকে হিন্দি ছবির জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাপ্পি লাহিড়ি। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের ‘ডিসকো কিং’। বাপ্পি লাহিড়ি না থাকলে মিঠুন চক্রবর্তীকে এত সহজে হয়তো আবিষ্কার করতে পারতেন না কেউ। ‘আই অ্যাম এ ডিসকো ড্যান্সার’, কিংবা ‘ইয়াদ আ রাহা হ্যায়’ তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
ক্লাব ও ডিসকোতে আজও বাজে ‘আই অ্যাম এ ডিসকো ড্যান্সার’ গানটি। আশির দশকে বাপ্পি লাহিড়ির ম্যাজিকই ছিল এমন। তবে শুধু যে ডিসকো গান তা নয়, রোমান্টিক গানেও বাপ্পি লাহিড়ির গায়কি ও সুরে ছিল সমান জাদু। বাংলা ছবি ‘অমর সঙ্গী’-এর ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ তো এখনো প্রেমের গানের তালিকার শীর্ষে। তাঁর সুরে আরতি মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়’ রীতিমতো নস্টালজিয়া।
একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন। ‘ডিসকো ড্যান্সার’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘চালতে চালতে’, ‘শরাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কমান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন অসংখ্য গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি থ্রি’-এর জন্য।
বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালোবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ অনেক জনপ্রিয় ছবিতে সুর দিয়েছেন। গায়কির নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।
বাপ্পি লাহিড়ির গানের ছন্দে পা মেলাতে গিয়ে নতুন স্টেপ আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। ‘নমক হালাল’ ছবির ‘কে পাগ ঘুঙরু বান্ধ মেরা’ গানের সেই স্টেপ পরে কাল্ট হয়ে যায়। একবার এক সাক্ষাৎকারে বাপ্পি লাহিড়ি বলেছিলেন, তিনি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অমিতাভ বচ্চন!
বাপ্পি লাহিড়ির সুরে বহু গান গেয়েছেন সংগীত কিংবদন্তি কিশোর কুমার। সেসব গান আজও শ্রোতাদের মুখে মুখে। কিশোর কুমারকে মামা ডাকতেন তিনি। কিশোর কুমারও অত্যন্ত স্নেহ করতেন তাঁকে। কিশোর কুমারের মৃত্যুর পর একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন বাপ্পি। সিদ্ধান্ত নেন আর কোনো দিন গানে সুর দেবেন না। পরে অবশ্য ভক্ত-অনুরাগীদের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর জনপ্রিয় অনেক গান করেছেন বাপ্পি লাহিড়ির সুরে। তাঁদের ছিল মাতা-পুত্রের মতো সম্পর্ক। লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর পর বাপ্পি লাহিড়ি লিখেছিলেন, ‘অনেকে বলেন তিনি হলেন মাতা সরস্বতীর পুনর্জন্ম। আমি বলি তিনিই ছিলেন সাক্ষাৎ সরস্বতী মাতা। আমি আবার আমার মাকে হারালাম।’ গত বছর বাপ্পি লাহিড়ি করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তখন প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে খোঁজ নিতেন লতা।
বাপ্পি লাহিড়ি আরও লিখেছিলেন, ‘লতা মঙ্গেশকর আমাকে তাঁর ছেলে মনে করতেন। আমি যখন দুই বছরের, তখন থেকে আমাকে তিনি জানেন। কলকাতায় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে যেতেন তিনি। আমার বাবা অপরেশ লাহিড়ির সুরে অনেক গান করেছেন। আমার সুরেও অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছেন লতাজি। আমি সত্যিই ভাগ্যবান।’
গানের পাশাপাশি রাজনীতিতেও আগ্রহী ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। ২০০৪ সালে রাজনীতিতে এসেছিলেন। তিনি কংগ্রেসের হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। এর পর ২০১৪ সালে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। সেবারের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে ভোটেও লড়েছিলেন তিনি।
সুরের এই নক্ষত্র আজ চলে গেলেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর অমর সৃষ্টি মনে রাখবে। শুধু গান আর সুরই নয়, প্রাণবন্ত স্বভাবের জন্য তাঁর অভাব বোধ করবেন ভক্ত-সুহৃদরা।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, ন্যাশনাল হেরাল্ড, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনন্দবাজার, এবিপি লাইভ
প্রথমে সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সবশেষ আজ বুধবার সকাল হলো ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ খ্যাত বাপ্পি লাহিড়ির প্রয়াণের খবরে। যেন অজানা সুরালোকে পাড়ি দিচ্ছেন একের পর এক সংগীত মহারথী।
বাপ্পি লাহিড়ির গান মানেই নানা বাদ্যযন্ত্র, আর অফুরন্ত প্রাণশক্তির সম্মিলন। পশ্চিমা মিউজিককে ভারতীয় ঢংয়ে ভিন্ন এক রূপ দিয়েছিলেন তিনি। যা ছুঁয়েছিল আশির দশকের তরুণ সংগীতপ্রেমীদের মন।
বাপ্পি লাহিড়ির গানের শুরুটা হয়েছিল মাত্র তিন বছর বয়সে, তবলা বাজানো দিয়ে। ১৯৭৫ সালে হিন্দি ছবি ‘জখমি’ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগীতজগতে পথ চলার শুরু। এর পর আশির দশকে হিন্দি ছবির জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাপ্পি লাহিড়ি। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের ‘ডিসকো কিং’। বাপ্পি লাহিড়ি না থাকলে মিঠুন চক্রবর্তীকে এত সহজে হয়তো আবিষ্কার করতে পারতেন না কেউ। ‘আই অ্যাম এ ডিসকো ড্যান্সার’, কিংবা ‘ইয়াদ আ রাহা হ্যায়’ তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
ক্লাব ও ডিসকোতে আজও বাজে ‘আই অ্যাম এ ডিসকো ড্যান্সার’ গানটি। আশির দশকে বাপ্পি লাহিড়ির ম্যাজিকই ছিল এমন। তবে শুধু যে ডিসকো গান তা নয়, রোমান্টিক গানেও বাপ্পি লাহিড়ির গায়কি ও সুরে ছিল সমান জাদু। বাংলা ছবি ‘অমর সঙ্গী’-এর ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ তো এখনো প্রেমের গানের তালিকার শীর্ষে। তাঁর সুরে আরতি মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়’ রীতিমতো নস্টালজিয়া।
একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন। ‘ডিসকো ড্যান্সার’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘চালতে চালতে’, ‘শরাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কমান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন অসংখ্য গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি থ্রি’-এর জন্য।
বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালোবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ অনেক জনপ্রিয় ছবিতে সুর দিয়েছেন। গায়কির নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।
বাপ্পি লাহিড়ির গানের ছন্দে পা মেলাতে গিয়ে নতুন স্টেপ আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। ‘নমক হালাল’ ছবির ‘কে পাগ ঘুঙরু বান্ধ মেরা’ গানের সেই স্টেপ পরে কাল্ট হয়ে যায়। একবার এক সাক্ষাৎকারে বাপ্পি লাহিড়ি বলেছিলেন, তিনি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অমিতাভ বচ্চন!
