গানটি নানামুখী অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীতে একটু আলোর প্রত্যাশায়

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮: ৪৮
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ২১: ০৫

সম্প্রতি নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব অ্যাগডারে আয়োজিত মিউজিক কনফারেন্সে গিয়েছিলেন চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি। দারুণ এক অভিজ্ঞতা হয়েছে সেখানে। পাশাপাশি নরওয়ের শিল্পী মারতে উলফ আর চিরকুট যৌথ আয়োজনে তৈরি করেছে নতুন একটি গান। কী সেই গান? কেন চিরকুট ও মারতে তৈরি করল এমন গান? কবে মুক্তি পাবে গানটি? বিস্তারিত জানতে সুমির সঙ্গে কথা বলেছেন এম এস রানা

নতুন গান বানালেন। কী নিয়ে গানটি?
গানটি যুদ্ধ ও আশা নিয়ে। পৃথিবীতে এত এত যুদ্ধ, এত ভয়াবহতা! যুদ্ধের এই ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ, এমনকি শিশুরাও। আমরা যদিও সরাসরি যুদ্ধের কথা বলছি না, আমরা বলছি, এই যে পৃথিবীজুড়ে এত অন্ধকার, এই অন্ধকার কেটে আলো আসা প্রয়োজন। গানের শিরোনাম ‘লেট দ্য লাইট ইন’। নরওয়ের শিল্পী মারতে উলফকে নিয়ে চিরকুটের এই যৌথ প্রয়াস।

মারতে উলফ সম্পর্কে বলুন, তাঁর সঙ্গে কীভাবে পরিচয়?
মারতে উলফ নরওয়ের একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার। গান গাওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু নিয়েও কাজ করে সে। গত বছর থেকে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব।

কেন মনে হলো এমন একটা গান করা প্রয়োজন?
গান দিয়েই তো চিরকুট প্রতিবাদ জানায়, গান দিয়েই সচেতন করে মানুষকে। নদী বাঁচাতে তাই চিরকুটকে পাওয়া গেছে ব্যতিক্রমী নদী রকস কনসার্টে। জলবায়ুর সচেতনতায়ও কাজ করছে ব্যান্ডটি। আমাদের মনে হয়েছে, যুদ্ধের ভয়াবহতা বন্ধ করে আলোকময় এক পৃথিবীর প্রত্যাশায় এমন একটা গান হওয়া প্রয়োজন। এই গানটা দিয়ে আমরা বার্তা দিতে চাই, এই যে পৃথিবীজুড়ে এত যুদ্ধ, এত অন্ধকার, এত এত মৃত্যু—এসব বন্ধ হওয়া দরকার। অন্ধকার এই পৃথিবীতে আলো আসা দরকার। 

গানটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
গানের শিরোনাম ‘লেট দ্য লাইট ইন’। পুরো গানটি লিখেছে ও সুর করেছে মারতে উলফ। একটা বাংলা অংশ আছে, ওটা আমার লেখা। মিউজিক করেছে চিরকুট ব্যান্ড। গান গেয়েছে মারতে উলফ ও চিরকুট ব্যান্ড। রেকর্ডিং হয়েছে ঢাকার বাটার কমিউনিকেশন স্টুডিও এবং অসলোর একটি স্টুডিওতে।

কীভাবে তৈরি হলো গানটি?
আমরা তো দেশের বাইরে গেলে কোলাবরেশন করার চেষ্টা করি। এবার নরওয়েতে যখন ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড রাউন্ডটেবিল কনফারেন্সে গেলাম, ভাবলাম মারতের সঙ্গে একটা গান করা যায়। পরের দিন সে একটা গান বানিয়ে পাঠিয়ে দিল। বললাম, গানটা ভালো হয়েছে, মাইন্ড করবা, যদি আরেকটা গান বানাতে বলি, আরেকটু রিদমিক? মারতে খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে নিল ব্যাপারটা। পরের দিন আরেকটা গান বানিয়ে পাঠাল। শুনেই আমার পছন্দ হয়ে যায়। আমি গেলাম। ভয়েস দিলাম। এরপর গানটা দেশে পাঠিয়ে দিলাম। আমাদের ব্যান্ড মেম্বাররা গানটির মিউজিক করে পাঠায়। শুনে মারতেও খুব পছন্দ করে। আমি দেশে ফিরে গানটা ফাইনাল কম্পোজিশন করি।