বাপ্পি লাহিড়ির সুরে বহু গান গেয়েছেন সংগীত কিংবদন্তি কিশোর কুমার। সেসব গান আজও শ্রোতাদের মুখে মুখে। কিশোর কুমারকে মামা ডাকতেন তিনি। কিশোর কুমারও অত্যন্ত স্নেহ করতেন তাঁকে। কিশোর কুমারের মৃত্যুর পর একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন বাপ্পি। সিদ্ধান্ত নেন আর কোনো দিন গানে সুর দেবেন না। পরে অবশ্য ভক্ত-অনুরাগীদের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর জনপ্রিয় অনেক গান করেছেন বাপ্পি লাহিড়ির সুরে। তাঁদের ছিল মাতা-পুত্রের মতো সম্পর্ক। লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর পর বাপ্পি লাহিড়ি লিখেছিলেন, ‘অনেকে বলেন তিনি হলেন মাতা সরস্বতীর পুনর্জন্ম। আমি বলি তিনিই ছিলেন সাক্ষাৎ সরস্বতী মাতা। আমি আবার আমার মাকে হারালাম।’ গত বছর বাপ্পি লাহিড়ি করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তখন প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে খোঁজ নিতেন লতা।
বাপ্পি লাহিড়ি আরও লিখেছিলেন, ‘লতা মঙ্গেশকর আমাকে তাঁর ছেলে মনে করতেন। আমি যখন দুই বছরের, তখন থেকে আমাকে তিনি জানেন। কলকাতায় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে যেতেন তিনি। আমার বাবা অপরেশ লাহিড়ির সুরে অনেক গান করেছেন। আমার সুরেও অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছেন লতাজি। আমি সত্যিই ভাগ্যবান।’
গানের পাশাপাশি রাজনীতিতেও আগ্রহী ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। ২০০৪ সালে রাজনীতিতে এসেছিলেন। তিনি কংগ্রেসের হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। এর পর ২০১৪ সালে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। সেবারের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে ভোটেও লড়েছিলেন তিনি।
সুরের এই নক্ষত্র আজ চলে গেলেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর অমর সৃষ্টি মনে রাখবে। শুধু গান আর সুরই নয়, প্রাণবন্ত স্বভাবের জন্য তাঁর অভাব বোধ করবেন ভক্ত-সুহৃদরা।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, ন্যাশনাল হেরাল্ড, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনন্দবাজার, এবিপি লাইভ
এখনো ঘটনার কোনো সুরাহা না হলেও সাইফের ওপর এ হামলা বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছে, ‘সদগুরু শরণ’ নামের যে অ্যাপার্টমেন্টে সাইফ-কারিনার বাস, সেখানকার ৯ থেকে ১২ তলা তাঁদের। কিন্তু সেখানে আলাদা কোনো সার্ভেল্যান্স ক্যামেরাই নেই।
৬ ঘণ্টা আগেএবার প্রকাশ্যে এল বলিউড স্টার সাইফ আলী খানের বাড়িতে হানা দেওয়া দ্বিতীয় যুবকের ভিডিও। মুখ কাপড়ে ঢাকা, পিঠে বড় ব্যাগ। সাইফ আলী খানের বাড়ির আপৎকালীন সিঁড়ি দিয়ে উঠছেন তিনি। সিসিটিভি ফুটেজের দ্বিতীয় ভিডিও প্রকাশ করেছে মুম্বাই পুলিশ...
১৫ ঘণ্টা আগে২০১৪ সালে মুক্তি পায় সোহানা সাবা অভিনীত ‘বৃহন্নলা’। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় মুরাদ পারভেজ পরিচালিত সিনেমাটি। বৃহন্নলার জন্য় ২০১৫ সালে ভারতের জয়পুর চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন সোহানা সাবা। এবার সেই উৎসবেই বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
১৬ ঘণ্টা আগে১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে নানা ধরনের কাজ করে যাচ্ছে পদাতিক নাট্য সংসদ। আজ দলটি উদ্যাপন করতে যাচ্ছে ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী...
১৬ ঘণ্টা আগে