সুমির সেলফিতে মারতে উলফকবে এবং কোথায় রিলিজ হবে গানটি?
১ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত ৯টায় গানটি রিলিজ করব সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুক, ইউটিউব, স্পটিফাইসহ নানা মাধ্যমে পাওয়া যাবে লেট দ্য লাইট ইন গানটি।

গানের ভিডিও কেমন হয়েছে?
ভিডিওটা হয়েছে ডকুমেন্টারি স্টাইলে। গান নিয়ে আমাদের আলোচনা, কীভাবে গানটি তৈরি হলো—সবই ফুটে উঠবে ভিডিওতে।

ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড রাউন্ডটেবিল কনফারেন্সটা কী টাইপের কনফারেন্স?
নরওয়ের ক্রিস্টিয়ানস্যান্ডে ইউনিভার্সিটি অব অ্যাগডার আয়োজিত একটি মিউজিক কনফারেন্স। বার্কলি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন, ওয়েস্ট মিনস্টারসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত ইউনিভার্সিটির স্কলাররা যাঁরা মিউজিক নিয়ে থিসিস ও রিসার্চবেইজ কাজ করেন, তাঁরা অংশ নেন এই কনফারেন্সে। প্রতিবছর এই কনফারেন্স হয়। এ বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হলো কনফারেন্সটি।

এ বছরের কনফারেন্সের অভিজ্ঞতা কেমন আপনার?
খুবই ভালো। ১ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত হয়েছে কনফারেন্স। এবার আমি কি নট স্পিকার ছিলাম। এটা আসলেই আমার জন্য, আমার দেশের জন্য অনেক সম্মানের, তাঁরা আমাকে অনেক সম্মান দিয়ে নিয়ে গেছেন। দুজন কি নট স্পিকার ছিল এ বছর, একজন বাংলাদেশের আমি অন্যজন আয়ারল্যান্ডের।

কনফারেন্সে কোন বিষয়ে কথা বলেছেন আপনি?
৩ নভেম্বর আমি কথা বলেছি সায়েন্টিফিক কনফারেন্সে ‘স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ইন মিউজিক বিজনেস’, ৭ ও ৮ নভেম্বর ‘রোল অব উইমেন ইন বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি’ এবং ৯ ও ১০ নভেম্বর স্টুডেন্ট ইভেন্ট ‘মিউজিক ফর ক্লাইমেট’ বিষয়ে। আমার প্রেজেন্টেশন নিয়ে সবাই খুব খুশি হয়েছেন। প্রশংসা করেছেন। আমাদের নদী রকস কনসার্ট নিয়ে, আমাদের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও সবাই প্রশংসা করেছেন।

মারতে উলফের সঙ্গে তো কনফারেন্সের সুবাদেই পরিচয়?
তাঁর সঙ্গে পরিচয় গত বছর। এ বছরও তাঁর একটা প্রেজেন্টেশন ছিল। আমি যাচ্ছি শুনে আগেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। এরপর নরওয়েতে গিয়ে কনফারেন্সেই আমরা গানের পরিকল্পনা করি।

গানের ব্যাপারে কনফারেন্স থেকে সহযোগিতা পাননি?
পেয়েছি। নানা ধরনের বুদ্ধি, পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন অনেকেই। এ জন্য আমরা বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছি অধ্যাপক ড. ড্যানিয়েল নরগার্ড, ইউনিভার্সিটি অব অ্যাগডারের ছাত্রছাত্রী ও ড. সলভেইগ কোরামসহ অনেককে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত